ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

কলুষ ছোঁয় না যেন...

প্রকাশিত: ১০:৪২, ৪ এপ্রিল ২০১৯

কলুষ ছোঁয় না যেন...

আমরা সব সময় যে মূল্যবান সম্পদটি নিয়ে গর্ব করি সেটা হলো ষোলো কোটি মানুষের হৃদয়ের স্পন্দন, লাল-সবুজের পতাকা আশ্রিত একটি দেশ, বাংলাদেশ। এটা পুতুলখেলার রাজ্যর মতো এমনি এমনি অর্জিত হয়নি। এর জন্য ত্রিশ লাখ শহীদের রক্ত ঢেলেছি। মুক্তিযোদ্ধাদের পাশাপাশি দেশকে স্বাধীন করার জন্য সেই সময়ে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছিল আমাদের তরুণ ছাত্রসমাজ। তাদের ভূমিকা বা অবদান কোনটাই ছোট করে দেখার কোন সুযোগ নেই। দেশের ভবিষ্যত কা-ারীও যে তারা এটা আমরা অকপটে স্বীকার করি। আমরা দেখেছি, ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, ১৯৬৬ সালের ছয় দফা দাবি, ১৯৬৯ এর গণঅভ্যুত্থান এবং সর্বশেষ ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে সামনে থেকে আমাদের ছাত্ররা নেতৃত্ব দিয়েছিল। বর্তমান সময়ে যখনই কোন কঠিন পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে তখনই সচেতন ছাত্ররা এগিয়ে আসছে। এটা অবশ্যই একটা ভাল দিক। আমরা যদি তাদের নেতৃত্ব দেয়ার ক্ষেত্রে দক্ষ করে না তুলি তাহলে আমরা আগামীর কা-ারী কিভাবে খুঁজে পাব? কিছুদিন আগেই আমরা দেখেছি দেশের অন্যতম ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ডাকসু নির্বাচনের যে আয়োজন করেছিল সেটা নিশ্চয় ছাত্ররাজনীতির জন্য একটা উল্লেখযোগ্য অধ্যায় হয়ে থাকবে এবং আগামীতে অনেক ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে ছাত্ররাজনীতির জন্য। নির্বাচিত ছাত্র প্রতিনিধিরা যদি সুন্দর এবং সুশৃঙ্খলভাবে তাদের দায়িত্ব পালন করেন তাহলে নিঃসন্দেহে এখান থেকে একটা নতুন যুগের সূচনা হবে। নির্বাচিত ছাত্রনেতারা সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষে কথা বলবে এবং প্রত্যকটি ন্যায্য আন্দোলনে একাত্মতা প্রকাশ করবে, সর্বোপরি নিজেদের মেধার উপযুক্ত ব্যবহার করবে। এই ডাকসু নির্বাচন থেকে আগামীর দিনের জন্য আমরা অনেক শিক্ষা নিতে পারি। শত প্রতিক্ষার পর আমরা এই ডাকসু নির্বাচনটি পেয়েছি তাও প্রায় দীর্ঘ ২৮ বছর ১০ মাস পর তাই এটা নিয়ে আমাদের আবেগের যেন শেষ নেই। এর ধারাবাহিকতায় বাকি যে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো আছে সেখানেও পর্যায়ক্রমে ছাত্র সংসদ নির্বাচন যদি দেয়া হয় তাহলে এখন থেকেই ছাত্ররা সুস্থ রাজনীতি চর্চা করার সুযোগ পাবে। এখানে কে কোন্ দলের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করছে সেটা বড় কথা নয়, বড় কথা হলো আগামীতে দেশের নেতৃত্ব দেয়ার জন্য যোগ্য ছাত্রনেতা খুঁজে বের করা। বর্তমানে ছাত্ররাজনীতির যে সুবাতাস বাংলাদেশের পালে বইতে শুরু করেছে এটার ধারাবাহিকতা ধরে রাখার দায়িত্ব আমাদের সবার। আগে ছাত্ররাজনীতির নামে বহু নোংরামি বা অনাকাক্সিক্ষত এমনকি প্রাণহানির ঘটনাও ঘটেছে। আমরা সেই দুর্গন্ধযুক্ত অপসংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে এসে রাজনীতির জন্য নতুন দিগন্ত সৃষ্টি করব। আমাদের আর একটা বিষয় লক্ষ রাখতে হবে, এই ছাত্ররাজনীতিকে কলুষিত করার জন্য কোন সুযোগসন্ধানী কেউ যেন ব্যবসা করতে না পারে এবং ছাত্রনেতাদেরও সতর্ক থেকে সকল প্রকার হিংসাত্মক কর্মকাণ্ড থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করে ভাল ভাল কাজের মাধ্যমে সবার আস্থা অর্জন করতে হবে। এই ডাকসু নির্বাচনের মাধ্যমেই ছাত্ররাজনীতির জন্য নতুন দ্বার উন্মোচন হোক সেই প্রত্যাশা রইল। বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর থেকে
×