ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

দ্বিতীয় গণভোট নয়

প্রকাশিত: ০৬:৩৩, ২৩ জানুয়ারি ২০১৯

দ্বিতীয় গণভোট নয়

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে সোমবার ব্রেক্সিট নিয়ে দ্বিতীয় গণভোটের প্রতি তার বিরোধিতা পুনর্ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেছেন, এটি ‘সামাজিক সংহতি’ ক্ষতিগ্রস্ত করবে। তিনি এদিন পার্লামেন্টে নতুন ব্রেক্সিট পরিকল্পনা তুলে ধরেন। মঙ্গলবার তার আগের পরিকরল্পনাটি ২শ’য়ের বেশি ভোটে নাকচ হয়ে যায়। গার্ডিয়ান। নতুন পরিকল্পনায় (প্ল্যান বি) বড় ধরনের পরিবর্তন আনা হচ্ছে না বলে জানা গেছে। তবে ব্রেক্সিট অচলাবস্থার সবচেয়ে বড় কারণ আয়ারল্যান্ড সীমান্ত নীতি নিয়ে তিনি নতুন পরিকল্পনায় পরিবর্তন আনতে চাইছেন। ব্রেক্সিট প্রক্রিয়ার নিয়ন্ত্রণ সরকারের হাত থেকে ছিনিয়ে নিতে এমপিদের দুটি গ্রুপের কৌশল নিয়ে সরকারের চরম উদ্বেগের মধ্যেই নতুন পরিকল্পনা উপস্থাপন করলেন মে। লন্ডন ও ব্রাসেলসের নেতৃবৃন্দ গত প্রায় দুই বছর ধরে আলোচনা চালিয়ে একটি চুক্তি চূড়ান্ত করে। কয়েক ধাপ পেরিয়ে শেষ পর্যন্ত ব্রিটিশ পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ হাউস অব কমন্সে এটি পাস হওয়া বাকি ছিল। গত সপ্তাহে পার্লামেন্ট সদস্যরা চুক্তিটি প্রত্যাখ্যান করেন। ২৯ মার্চ ব্রেক্সিট প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার কথা। তবে মে’র চুক্তিটি পার্লামেন্টে প্রত্যাখ্যাত হওয়ার পর নো-ডিল ব্রেক্সিট বা চুক্তিহীন প্রস্থানের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। বিশ্লেষকরা বলছেন নো ডিল ব্রেক্সিট হলে দুই পক্ষই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। কারণ এতদিন একক বাজার থাকায় সীমান্তে পণ্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা প্রয়োজন হতো না, আলাদা শুল্কনীতিও ছিল না। কিন্তু নো ডিল ব্রেক্সিট হলে দুই পক্ষের বন্দরগুলোতে পণ্যের পাহাড় জমে যাবে যা এড়াতে হলে অবশ্যই একটি চুক্তি করতে হবে। সবচেয়ে বেশি এই সমস্যা হবে আয়ারল্যান্ড সীমান্তে। আয়ারল্যান্ড আর উত্তর আয়ারল্যান্ডের মধ্যে যত মানুষ ও পণ্য এখন মুক্তভাবে চলাচল করে তখন সেটি আর থাকবে না। এদিকে মে’র কর্মকর্তারা জানিয়েছেন ব্রেক্সিট চুক্তির বিষয়ে আয়ারল্যান্ডের ডেমোক্র্যাটিক ইফনিয়নিস্ট পার্টির (ডিইউপি) সমর্থন নিশ্চিত করার জন্য সরকার আয়ারল্যান্ডের সঙ্গে সীমান্ত বিষয়ক একটি দ্বিপাক্ষিক চুক্তি করতে পারে। একে অচলাবস্থার মূল কারণ বা ব্যাকস্টপ হিসেবে চিহ্নিত করা হচ্ছে। ইইউ নেতৃবৃন্দ ইঙ্গিত দিয়েছেন যদি মে ২৯ মার্চের সময়সীমা থেকে সরে আসেন। কিন্তু ব্রিটিশ মিডিয়া বলছে, তিনি বিদ্যমান চুক্তিকে কিছু সংশোধনী বিষয়ে এমপিদের বাগে আনার চেষ্টা করবেন। ব্রেক্সিটের জন্য ৬৭ দিন বাকি থাকতে মে দ্বিতীয় পরিকল্পনা বা প্ল্যান বি উপস্থাপন করলেন। মে বলেন, সহকর্মী ও এমপিদের সঙ্গে ছয়দিন আলোচনা চালিয়ে তিনি দ্বিতীয় পরিকল্পনাটি উপস্থাপন করেন। তিনি জানান তিনটি বিষয় বিবেচনায় রেখে পরিকল্পনাটি করা হচ্ছে। প্রথমত রাজনীতিক, ব্যবসায়ী ও ইউনিয়নগুলোর সঙ্গে আরও আলোচনা করা হবে। দ্বিতীয়ত শ্রমিকদের অধিকার ও পরিবেশ রক্ষার দিকটি প্রাধান্য দেয়া হবে। তৃতীয়ত আয়ারল্যান্ড ব্যাক স্টপ এতে প্রাধান্য পাবে। ব্রেক্সিট অচলাবস্থায় যে বিষয়গুলো সামনে আসছে, তার মধ্যে অন্যতম প্রসঙ্গ আয়ারল্যান্ড ইস্যু। নতুন পরিকল্পনা ব্রিটিশ উত্তর আয়ারল্যান্ড ও আয়ারল্যান্ডের মধ্যে কঠোর সীমানা যেন চালু না হয় মে সেটাই নিশ্চিত করতে চাইছেন। টেলিগ্রাফ এক প্রতিবেদনে জানায়, ১৯৯৮ সালে স্বাক্ষরিত গুড ফ্রাইডে চুক্তিও সংশোধন করতে পারেন মে। ওই চুক্তির মাধ্যমে উত্তর আয়ারল্যান্ডে ৩০ বছর ধরে চলা সহিংসতার অবসান ঘটেছিল। এদিকে আয়ারল্যান্ডের ইউরোপিয়ান এ্যাফেয়ার্স মন্ত্রী হেলেন ম্যাকএন্টি বলেছেন, ব্রেক্সিট ইস্যুতে আয়ারল্যান্ড কোন দ্বিপক্ষীয় আলোচনায় সম্পৃক্ত হবে না এবং ইইউর ২৭ জোটের অংশ হিসেবেই আলোচনায় যোগ দেবে দেশটি।
×