ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

৯ বছরে সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকার কাজ

বান্দরবানে সব সেক্টরে উন্নয়নের ছোঁয়া

প্রকাশিত: ০৪:৩৪, ২২ ডিসেম্বর ২০১৮

বান্দরবানে সব সেক্টরে উন্নয়নের ছোঁয়া

এক সময়ের পিছিয়ে পড়া বান্দরবান, যেন আর পিছিয়ে নেই। উন্নয়নের মহাসড়কে বান্দরবান, বর্তমান সরকারের সময়ে জেলার শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পর্যটন, কৃষি, সড়ক যোগাযোগসহ প্রায় প্রতিটি সেক্টরে লেগেছে উন্নয়নের ছোঁয়া। জানা গেছে, আওয়ামী লীগ সরকারের আন্তরিকতা আর পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুরের একান্ত প্রচেষ্টায় গত ৯ বছরে বান্দরবানে প্রায় সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ সম্পূর্ণ করেছে, অন্যদিকে ৩ হাজার কোটি টাকার কাজ বর্তমানে চলমান আছে। এর ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকলে অপার সম্ভাবনার বান্দরবান, দেশের ৬৪ জেলার মধ্যে নিজের অবস্থান সুসংহত করবে বলে মনে করছে বিশ্লেষকরা। আরও জানা গেছে, উল্লেখযোগ্য কাজগুলোর মধ্যে বান্দরবান সদর উপজেলার রেইচা নামক স্থানে ১৬ কোটি টাকা ব্যয়ে পিটিআই কমপ্লেক্স নির্মাণ, ২৮ কোটি টাকা ব্যয়ে নার্সিং কলেজ, প্রায় ৭ কোটি টাকা ব্যয়ে অরুণ সারকী টাউন হলো, আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার, বান্দরবান বিশ্ববিদ্যালয়, বান্দরবান সরকারী কলেজের একাডেমিক ভবন, থানচি সরকারী উচ্চ বিদ্যালয় ভবন, রুমা কলেজ রোয়াংছড়ি কলেজের ভবন নির্মাণ, জেলা পরিষদের ন্যস্ত বিভাগের জন্য অফিস ভবন, কনফারেন্স হল নির্মাণ, দুর্গম এলাকার শিক্ষার্থীদের জন্য উপজেলাগুলোতে ছাত্রাবাস নির্মাণ, স্টেডিয়ামের গ্যালারি নির্মাণ, প্রায় ২৬ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত রুমা সাঙ্গু সেতু, ১২ কোটি টাকা ব্যয়ে থানচি সাঙ্গু সেতু, অসংখ্য গার্ডার ব্রিজ নির্মাণ, থানচি উপজেলা পরিষদ ভবন, জেলার ৬ উপজেলায় ফায়ার সার্ভিস স্টেশন, চার উপজেলায় কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে থানা ভবন নির্মাণ। আরও জানা গেছে, সেনাবাহিনী কর্তৃক সাড়ে ১২০ কোটি টাকা ব্যয়ে থানচি- আলীকদম সড়ক নির্মাণ, ২ কোটি টাকা ব্যয়ে থানচি-বলিপাড়া রাস্তা নির্মাণ, ১ কোটি টাকা ব্যয়ে থানচি-রুমা-বগালেক সংযোগ সড়ক নির্মাণ, থানছি ও রুমা উপজেলায় প্রায় ১৯ কোটি টাকা ব্যয়ে উপজেলা কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণ। জেলার ৩৩ ইউনিয়নের মধ্যে ৮২৮.৬৯ লাখ টাকা ব্যয়ে ১০টি ইউপি পরিষদের কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। কৃষি উন্নয়নে শীলক খালের উপরে ৫.৭৭ কোটি টাকা ব্যয়ে ২৮ মি. দীর্ঘ রবার ড্যাম নির্মাণ করা হয়, যার ফলে অনাবাদী জমি হয়ে চাষাবাদযোগ্য। পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড বান্দরবান ইউনিটের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ ইয়াছির আরাফাত বলেন, বান্দরবানে উন্নয়ন হয়নি এমন এলাকা নেই, জেলার আনাচে-কানাচে উন্নয়ন কাজ দৃশ্যমান। জেলায় অসংখ্য কমিউনিটি ক্লিনিক, মন্দির, মসজিদ, গির্জা, ক্যায়াং, প্রাণিসম্পদ বিভাগে সাড়ে ৩ কোটি টাকা ব্যয়ে কয়েকটি ভবন এবং নির্মাণ করা হয়েছে ২টি পৌরসভার ভবন। সরকারীকরণ করা হয় জেলার বেশ কয়েকটি কলেজ ও হাইস্কুলকে। অন্যদিকে আলীকদমের রোয়াম্ভু ও নয়াপাড়া বিদ্যুত লাইন সংযোজন, আলীকদম পানি শোধনাগার নির্মাণসহ অসংখ্য উন্নয়ন কাজ শেষ করা হয়। স্বাধীনতার পর ২৫ কোটি টাকা ব্যয়ে থানচি উপজেলায় বিদ্যুত সরবরাহ ছিল শুধু থানচি নয়, ক্ষোধ জেলাবাসীর জন্য ঐতিহাসিক ঘটনা। ১৫ থেকে ১৭ সালের মধ্যে ২ হাজার ৩৬০ জনকে সোলার প্যানেল বিতরণ করা হয়, যা এখনও অব্যাহত আছে। বান্দরবান-রাঙামাটি সড়কের পুলপাড়া এলাকায় ৯ কোটি ১১ লাখ টাকা ব্যয়ে গার্ডার সেতু ও প্রায় ২ কোটি টাকা ব্যয়ে শহরের নীলাচল সড়কে মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স নির্মাণ কাজ শেষ পর্যায়ে। রোয়াংছড়ির থেকে রুমা উপজেলা পর্যন্ত ৪৮ কোটি টাকা ব্যয়ে (জিওবি অর্থে) পল্লী উন্নয়ন সড়ক নির্মাণ করা হবে। ৩৫ কোটি টাকা ব্যয়ে বান্দরবান সদর হাসপাতাল ১০০ শয্যা থেকে ২৫০ শয্যায় উন্নতকরণের কাজ শুরু হয়েছে। আলীকদম-জানালীপাড়া-কুরুকপাতা ঝিড়ি পোয়ামুহুরী সড়ক ৩৭৬ কোটি ও থানচি-রেমাক্রি-মদক-লিক্রি সড়ক প্রায় ৪৭০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ কাজ চলমান আছে। বান্দরবান শহরের জজ কোর্ট থেকে সাঙ্গু সেতু পর্যন্ত বড় ড্রেন নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। ১৯৬ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হবে বান্দরবান-কেরানীহাট সড়ক। এই ব্যাপারে পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং বলেন, আগামীতে আমরা সরকার গঠন করলে উন্নয়নের ধারা অব্যাহত থাকবে, বান্দরবানকে আধুনিক নগরী হিসেবে গড়ে তুলতে আরও পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। -এস বাসু দাশ, বান্দরবান থেকে
×