ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

নির্বাচনী অপরাধ তদন্তে আরও সক্রিয় হতে হবে ॥ সিইসি

প্রকাশিত: ০৫:৫৬, ৬ ডিসেম্বর ২০১৮

নির্বাচনী অপরাধ তদন্তে আরও সক্রিয় হতে হবে ॥ সিইসি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আচরণবিধিসহ নির্বাচনী অপরাধ তদন্তে আরও সক্রিয় হতে ‘নির্বাচন তদন্ত কমিটির’ বিচারকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ইসি। প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নুরুল হুদা তাদের উদ্দেশে বলেন, নির্বাচনী আচরণবিধি প্রতিপালনসহ অপরাধ আমলে নিয়ে বিচার করার দায়িত্ব যাদের দেয়া হয়েছে, সেই দায়িত্ব সুন্দরভাবে পালন করতে হবে। এ জন্য বিচারকদের আরও সক্রিয় হতে হবে। বুধবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে নির্বাচন তদন্ত কমিটির (ইলেক্টোরাল ইনকোয়ারি কমিটি) বিচারকদের ব্রিফিং অনুষ্ঠানে তিনি এই আহ্বান জানান। বলেন, নির্বাচন সংক্রান্ত মিথ্যা তথ্য দিয়ে অভিযোগ দিলে সংশ্লিষ্ট অভিযোগকারীর বিচার করতে হবে। যারা আপনাদের কথা শুনবেন না পেনাল কোডের ১৯৩ ধারা মতে তাদের ৭ বছরের জেল হবে। যদি মিথ্যা তথ্য দেয় এবং আপনাদের আদেশ না মানে পেনাল কোডের ২২৮ ধারা অনুসারে তাদের বিচার হবে। তার মানে হলো কোড অব সিভিল প্রসিডিউর এর ১৯০৮-এর সম্পূর্ণ শক্তি নিয়ে আপনারা মাঠে অবস্থান করবেন। নির্বাচন ভবনের অডিটরিয়ামে এই ব্রিফিং অনুষ্ঠিত হয়। এতে ইলেক্টোরাল ইনকোয়ারি কমিটির সদস্য ২৪৪, যুগ্ম জেলা জজ ও দায়রা জজ এবং সহকারী জজরা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে প্রধান নির্বাচন কমিশনার আরও বলেন, ইতোমধ্যে নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গসহ নানা অপরাধের প্রতিকার না পাওয়ার অভিযোগ আসা শুরু করেছে কমিশনে। মাঠ পর্যায়ে তদন্ত কমিটি নীরব রয়েছে। এ সময় যুগ্ম জজ পর্যায়ের বিচারকদের সমন্বয়ে গঠিত কমিটিগুলো তাদের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন না করায় সিইসি তাদের ওপর ক্ষোভও প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, তদন্ত কমিটির বিচারকদের দৃশ্যমান হয়ে তাদের নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করতে হবে। আমরা প্রত্যেকদিন শ’ শ’ অভিযোগ পাই। কিন্তু এসব অভিযোগ আমাদের কাছে আসার কথা নয়। কারণ আপনারা সেখানে রয়েছেন। অভিযোগগুলো আপনাদের কাছে পাঠিয়ে দেব। কিন্তু প্রয়োজন ছিল, অভিযোগগুলো সরাসরি আপনাদের কাছে যাবে, কিন্তু সেটা যায় না। দায়িত্ব পালনে দৃশ্যমান হতে হবে। তার মানে এখন পর্যন্ত কিন্তু ভিজিবল হননি। বাস্তবতা হলো এটা। এর কারণ আপনাদের যে এত বড় দায়িত্ব আছে, সে সম্পর্কে মানুষ ওয়াকিবহাল নন। ওয়াকিবহাল হবেন তখনই যখন আপনারা ভাইব্রেন্ট হবেন, ভিজিবল হবেন। কেএম নুরুল এ সময় আরও বলেন, প্রজাতন্ত্রের যারা সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারী তাদের প্রত্যেকের ওপর কোন না কোনভাবে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দায়িত্ব অর্পিত। এটা ২০০৮ সাল থেকে শুরু হয়েছে। ৩০০টি আসনের মধ্যে ১২২টি জায়গায় আপনারা তাদের কাছাকাছি আছেন। তারা যেন সমস্যার সমাধান পায় এটা দেখতে হবে। বিচারকদের সমন্বয়ে প্রতি জেলায় নির্বাচন কমিশন নির্বাচনী তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। কমিটিকে নির্বাচনী আচরণবিধি প্রতিপালনসহ অপরাধ আমলে নিয়ে বিচার কাজ করার দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। সেই দায়িত্ব সুন্দরভাবে পালন করতে হবে। প্রার্থীর অভিযোগ আমলে নিয়ে ব্যবস্থা নিতে হবে। আপনাদের করণীয় যথাযথভাবে পালনের মাধ্যমে মানুষের অভিযোগ শুনবেন। আমলে নেবেন। যেন অভিযোগ ঢাকা পর্যন্ত না আসে। এলাকায় বসে সমাধান পেতে হবে। তিনি আরও বলেন, সরকারের উদ্দেশ্য ছিল গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশ (আরপিও) পরিবর্তন করে আপনাদের মানুষের কাছে; একেবারে প্রতিটা মানুষের, প্রতিটা সমস্যার কাছাকাছি থেকে যেন তারা সমাধান পায় সেই ব্যবস্থা করা। তারা যেন তাদের সমস্যা নিয়ে এখানে-ওখানে ছোটাছুটি না করে, আপনাদের সামনে পেয়ে আপনাদের কাছে অভিযোগগুলো পেশ করতে পারে। অনুষ্ঠানে কমিশনার মাহবুব তালুকদার বলেন, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনে একপক্ষের আধিপত্য বিস্তার কার্যকর হয় না। নির্বাচন আইনানুগ না হলে সে নির্বাচন কালো নির্বাচন, কমিশন একটি সাদা-স্বচ্ছ নির্বাচন করতে চায়। কবিতা খানম বলেন, আইনের কোন ব্যত্যয় যেন না ঘটে, কারও প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ করা যাবে না। শাহাদাত হোসেন বলেন, সাহসিকতার সঙ্গে আইনের যথাযথ প্রয়োগ করতে হবে। এক্ষেত্রে ভয়ভীতি ও চাপ উপেক্ষা করতে হবে। অনুষ্ঠানে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সচিব হেলালুদ্দীন আহমদসহ উর্ধতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
×