ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

হাতে ধানের শীষ ॥ আসন্ন নির্বাচনে যুদ্ধাপরাধীদের সন্তানরা ও জামায়াত

প্রকাশিত: ০৫:৪২, ৪ ডিসেম্বর ২০১৮

হাতে ধানের শীষ ॥ আসন্ন নির্বাচনে যুদ্ধাপরাধীদের সন্তানরা ও জামায়াত

বিভাষ বাড়ৈ ॥ ‘প্রত্যক্ষ এমনকি পরোক্ষভাবেও যুদ্ধাপরাধে জড়িতদের সঙ্গে কোন ঐক্য নয়’ এমন ওয়াদা দিয়েই হাজির হয়েছিল ড. কামালের নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। ‘জামায়াত থাকলে সেই ঐক্যে আমি নেই’। এক মাস আগেও এমন ঘোষণা দিয়েছিলেন ড. কামাল। তবে বিএনপির সমর্থনে ক্ষমতার স্বাদ পাওয়ার আশায় শেষ পর্যন্ত স্বাধীনতাবিরোধী দল জামায়াতেই একাট্টা ঐক্যফ্রন্ট। বিএনপির ধানের শীষের ছায়াতলে একাকার হয়ে গেছে জামায়াত ও ঐক্যফ্রন্ট। রীতিমতো ১৮০ ডিগ্রী ঘুরে বিএনপির ছেড়ে দেয়া আসন ছাড়াও বহু আসনে জামায়াত নেতারাই এখন ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী! ঐক্যফ্রন্ট ও জামায়াত নেতা, যুদ্ধাপরাধী ও তাদের সন্তানদের আশ্রয় এখন ধানের শীষ। তবে জামায়াত যুদ্ধাপরাধী ইস্যুতে জনগণের কাছে দেয়া ওয়াদার বিপরীতে অবস্থান নিয়ে সরাসরি কথা বলতে রাজি হচ্ছেন না ঐক্যফ্রন্ট নেতারা। রাজনীতির অন্যতম এ ইস্যুতে কেউ কেউ কথা বলতে রাজি হলেও বলছেন ঘুুরিয়ে-ফিরিয়ে। প্রশ্নের সদুত্তর দিতে ব্যর্থ হয়ে কোন কোন ঐক্যফ্রন্ট নেতা জামায়াত নিয়ে ক্ষেপে যাচ্ছেন গণমাধ্যমের ওপর। আবার কেউ কেউ বলছেন, বিএনপি আসন ও প্রতীক দিচ্ছে জামায়াতকে আমরা তো দিইনি। তবে অধিকাংশ নেতাই এখন রহস্যজনক নীরব। বিএনপিকে সঙ্গে নিয়ে সরকারবিরোধী বৃহত্তর ঐক্য গড়তে গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল দুই মাস আগেও ঘোষণা দিয়েছিলেন, ঐক্য গড়ার ক্ষেত্রে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিষয় দলটির ব্যক্তিগত যা জোটের বিষয়েই আসবে না। ফ্রন্ট গঠনে শর্ত হিসেবে গুরুত্ব পেয়েছিল জামায়াতের সঙ্গে বিএনপির সম্পর্ক নিয়েও। ড. কামাল শর্ত দিয়ে বলেছিলেন, স্বাধীনতাবিরোধী জামায়াতের সঙ্গে সম্পর্ক ত্যাগ করতে হবে বিএনপির। জামায়াত থাকলে সেই জোটে থাকবেন না বলেও স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছিলেন ড. কামাল। ড. কামাল ও ওই সময় ঐক্যে থাকা ডাঃ একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী ঘোষণা দিয়েছিলেন, আমরা বিএনপিকে স্পষ্টভাবে বলে দিয়েছি, জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে প্রকাশ্য-অপ্রকাশ্য কোনভাবেই জোট করব না। কেবল তাই নয়, আজ থেকে ঠিক এক মাস আগে জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ড. কামাল বলেছিলেন, জাতীয় ঐক্য কিংবা অন্য কোন দলের সঙ্গে ঐক্য হোক না কেন জামায়াত থাকলে সেই ঐক্যজোটে থাকবেন না। বিএনপি জামায়াতকে ছাড়া জোট করবে না, আপনারা জামায়াতের সঙ্গে সেই জোটে থাকবেন কিনাÑসাংবাদিকদের এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেছিলেন, অন্য কেউ গেলে যেতে পারে, আমার দল (গণফোরাম) যাবে না। আমি সারাজীবন জামায়াতকে সমর্থন করিনি, এখন করব কেন? বিএনপির সঙ্গে জামায়াত থাকলে আমরা তাদের সঙ্গে নেই। তবে ড. কামাল বিএনপির নেতৃত্বে থাকা সকল স্বাধীনতাবিরোধী দল ও সংগঠনকে এখন আর দূরে ঠেলতে রাজি নন। ঐক্যফ্রন্ট ছেড়ে আসা ডাঃ বদরুদ্দোজা চৌধুরীর নেতৃত্বে বিকল্প ধারা ইতোমধ্যেই বলে দিয়েছে ঐক্যফ্রন্টের নামে আসলে কি হচ্ছে। বিএনপিকে সমর্থন ও জামায়াত ইস্যুতে বি চৌধুরীর ছাড় না দেয়ার অবস্থানের প্রেক্ষাপটেই বিএনপির সমর্থনে ক্ষমতা এমনকি প্রধানমন্ত্রিত্বের স্বাদ পাওয়ার আশায় জামায়াতসহ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ স্বাধীনতাবিরোধী দল নিয়ে ড. কামালসহ তার সঙ্গীদের এখন কোন আপত্তি নেই। জামায়াতকে ছাড়তেই হচ্ছে না বিএনপির, বরং এ ঐক্যে স্বাধীনতাবিরোধী, উগ্রবাদী আরও দল-ব্যক্তি এখন একাকার। এক সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়েই নির্বাচন করবে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। ঐক্যফ্রন্ট নেতাদের মতো ফ্রন্টের অন্যতম প্রধান দল বিএনপির নির্বাচনী প্রতীক ধানের শীষ নিয়েই নির্বাচনে আসছে জামায়াত। জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য ও সিলেটের গত সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে জামায়াতের প্রার্থী এ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের বলেছেন, আমাদের ২৫ প্রার্থীকে ধানের শীষে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। আরও ৪/৫ আসন নিয়ে আলোচনা অব্যাহত। তবে নির্বাচনী প্রতীক ধানের শীষই থাকছে। বিএনপির সঙ্গে জামায়াতের আসন সমঝোতা হয়েছিল পঁচিশটিতে। এসব আসনে জামায়াতের প্রার্থীদের বিএনপির প্রার্থী হিসেবে ধানের শীষ প্রতীকে ভোট করতে হবে। জানা গেছে, পঁচিশটির বাইরেও ২২ আসনে জামায়াত নেতারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। যুদ্ধাপরাধী জামায়াত নেতা সাঈদীর ছেলে শামীম সাঈদী বিএনপির ধানের শীষের প্রার্থী হিসেবে আগামী নির্বাচনে অংশ নিতে ইতোমধ্যেই মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। ছোট ভাই ইন্দুরকানি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মাসুদ সাঈদীও নির্বাচন করছেন। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের স্বাক্ষরে শামীম সাঈদীর মনোনয়নের একটি প্রত্যয়নপত্রের ছবিও মাসুদ সাঈদী তার ফেসবুকে দিয়েছেন। জামায়াতের সাংগঠনিক সম্পাদক মতিউর রহমান আকন্দ দাবি করেছেন, তাদের প্রার্থীরা এবার জোট শরিক বিএনপির ধানের শীষ প্রতীক নিয়েই নির্বাচনে অংশ নেবে। অনেক আসনে জামায়াত নেতারা ধানের শীষ প্রতীকের প্রত্যয়ন নিয়ে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। আবার কিছু আসনে তাদের মনোনয়নপত্র জমা পড়েছে স্বতন্ত্র হিসেবে। একইভাবে বহু আসনে যুদ্ধাপরাধের দায়ে অভিযুক্ত নেতা ও তাদের সন্তানরা হচ্ছেন ‘ধানের শীষে’ জামায়াতের প্রার্থী। এর মধ্যে চট্টগ্রাম-৬ (রাউজান) আসনে মৃত্যুদ-ে দ-িত যুদ্ধাপরাধী সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ভাই গিয়াসউদ্দিন কাদের চৌধুরী এবং পিরোজপুর-১ আসনে আমত্যু কারাদ-ে দ-িত সাঈদীর ছেলে শামীম সাঈদী ধানের শীষের মনোনয়ন পেয়েছেন। এছাড়া বগুড়া-৩ (দুপচাঁচিয়া-আদমদীঘি) আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেয়েছেন যুদ্ধাপরাধ মামলার পলাতক আসামি আব্দুল মোমিন তালুকদার খোকা। আছে সিলেটের এক আসনের প্রার্থী মাওলানা হাবিবুর রহমান। ইতোমধ্যেই তার বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ ও জঙ্গীবাদের অভিযোগ এনে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রতিবাদে সোচ্চার হয়েছেন বিএনপির অনেক তরুণ নেতাকর্মী ও সাধারণ ভোটার। ১৯৭১ সালে পূর্ব পাকিস্তানের এএম মালেকের নেতৃত্বে মন্ত্রিসভার সদস্য মাওলানা মোহাম্মদ ইসহাকের নেতৃত্বে খেলাফত মজলিসের মহাসচিব আহমদ আবদুল কাদের যুক্ত আছেন ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে। মুক্তিযুদ্ধের পর দালাল আইনে দ-িত নেতার দলকে সঙ্গে নিয়েই হয়েছে ঐক্য। মুক্তিযুদ্ধের পর দালাল আইনে গ্রেফতারের পর ইসহাকের যাবজ্জীবন কারাদ- হয়। ১৯৭৩ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি বাংলার বাণী পত্রিকার একটি খবরের শিরোনাম ‘দালাল মন্ত্রী ইসহাকের যাবজ্জীবন কারাদ-’। এই নেতা ও তার দল বিএনপি নেতাদের সঙ্গে আসছেন ঐক্যের আলোচনায়। বিএনপি-জামায়াত জোটের শরিক হয়ে ঐক্যের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন হেফাজতের ঢাকা মহানগরের আমির নূর হোসেন কাসেমী। যার একটি রাজনৈতিক দলও আছে। উগ্রবাদী কর্মকা-ের দায়ে অভিযুক্ত এ দল আছে বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটে। দলটির সঙ্গে আছে জামায়াতের প্রত্যক্ষ যোগাযোগ। তাহলে কি জামায়াত নেতা, যুদ্ধাপরাধী ও তাদের সন্তানরাই এখন ঐক্যফ্রন্টের আশ্রয়স্থল? এ প্রশ্নে সঠিক উত্তর মিলছে না ফ্রন্টের নেতাদের কাছে। এ প্রশ্নে বিব্রত ফ্রন্ট নেতারা গণমাধ্যমের কাছে বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়ার কৌশল নিয়েছেন। কারণ, ঐক্যফ্রন্টের মতো জামায়াতও একই প্রতীকে ভোট করতে যাচ্ছে। আর এখন ঐক্যফ্রন্টের শরিকরা এই প্রতীকে ভোট চাইলে সেটি জামায়াতের পক্ষেও যাচ্ছে। ঐক্যফ্রন্টের শরিক দলের এক নেতা অবশ্য কিছুৃটা হতাশা প্রকাশ করেই বলছিলেন, স্বাভাবিকভাবেই আমরা ধানের শীষে ভোট চাইব। এখন জামায়াতও যেহেতু এই প্রতীকে ভোট করবে, তাই আমাদের এই আবেদন তাদের পক্ষেও যাবে। আর এটিকে নিশ্চয় আওয়ামী লীগ ব্যবহার করবে আমাদের বিরুদ্ধে। ঐক্যফ্রন্ট নেতা ডাঃ জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেছেন, আমরা জামায়াতের পক্ষে ভোট চাইব কেন? আমরা চাইব ধানের শীষের পক্ষে। কিন্তু জামায়াত তো এই প্রতীকেই ভোট করবে, তাহলে? উত্তরে বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের যত শক্তি আছে, যারা পরিবর্তন চায় তারা ধানের শীষের পক্ষে ভোট করবে। জামায়াত মত পরিবর্তন করেছে। জামায়াত কোন দল হিসেবে ভোটে আসছে না। দলটির কিছু ব্যক্তি নির্বাচন করছেন যারা আগে জামায়াত করতেন। বলেন, মত পরিবর্তন করে যে কেউ বিএনপির সঙ্গে আসতে পারবেন। তাতে কোন অসুবিধা নেই। জেএসডির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মালেক রতন বলেন, আমরা কোনভাবে জামায়াতের সঙ্গে একাকার হইনি। আমাদের জোট বিএনপির সঙ্গে, জামায়াতের সঙ্গে নয়। বরং আওয়ামী লীগই বিভিন্ন সময় সাম্প্রদায়িক শক্তিকে প্রশ্রয় দেয়। এই যে শফীরা (কওমি মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ডের প্রধান আহমদ শাহ শফী) কি সাম্প্রদায়িক শক্তি নয়? আমরা এই জায়গা থেকে সরে আসার চেষ্টা করছি। গণফোরাম নেতা সুব্রত চৌধুরী নিজেও বিএনপির ধানের শীষে নির্বাচন করবেন। একই প্রতীক জামায়াতেরও। তিনি বলেন, জামায়াত, হেফাজত, খেলাফত সবই তো সরকারী দলের সঙ্গে। যে হেফাজত নিয়ে এত কথা সেই হেফাজতও এখন আওয়ামী লীগের সঙ্গে। জামায়াত নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়; কই হেফাজত নিয়ে তো প্রশ্ন নেই? জামায়াত নিয়ে প্রশ্ন করায় ড. কামালের ঘনিষ্ঠ এই নেতা কিছুটা ক্ষুব্ধ হয়ে বলেন, জামায়াত খোঁজেন আওয়ামী লীগের ভেতর। আমাদের দিকে খোঁজেন ক্যান? যারা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের দল তাদের দিকেই তো জামায়াত-হেফাজত আছে। সেখানে খুঁজুন। জামায়াত নিয়ে অনেক বলেছি আর কিছু বলার নেই। কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান তালুকদার বলেছেন, আমরা জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট করেছি বিএনপি এবং আরও কয়েকটি দলের সঙ্গে। বিএনপি তাদের শরিক দলের সঙ্গে কী করবে, এটা তাদের ব্যাপার। নাগরিক ঐক্যের সমন্বয়ক শহীদুল্লাহ কায়সারও দাবি করেন, আমাদের ঐক্য হয়েছে বিএনপির সঙ্গে। এখন বিএনপি তাদের দল থেকে কাকে মনোনয়ন দেবে সেটা তাদের বিষয়। এতে ঐক্যফ্রন্টের কোন সমস্যা নেই। তার পরও ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটির বৈঠক হলে সেখানে হয়ত এই বিষয়ে আলোচনা হতে পারে। এদিকে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলছিলেন, জামায়াত নেতাদের ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচন করার বিষয়কে তারা ইতিবাচক হিসেবেই দেখছেন। তাদের দলীয় প্রতীক নেই বা সেটাকে স্বীকৃতি দেয়া হচ্ছে না, সেখানে ধানের শীষের প্রতীক তারা মেনে নিতে বাধ্য হচ্ছে। সেদিক থেকে অবশ্যই নেগেটিভ কিছু দেখছি না আমি। ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা এবং গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল এখন জামায়াত ইস্যুতে কথা বলতে রাজি নন। তবে জানা গেছে, তিনি তার নেতাদের বলেছেন, জামায়াতের বর্তমান অবস্থান অস্বস্তিকর। এ নিয়ে মিডিয়ায় কথা কম বলতে হবে। জামায়াতের আগের নির্বাচনের তথ্য বলছে, ২০০১ সালে চার দলীয় জোটের ব্যানারে ৩১, এর মধ্যে জোটবদ্ধ ৩০ এবং একক একটিতে নির্বাচন করে জামায়াত। ২০০৮ সালের নির্বাচনে ৩৯ আসনে জোটগত সমর্থন পেলেও চারটি থেকে দলীয়ভাবে করে। দলটির তৃণমূলের অভিমতের ভিত্তিতে এবার তাদের দাবি ৬২। তবে চূড়ান্তভাবে ৪/৫ আসনে ন্যূনতম ছাড় চায় জামায়াত। ১৯৮৬ সালের ৭ মে জাতীয় সংসদের তৃতীয় নির্বাচনে জামায়াতে ইসলামী ৭৬ আসনে মনোনয়ন দিয়েছিল। ওই নির্বাচনে দলটি ১০ আসনে বিজয়ী হয়। ’৮৮ সালের চতুর্থ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও ’১৪ সালের ৫ জানুয়ারি ১০ম জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জন করে জামায়াত। ১৯৯১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জামায়াত ১৮ আসনে বিজয়ী হয়। এই নির্বাচনে দলটি ২২২ প্রার্থী দিয়েছিল। ১৯৯৬ সালের ১২ জুন সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জামায়াত তিনটি আসনে জয়ী হয়। ২০০১ সালের অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জামায়াত ১৭ আসন পায়। মহিলা আসনগুলো থেকে চারটি আসনে জয়ী হয় তারা। ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জামায়াত দুটি আসনে বিজয়ী হয়। ওই নির্বাচনে দলটি জোটগতভাবে ৩৯ ও চারটিতে একক নির্বাচন করে। এছাড়া প্রথম ও দ্বিতীয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইসলামিক ডেমোক্র্যাটিক লীগের ব্যানারে নির্বাচন করেছিল জামায়াত। জামায়াতের নেতাকর্মীরা বলছেন, একাদশ জাতীয় নির্বাচনে দল হিসেবে টিকে থাকাটা বেশি জরুরী। আর এক্ষেত্রে এবার বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্টই হচ্ছে জামায়াতের শেষ আশ্রয়। তবে জামায়াতের এই মুহূর্তে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনা বইছে জামায়াত নিয়ে বিএনপি নেতা নজরুল ইসলামের বক্তব্যে। জামায়াত নেতা, যুদ্ধাপরাধীদের সন্তানদের প্রতীক দিয়ে সমালোচনায় পড়ে তিনি শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের বলেছেন, আমরা তো বলেছি কোন যুদ্ধাপরাধীকে আমাদের প্রতীক দেব না। কেউ যুদ্ধাপরাধ না কইরা থাকলে তাকে দিতে অসুবিধা কি? জামায়াতের মধ্যে মুক্তিযোদ্ধাও আছে।
×