বিশেষ প্রতিনিধি ॥ আওয়ামী লীগ প্রেসিডিয়াম সদস্য, কেন্দ্রীয় ১৪ দলের মুখপাত্র এবং স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেছেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াত এবং নীতি-আদর্শহীন, দুর্নীতিবাজ, সাম্প্রদায়িক ও ভন্ডদের বিরুদ্ধে দেশের জনগণ গণরায় দেবে। বিজয়ের মাসে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি বিজয়ী হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউর আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ১৪ দলের সঙ্গে পেশাজীবী সমন্বয় পরিষদের এক মতবিনিময় সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সমালোচনা করে মোহাম্মদ নাসিম বলেন, ডিসেম্বর মাসে বাঙালী বিজয় ছাড়া অন্য কোন বিকল্প চিন্তা করতে পারে না। বাঙালী সবসময় ডিসেম্বর মাসে বিজয় অর্জন করেছে। এবারও নির্বাচন ডিসেম্বরে। এই কারণে বিশ্বাস করি, বাঙালী জাতি অপশক্তি, নীতিহীন, আদর্শহীন-দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে রায় দিবে। তিনি বলেন, দেশের জনগণ নবান্ন উৎসবের মতো ভোট উৎসবের প্রস্তুতি নিয়ে আছে। তারা ভোট দিতে চায়, নৌকার বিজয় করাতে চায়। ১৪ দল ঐক্যবদ্ধ আছে দাবি করে মোহাম্মদ নাসিম বলেন, এ লড়াই হচ্ছে সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে, এ লড়াই হচ্ছে কিছু নীতি ও আদর্শহীন নেতৃত্বের বিরুদ্ধে। এ লড়াই হচ্ছে বিএনপি-জামায়াত জোটের সেই দুর্নীতিবাজ, সন্ত্রাসবাদ এবং যারা জঙ্গী লালন করেছে; তাদের চিরদিনের জন্য পরাজিত করার নির্বাচন। স্বাধীনতাবিরোধী শক্তিকে মানুষ রাজনীতিতে দেখতে চায় না।
সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, সারাদেশের মানুষ এখন শেখ হাসিনাকে বিজয়ী করার জন্য উন্মুখ হয়ে আছে। মানুষ উৎসবমুখর হয়ে আছে। সমস্ত গণতান্ত্রিক শক্তি ঐক্যবদ্ধ হয়ে গেছে। মোহাম্মদ নাসিম বলেন, আমাদের যে কোন বিচ্যুতি পরাজয়ের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে। আমরা কি পেলাম কি পেলাম না, বড় কথা না। সবার ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। তিনি বলেন, আগামী ১৬ ডিসেম্বর থেকে দেশের প্রতিটি উপজেলায় বিজয় মঞ্চ করা হবে। এখান থেকে সবাই মিলে ঐক্যবদ্ধ কাজ করে বিজয় নিশ্চিত করব।
অপরাধীদের নেতৃত্বে গণতন্ত্র রক্ষা হয় না- তথ্যমন্ত্রী ॥ জাসদ সভাপতি ও তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেন, অপরাধীদের নেতৃত্বে গণতন্ত্র রক্ষা হয় না। এখন বাংলাদেশের সব মুখোশধারী রাজাকার-খুনী-যুদ্ধাপরাধী-দ-িত অপরাধী ও দুর্নীতিবাজরা জোট বেঁধেছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে। অন্যদিকে উন্নয়নকামী ও
শান্তিকামী জনগণ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। এ রকম কঠিন একটা অবস্থায় আগামী নির্বাচন একটা রাজনৈতিক যুদ্ধ। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশকে যদি উন্নয়ন ও শান্তির পথে রাখতে চান, তাহলে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ থাকুন এবং ভূমিকা রাখুন। একইসঙ্গে সব মুখোশ ফেলে দিয়ে সেই রাজাকার খুনী, দ-িত অপরাধী, দুর্নীতিবাজসহ যেসব অপরাধী ঐক্যফ্রন্টে জোট বেঁধেছে, তাকে প্রত্যাখ্যান করুন। তিনি বলেন, গত ১০ বছরে আমরা অনুন্নয়ন ও দারিদ্র্য থেকে উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির পথে হাঁটছি।
অনুষ্ঠানে সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া, আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক হারুন অর রশিদ, বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের (এফবুটা) সভাপতি অধ্যাপক ড. এএসএম মাকসুদ কামাল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) সাবেক উপচার্য অধ্যাপক ডাঃ কামরুল হাসান খান, কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি নূর মোহাম্মদ তালুকদার, কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনের সভাপতি এম এম সালেহ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। বক্তারা আগামী নির্বাচনে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাকে বিজয়ী করতে কাজ করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করে বলেন, দেশকে এগিয়ে নিতে শেখ হাসিনার কোন বিকল্প নেই। শেখ হাসিনার দক্ষ নেতৃত্বের কারণে দেশ দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। এছাড়া বৈঠকে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক আব্দুস সবুর, উপদফতর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ, কমিউনিস্ট কেন্দ্রের আহ্বায়ক ডাঃ ওয়াজেদুল ইসলাম, ওয়ার্কার্স পার্টির পলিট ব্যুরো সদস্য আনিসুর রহমান মল্লিক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
