ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

অস্ট্রেলিয়া-ভারত টেস্ট সিরিজ

পেইনদের আগ্রাসী হতে বলছেন ক্লার্ক

প্রকাশিত: ০৪:৩১, ২৯ নভেম্বর ২০১৮

পেইনদের আগ্রাসী হতে বলছেন ক্লার্ক

শাকিল আহমেদ মিরাজ ॥ টেস্ট ক্রিকেটে আগ্রাসন অস্ট্রেলিয়ার রক্তে মিশে আছে। সাদা পোশাকে বরাবরই দলটির খেলোয়াড়দের বডি ল্যাঙ্গুয়েজ থাকে আলোচনায়। সেটি ইংল্যান্ডের সঙ্গে ঐতিহ্যের এ্যাশেজ কিংবা পশ্চাৎপদ ওয়েস্ট ইন্ডিজের সঙ্গে সাধারণ দ্বিপক্ষীয় সিরিজ হোক। কিন্তু বছরের শুরুর দিকে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে কেপটাউন টেস্টে বহুল আলোচিত বল টেম্পারিংয়ের সূত্র ধরে সব কেমন ঝিমিয়ে পড়েছে। মাঠে ম্যাচের পর ম্যাচ, সিরিজের পর সিরিজে ভরাডুবির পাশাপাশি তাদের সেই আগ্রাসনটাও এখন উধাও। ঘরের মাটিতে প্রবল প্রতিপক্ষ ভারতের সঙ্গে আসন্ন বহুল আলোচিত দ্বৈরথে ক্রিকেটারদের মেজাজী দেখতে চান সাবেক অধিনায়ক মাইকেল ক্লার্ক। তবে বর্তমান টেস্ট অধিনায়ক টিম পেইন তার সঙ্গে একমত হতে পারছেন না। তিনি জানিয়েছেন অতিমাত্রায় আগ্রাসন নয়, বরং ভাল ক্রিকেট খেলে, কিভাবে জয়ের ধারায় ফেরা যায়, সেটাই প্রথম। পেইন বলেন, ‘ক্লার্কই (ক্লার্ক) আমাদের কাছ থেকে অতি আগ্রাসী ক্রিকেট চাইছেন। অস্ট্রেলিয়ানদের খেলায় আগ্রসন থাকবে সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু আগ্রাসী হতে গেলেই যে স্লেজিং করতে হবে, বাজে অঙ্গভঙ্গি নিয়ে হাজির হতে হবে এমন কথা নেই। আমাদের প্রথম লক্ষ্য ভাল ক্রিকেট খেলে জয়ের ধারায় ফিরে আসা এবং অবশ্যই অগণিত অস্ট্রেলিয়ান ভক্তদের কাছে আস্থা অর্জন করা। ভারত সিরিজে আমরা তাই মাঠে সেরাটা দেয়ার দিকেই মনোযোগী হতে চাই। আমাদের হাতে বিশ্বমানের সব পেসার আছে। ব্যাটসম্যানরা প্রয়োজনীয় দায়িত্ব পালন করতে পারলে ভাল কিছু আশা করা যায়।’ কেপটাউনে কলঙ্কিত সেই ঘটনার সূত্র ধরে নিষিদ্ধ হন অধিনায়ক স্টিভেন স্মিথ ও আরেক বড় তারকা ডেভিড ওয়ার্নার। এরপর একের পর এক সিরিজ হেরে চলেছে দলটি। যদিও টেস্ট সিরিজের আগে ভারতের সঙ্গে তিন ম্যাচের টি২০ ১-১এ ড্র করতে সক্ষম হয় এ্যারন ফিঞ্চের দল। ৬ ডিসেম্বর এ্যাডিলেড টেস্ট দিয়ে শুরু বহুল আলোচিত চার টেস্টের সিরিজ। একদিন আগে মাইকেল ক্লার্ক বলেন, ‘সবার পছন্দের দল হওয়া নিয়ে দুশ্চিন্তা ছেড়ে বরং কিভাবে বিপক্ষের সমীহ আদায় করা যায়, সেটি নিয়ে ভাবা উচিত। কঠোর, আগ্রাসী অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটই খেলুক ওরা। ভাল লাগুক বা না লাগুক, এটা আমাদের রক্তে মিশে আছে। এটা ছেড়ে দিলে হয়তো আমাদের সবাই ভালবাসতে পারে। কিন্তু আর ম্যাচ জিততে হবে না।’ ক্লার্ক মনে করেন, ডেভিড ওয়ার্নারের মতো হতে হবে তাদের দেশের ক্রিকেটারদের। উদাহরণ হিসেবে আক্রমনাত্মক ওয়ার্নারের প্রশংসা করে ক্লার্ক বলেন, ‘সোজাসাপ্টা কথা বলা, চোখে চোখ রেখে তর্ক করা, এটাই ওর স্টাইল। অধিনায়ক হিসেবে আমি ওকে সব সময় দলে চাইতাম। কারণ ও সেই আগ্রাসনটা দলের মধ্যে আনত, যেটা আমি চাইতাম। কিন্তু সবসময়ই একটা সীমার মধ্যে থাকার চেষ্টাও করত ও। আমাদের মধ্যে এই নিয়ে অনেকবার ব্যক্তিগত আলোচনাও হয়েছে। ওয়ার্নার ক্রিকেটে ফিরে এলে ওকে যদি মাঠে ভিজে বিড়াল হয়ে থাকতে বলা হয়, তাহলে বোধ হয় ও সেটা পারবে না। কারণ আগ্রাসনই ওয়ার্নারকে ভাল খেলতে সাহায্য করে।’ অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেট বোর্ডকে (সিএ) ক্লার্কের পরামর্শ, ক্রিকেটারদের লড়াকু মেজাজে কাটছাঁট করতে না বলে তাতে সায় দেয়া উচিত। কারণ এতে ক্রিকেটারদের স্বাভাবিক প্রবৃত্তি নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। যার জের তার পাফর্মেন্সে প্রভাব পড়ে। অস্ট্রেলিয়া যে গত ২৬টির মধ্যে ১৮টি ম্যাচেই হেরেছে, হঠাৎ নির্জীব হয়ে পড়াকে তার অন্যতম কারণ হিসেবেও দায়ী করেন ক্লার্ক। ভারত সিরিজে খেলোয়াড়দের আগ্রাসী হওয়ার পরামর্শ সাবেক এই তারকা অধিনায়কের।
×