ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৫ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১

বছরের আলোচিত তারকা নাওমি ওসাকা

প্রকাশিত: ০৪:২১, ২৮ নভেম্বর ২০১৮

বছরের আলোচিত তারকা নাওমি ওসাকা

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ গত বছরেও সেভাবে তাকে কেউ চিনতো না। কিন্তু চলতি বছর ছিল নাওমি ওসাকার ঈর্ষণীয় উত্থানের ঘটনায় ভরপুর। বিশেষ করে গত সেপ্টেম্বরে আর্থার এ্যাশ স্টেডিয়ামে যখন ইউএস ওপেনের ফাইনালে জীবন্ত টেনিস কিংবদন্তি সেরেনা উইলিয়ামসকে হারিয়ে শিরোপা জিতলেন তখন থেকেই তাকে নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে জোরেশোরে। প্রথম জাপানী নারী হিসেবে কোন গ্র্যান্ডস্লাম জেতার ইতিহাস রচনা করেন তিনি। ক্যারিয়ারের প্রথম ডব্লিউটিএ জিতেছিলেন মার্চে ইন্ডিয়ান ওয়েলসে। সেখান থেকে নজর কাড়তে শুরু করেন যা বছরের শেষ পর্যন্ত তার প্রতি টেনিস বিশ্বকে বিমোহিত করে রেখেছিল। এবার আসন্ন মৌসুমে নিজের সেই আকর্ষণীয় নৈপুণ্য ধরে রাখার চ্যালেঞ্জ ২১ বছর বয়সী এ তরুণীর। যখন আর্থার এ্যাশে বছরের শেষগ্র্যান্ড স্লামের ফাইনালে নামলেন তখন সবার দৃষ্টি ছিল সেরেনার দিকে। কারণ আরেকটি গ্র্যান্ডস্লাম জিতলেই সর্বকালের সেরা হয়ে যাবেন ২৪ শিরোপা জিতে। তাছাড়া আগের বছর প্রথম সন্তানের জননী হওয়ার পর এভাবে তার ফিরে আসাটা ছিল বিস্ময়কর। কিন্তু সবাইকে আরও বড় বিস্ময় উপহার দিয়েছেন ওসাকা। ৮ সেপ্টেম্বর ফাইনাল জেতার সময় তার বয়স ছিল মাত্র ২০। ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বড় ম্যাচে প্রথমবার নেমেই বাজিমাত করেন এবং সারাবিশ্বে হৈচৈ ফেলে দেন এ জাপানী তরুণী। এমনকি ফাইনাল ম্যাচে তার প্রতি এবং চেয়ার আম্পায়ারের প্রতি কটূক্তি করেছিলেন সেরেনা। এরপরও ওসাকা জেতার পর পুরো স্টেডিয়ামে তাকে উদ্দেশ করে দুয়োধ্বনি দিয়েছেন উপস্থিত ২৪ হাজার দর্শকের অধিকাংশই। কারণ স্বাগতিক প্রতিযোগী হিসেবে সেরেনার পক্ষেই ছিলেন সিংহভাগ দর্শক। ট্রফি হাতে নিয়ে তাই অশ্রু ধরে রাখতে পারেননি ওসাকা। কাঁদতে কাঁদতে বলেছিলেন, ‘আমি জানি সবাই তার জন্যই সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে এবং চিৎকার করছে। তাই আমি দুঃখিত সবাইকে এভাবে পর্যবসিত করার জন্য।’ ম্যাচে কোনভাবেই নিজেকে খুঁজে পাননি সেরেনা। সর্বকালের সেরা হয়ে ওঠার ম্যাচে একের পর এক ভুলের ফাঁদে পা দিয়ে মেজাজ হারিয়ে ফেলেছিলেন। র‌্যাকেট মাটিতে আছাড় দিয়েছেন, চেয়ার আম্পায়ারকে ‘চোর’ ও ‘মিথ্যুক’ বলে গালি দিয়েছেন এবং ওসাকার প্রতিও ঝাঁজালো বাক্যবাণ করেছেন তিনি। বিরূপ আচরণের জন্য পয়েন্ট কেটে নেন আম্পায়ার। আর এসব কিছুই ওসাকার আনন্দটাই কেড়ে নিয়েছিল। জেতার পরও তিনি ঐতিহাসিক শিরোপা হাতে উদযাপন করতে পারেননি। পরদিন থেকে অবশ্য সেরেনার বিরুদ্ধেই সোচ্চার হয়েছেন অনেক মানুষ। ফাইনালে তার আচরণ নিয়ে বিশ্বব্যাপী হয়েছে সমালোচনা। ওসাকা এখন সেই স্মৃতিটা চারণ করতে গিয়ে সেদিনের অভিজ্ঞতাকে ‘অম্লমধুর’ বলে আখ্যা দিচ্ছেন। কিন্তু তখনকার মতোই এখনও সেরেনাকে নিজের ‘আইডল’ এবং সর্বকালের সেরা হিসেবে দাবি করেছেন ওসাকা। তিনি বলেন, ‘আমার এখন অনেক কিছুই আছে, কিন্তু সেটাকে আমি বিনষ্ট হতে দেব না। অনেককিছুই আছে যা আমি বলতে ইচ্ছুকÑ যেমন আমি কেমন বোধ করেছি এবং আরও বিষয়গুলো। কিন্তু আমি সেসব এখন আর করতে যাব না। কারণ তিনি আমার আইডল এবং সর্বকালের সেরা খেলোয়াড়।’ গত মার্চে ইন্ডিয়ান ওয়েলসে প্রথম ডব্লিউটিএ জিতেছিলেন ওসাকা, এরপর ইউএস ওপেন জেতার মাধ্যমে যে কোন প্রতিপক্ষের জন্য কঠিন হয়ে ওঠেন। ২০১৬ সালে প্যান প্যাসিফিক ওপেনের ফাইনালে উঠে চমক দেখালেও পরবর্তীতে নিষ্প্রভ হয়ে পড়েছিলেন। কিন্তু এ বছর নিজেকে অন্য এক উচ্চতায় নিয়ে গেছেন ওসাকা। প্যান প্যাসিফিকে ফাইনাল, চায়না ওপেনে সেমিফাইনাল খেলে ক্যারিয়ারসেরা ৪ নম্বরে উঠে আসেন ডব্লিউটিএ র‌্যাঙ্কিংয়ের।
×