ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

রংপুর বিভাগের বাছাই সম্পন্ন

প্রকাশিত: ০৬:২৬, ২৪ নভেম্বর ২০১৮

রংপুর বিভাগের বাছাই সম্পন্ন

তাহমিন হক ববী, নীলফামারী থেকে ॥ ফুটবলের জাগরণে রংপুর বিভাগের আট জেলা যেন মেতে উঠছে। বাংলাদেশ জেলা ও বিভাগীয় ফুটবল এ্যাসোসিয়েশনের (বিডিডিএফএ) উদ্যোগে ও সাইফ পাওয়ার টেক লিমিটেডের পৃষ্ঠপোষকতায় প্রস্তাবিত জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বড় ছেলে শেখ কামালের (প্রস্তাবিত) নামে ফুটবল টুর্নামেন্টের জন্য রংপুর বিভাগীয় ফুটবল দল গঠনের কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে। গতকাল শুক্রবার উত্তরবঙ্গের নীলফামারীর শেখ কামাল স্টেডিয়ামে খেলোয়াড় বাছাই কার্যক্রম বেলুন উড়িয়ে উদ্বোধন ও বাছাইকৃত ৩০ জন খেলোয়াড়ের হাতে আনুষ্ঠানিকভাবে ইয়েস কার্ড প্রদান করেন বিডিডিএফএ মহাসচিব তরফদার মোঃ রুহুল আমিন। এ সময় তিনি বলেন, আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে বিশ্বের দরবারে যেমন রোল মডেল হিসেবে তুলে ধরতে সক্ষম হয়েছে তেমনি আমরা প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে দেশের তৃণমূল থেকে ফুটবল খেলোয়াড় বাছাই করে ফুটবলের জাগরণ সৃষ্টি করতে মাঠে নেমেছি। এই জাগরণ আমরা ছড়িয়ে দিতে চাই বিশ্ব দরবারে। ফুটবলের জাগরণকেও আমরা রোল মডেল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হব। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন নীলফামারী জেলা প্রশাসক নাজিয়া শিরিন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এবিএম আতিকুর রহমান, নীলফামারী পৌর মেয়র দেওয়ান কামাল আহমেদ, বিডিডিএফএ সহ-সভাপতি সিরাজউদ্দীন মোঃ আলমগীর, সাবেক জাতীয় তারকা ফুটবলার নীলফামারী জেলা বিডিডিএফএ সভাপতি আরিফ হোসেন মুন, বিডিডিএফএ’র সমন্বয়কারী আহমেদ সায়িদ আল ফাত্তাহ ও রংপুর বিভাগের আট জেলার বিডিডিএফএ নেতৃবৃন্দ। জেলা প্রশাসক নাজিয়া শিরিন তার বক্তব্যে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের রোল মডেলের একটি দেশ তৈরি করে দিয়েছেন। আমরাও তাকে রোল মডেল ফুটবল খেলোয়াড় তুলে দিতে পারব না কেন। আগামীদিনে বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশের ফুটবল ছড়িয়ে পড়বে। সেই সঙ্গে তিনি তৃণমূল পর্যায়ে ক্রিকেটকেও প্রাধান্য দেয়ার আহ্বান জানান। ইয়েস কার্ড তুলে দেয়ার সময় তরফদার মোঃ রুহুল আমিন বাছাইকৃত খেলোয়াড়দের কঠোর অনুশীলনের মাধ্যমে আগামীর চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করার আহ্বান জানিয়ে বলেন ‘দেশব্যাপী ফুটবল জাগরণের জন্য আমাদের এ উদ্যোগ। ইতোমধ্যে চট্টগ্রামে বাছাইপর্ব শেষ হয়েছে, দ্বিতীয়পর্ব হলো নীলফামারীতে, প্রতিভাবান ফুটবলাররা হয়েছে উদ্দীপ্ত, আমি বিশ্বাস করি সারাদেশে এ কার্যক্রম সম্পন্ন হওয়ার পর আমরা খুঁজে পাব বেশ কিছু নতুন মাঠ কাঁপানো খেলোয়াড়’। ইয়েস কার্ড প্রদানের পর তিনি বাছাইকৃত খেলোয়াড়দের সঙ্গে স্টেডিয়াম মাঠে ফুটবলও খেলেন। এর আগে তরফদার মোঃ রুহুল আমিনসহ অতিথিরা শেখ কামাল স্টেডিয়ামে পৌঁছালে তাদের পুষ্পবৃষ্টির মাধ্যমের বরণ করে নেয়া হয়। এরপর শেখ কামাল স্টেডিয়ামের সম্মেলন কক্ষে এই স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক ও জেলা পর্যায়ের প্রতিযোগিতামূলক ফুটবল টুর্নামেন্ট ও প্রীতি ম্যাচের ভিডিও ফুটেজ প্রদর্শন করা হয়। এ সময় অভিভূত হয়ে পড়েন তরফদার মোঃ রুহুল আমিন। মন্তব্য করতে গিয়ে বলেন, দেশের ঢাকা সিলেট চট্টগ্রাম কক্সবাজার স্টেডিয়ামে অনেক আন্তর্জাতিক খেলা অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু নীলফামারীর শেখ কামাল স্টেডিয়ামে ফুটবলের আন্তর্জাতিক ম্যাচ হয়েছে এবং এখানে প্রচুর দর্শক প্রমাণ করে নীলফামারী ফুটবলপ্রেমী জেলা। অনুষ্ঠানে তরফদার মোঃ রুহুল আমিনসহ অতিথিদের সোনালী অতীত ক্লাবের পক্ষ হতে ক্রেস্ট প্রদান করা হয়। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন জেলা ক্রীড়া সংস্থার প্রচার সম্পাদক রাসেল আমিন স্বপন। সংশ্লিষ্টরা জানান, রংপুর বিভাগের টিমের জন্য বাছাইকৃত খেলোয়াড়রা পরবর্তীতে ৪৫ দিনের প্রশিক্ষণে অংশ নেবেন। প্রশিক্ষণ শেষে তারা প্রস্তবিত শেখ কামাল অনুর্ধ-২০ জাতীয় ফুটবলে রংপুর বিভাগের পক্ষে অংশ নেবে। ফুটবলার বাছাই প্রক্রিয়ায় নির্বাচক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন নির্বাচক কমিটির আহ্বায়ক হাসানুজ্জামান খান বাবলু, সদস্য ইমতিয়াজ সুলতান জনি, অমিত রায়, সরোয়ার হোসেন মধু, মোঃ আকরাম হোসেন, মোঃ হাবিবুর রহমান জালাল, মোঃ রিয়াজ উদ্দীন বিশ্বাস। বাছাই প্রক্রিয়া শেষে সিলেক্টরস প্যানেলের আহ্বায়ক হাসানুজ্জামান খান বাবলু বলেন, বাছাই প্রক্রিয়ায় বয়সটা কঠোরভাবে যাচাই করা হয়েছে। কোন বেশি বয়সী খেলোয়াড়কে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। খেলোয়াড়দের সবাই এখনও পর্যন্ত কোন পদ্ধতিগত কোচিং পায়নি। নিয়মিত কোচিং পেলে এরা ভাল খেলোয়াড় হয়ে উঠবে। রংপুর বিভাগের আটটি জেলার ৮১ জন খেলোয়াড়ের মধ্য থেকে ৩০ ফুটবলারকে বাছাই করা হয়। এর মধ্যে স্বাগতিক নীলফামারী জেলায় ১১ জন, রংপুর জেলায় ৫ জন, পঞ্চগড় জোয় ৪ জন, দিনাজপুর জেলায় ৩ জন, ঠাকুরগাঁও জেলায় ৩ জন, লালমনিরহাট জেলায় ২ জন ও কুড়িগ্রাম জেলায় ২ জন। বাছাইয়ে গাইবান্ধা জেলার খেলোয়াড়রা অংশ নিলেও এ জেলার কেউ ইয়েস কার্ড পায়নি। বাছাইকৃত খেলোয়াড়রা হলেন- নীলফামারী জেলার জুয়েল ইসলাম জীবন, অন্তর ঢালি, বিনয়, মোঃ জিশান, বাবু ইসলাম, আপন চন্দ্র রায়, খাইরুল ইসলাম সজিব, নাজমুল ইসলাম, উদয় রায়, মোঃ রিপন ইসলাম, মোঃ মোরছালিন। কুড়িগ্রাম জেলার মোঃ ওমর ফারুক মিঠু, শামসুদ্দীন আহমেদ সৌরভ। লালমনিরহাট জেলার রিয়াদ হোসেন, জাহিদ হাসান। রংপুর জেলার মোঃ হোসেন আলী, মোঃ শামিম মিয়া, সাদেকুল ইসলাম, মেহেদি হাসান রাব্বি, বিমল রায়। ঠাকুরগাঁও জেলার শাকিল খান, মমিন ইসলাম, মোঃ সাইদী। পঞ্চগড় জেলার সঞ্জয় চৌধুরী, তাপস চন্দ্র গুমন, মোঃ হাদিদ ইসলাম, জহিরুল ইসলাম ও দিনাজপুর জেলার সাব্বির হোসেন সাগর, রেফাইল মারি, রাকিব সরকার।
×