নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও জোট বিপুল ভোটে জয়লাভ করবে

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট বিপুল ভোটে জয়লাভ করবে এমন দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেছেন, এ ধরনের সংখ্যাতত্ত্বের হিসাবে আমরা এতটুকু বলতে পারি, হিসাবের অঙ্কে আগামী নির্বাচনে আমাদের দল ও জোট বিপুল ভোটে জয়লাভ করবে। শুক্রবার আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ওবায়দুল কাদের এমন আশাবাদ ব্যক্ত করে আরও বলেন, তবে এসব কথা বলা উচিত নয়, এতে জনগণকে অসম্মান করা হয়। জনগণ আমাদের যত আসনে ভোট দিবে, আমরা ততই পাব। আমরা কোন সংখ্যাতত্ত্বে বিশ্বাস করতে চাই না। কে, কত আসন পাবে দেশের জনগণই তা ঠিক করবে। বিএনপি ‘স্বপ্ন বিলাসী দল’ উল্লেখ করে সেতুমন্ত্রী বলেন, এর আগে নির্বাচনে বিএনপি আমরা ত্রিশ আসন পাব বলেছিল, কিন্তু নির্বাচনে বিএনপিই পেয়েছিল ৩০ আসন। আবার তাদের কেউ কেউ আমাদের ১০ আসনও দিয়েছিল। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নয়াপল্টনে বিএনপি অফিসের সামনে যে জোয়ার দেখা যাচ্ছে, সারা দেশে তাদের এই জোয়ার কিন্তু নেই। এই সাময়িক জোয়ারে ক্ষমতার রঙিন খোয়াব যদি বিএনপি নেতারা দেখেন, তাহলে ৩০ ডিসেম্বর টের পাবেন। নির্বাচনকে ঘিরে বিএনপি নেতাদের হয়রানি করা হচ্ছে এমন অভিযোগে বিষয়ে করা অপর এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, তাদের নয়াপল্টনে একজন আবাসিক প্রতিনিধি রয়েছে। এ ধরনের আজগুবি অভিযোগ তিনি করেন। এটা হচ্ছে মিথ্যাচার প্রডাকশনের জন্যই। জনমত পক্ষে না থাকলে প্রশাসন ও স্ট্যাবলিশমেন্ট দিয়ে কোন ম্যাকানিজম কাজ করবে না। বিএনপির নাশকতা নিয়ে শঙ্কা করছেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নাশকতা করা বিএনপির পুরনো স্বভাব। ১৪ সালে তারা যে নাশকতা করেছে, যে ভয়াবহ চিত্র তারা দেখিয়েছে, শীতকালে নির্বাচন হওয়ায় নাশকতার শঙ্কা থাকেই। যশোর জেলা বিএনপির সভাপতির লাশ বুড়িগঙ্গা নদী থেকে উদ্ধারে বিএনপির মন্তব্য সম্পর্কে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এটা বিএনপির অভ্যন্তরীণ কোন্দলের দিকে ইঙ্গিত করে ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, যশোরের কোন প্রার্থীর বুড়িগঙ্গা নদীতে লাশ, এর মানে তো ‘ডাল মে কুচ কালা হ্যায়’। এটা ওদের নিজস্ব কোন্দলের কারণেও হতে পারে। কারও সঙ্গে কোন্দলের কারণে তারা উনাকে মারতে পারে। কিন্তু সেখানে আওয়ামী লীগের কি স্বার্থ থাকতে পারে? তিনি আরও বলেন, যশোরের মনোনয়নপ্রত্যাশীর লাশ কেন বুড়িগঙ্গায় পাওয়া গেল না খতিয়ে দেখতে হবে। তাদেরও তো অনেক মনোনয়নপ্রত্যাশী আছে। শরিকদের সঙ্গে আসন ভাগাভাগি নিয়ে কোন টানাপোড়েন হয়েছে কিনা এমন এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, আসন নিয়ে দর-কষাকষি তো হবেই। এটা গণতন্ত্রের অংশ। তবে কোন টানাপোড়েন নেই। তবে এখানে তো বানরের পিঠা ভাগ করে তো লাভ নেই। তবে সব কিছুই আমাদের নিয়ন্ত্রণের মধ্যেই আছে। এখানে কে কত সিটে জিততে পারবে, এটাই হলো আমাদের প্রধান ধর্তব্য। যারা বিজয়ী হতে পারবে এমন প্রার্থীদেরই আমরা চূড়ান্ত করব। মহাজোটের সঙ্গে আসন বণ্টন চূড়ান্ত হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, মৌখিকভাবে হয়েছে। যখন ঘোষণা হয়ে যাবে, তখন তো আপনারা পেয়ে যাবেন। শরিকদের কে কত আসন পেতে পারেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটা আমি একটা অনুমান করতে পারি। আমি বারবার বলেছি প্রার্থীকে ইলেক্টেবল হতে হবে, ইউনেবল হতে হবে। সে ক্ষেত্রে ৬৫-৭০ এর জায়গায় ২/৪টা বাড়তেও পারে। সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, আইন বিষয়ক সম্পাদক এ্যাডভোকেট শ ম রেজাউল করিম, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক প্রকৌশলী আব্দুস সবুর, উপদফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য ও সিলেট সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র বদর উদ্দিন আহমেদ কামরান, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মোল্লা মোঃ আবু কাউসার প্রমুখ।