ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

যুক্তরাষ্ট্রে সহিংসতার স্থান নেই

প্রকাশিত: ০৩:৪৫, ২৬ অক্টোবর ২০১৮

যুক্তরাষ্ট্রে সহিংসতার স্থান নেই

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক সহিংসতার কোন স্থান নেই। বুধবার সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ও ২০১৬ সালের ডেমোক্র্যাটিক পদপ্রার্থী হিলারি ক্লিনটনকে উদ্দেশ্য করে পাইপ বোমা পাঠানোর ঘটনায় তিনি এই প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। ট্রাম্প এ ঘটনার নিন্দা জানান। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষগুলো তদন্ত শুরু করেছে। এএফপি ও সিএনএন। ট্রাম্প বলেন, ‘আমি শুধু বলতে চাই আমরা ঐক্যবদ্ধ। আমরা একটা স্পষ্ট বার্তা দিতে চাই, যুক্তরাষ্ট্রে হুমকি বা রাজনৈতিক সহিংসতার কোন স্থান নেই। এ ধরনের ঘটনা দুই দলের মধ্যে তিক্ততা আরও বাড়াবে। আমেরিকান হিসেবে আমাদের কাছে এ ধরনের কাজ খুবই জঘন্য।’ বারাক ওবামা, হিলারি ক্লিনটন ও সিএনএন অফিসে পাইপ বোমা পাঠানোর তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প, ভাইস প্রেসিডেন্ট পেন্স ও রাজনীতিক নেতারা। ওবামা ও হিলারিসহ সংবাদমাধ্যম সিএনএনের অফিসে পাইপ বোমা পাঠানোর পর ট্রাম্প বলেন, ‘রাজনৈতিক সহিংসতার বিরুদ্ধে দেশের নেতাদের একত্র হয়ে কথা বলতে হবে’। ঘটনার নেপথ্যে কারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করার ওপর গুরুত্ব দিয়েছে মার্কিন কর্তৃপক্ষ। বৃহস্পতিবার এই ঘোষণা দেয়া হয়। যাদের পাইপ বোমা পাঠানো হয়েছে তারা সবাই ট্রাম্প সমর্থকদের কাছে ঘৃণীত ব্যক্তি। ৬ নবেম্বর কংগ্রেসের মধ্যবর্তী নির্বাচনের আগে ট্রাম্প সহিংসতাকে উৎসাহ দিচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন সমালোচকরা। পাইপ বোমা পাঠানোর বিষয়ে দ্রুত প্রতিক্রিয়ায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান। একইসঙ্গে তিনি অবিরাম শত্রুতার জন্য আবারও আক্রমণ করেছেন মিডিয়াকে। নিউইয়র্ক পুলিশ প্রধান জেমস ও নেইল বলেন, এই ঘটনার সঙ্গে একজন না কোন চক্র জড়িত এ মুহূর্তে তা বলা যাচ্ছে না। তবে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন দায়ী ব্যক্তিদের অবশ্যই কয়েকদিনের মধ্যে চিহিৃত এবং গ্রেফতার করা হবে। কমপক্ষে সাতটি পাইপ বোমা পাঠানো হয় নিউইয়র্ক, ওয়াশিংটন এবং ফ্লোরিডার বিশিষ্ট আফ্রিকান আমেরিকান ডেমোক্র্যাট, ওবামার এ্যাটর্নি জেনারেল এরিক হোল্ডার ও মার্টিন ওয়াটার্সকে। এর আগে কর্তৃপক্ষ ওবামা ও হিলারিকে পাঠানো সন্দেহজনক ডিভাইস জব্দ করে এবং ফ্লোরিডার রিপাবলিকান দলীয় সদস্য ডেভিড ওয়ারম্যানের অফিসে সন্দেহজনক বস্তু পাঠানোর পর তা ফাকা করা হয়। এ ছাড়া সিএনএনের নিউইয়র্ক ব্যুরোর অফিসে বিস্ফোরক ডিভাইস পাঠানোর পর সেটিও খালি করা হয়েছে। পাশাপাশি সিআইয়ের সাবেক ডিরেক্টর জন ব্রেনানের ঠিকানায়ও তা পাঠান হয়। ট্রাম্প বলেন, ‘এফবিআইয়ের সঙ্গে মাত্রই ব্রিফিং শেষ করেছি। তিনি বলেন, এই ঘটনার তদন্তে আমরা সর্বোচ্চ শক্তি প্রয়োগ করব। এক্ষেত্রে অতিরিক্ত কোন ব্যয় করব না আমরা। সকালবেলা আমরা যে ঘটনা প্রত্যক্ষ করলাম তাতে আমরা হতাশ ও অসন্তুষ্ট। আমরা এর সত্যটা বের করব’। মার্কিন গোয়েন্দা দফতরের প্রতিবেদনে বলা হয়, নিউইয়র্ক সিটিতে হিলারি ও বিল ক্লিনটনের বাড়ির ঠিকানায় পাঠানো একটি প্যাকেটে মঙ্গলবার রাতে বোমা পাওয়া যায়। মধ্যবর্তী নির্বাচন সামনে রেখে ডেমোক্র্যাটিক পার্টির প্রচার কাজে ব্যস্ত হিলারি রাতে ছিলেন ফ্লোরিডায়। তবে তার স্বামী সাবেক প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন নিউইয়র্ক সিটির বাড়িতেই ছিলেন। এরপর বুধবার সকালে ওয়াশিংটন ডিসিতে ওবামার বাড়ির ঠিকানায় পাঠানো আরেকটি পার্সেল পরীক্ষা করেও বোমার সন্ধান পান গোয়েন্দা সদস্যরা। দুটি বোমাই শনাক্ত করা হয় নির্দিষ্ট ঠিকানায় পৌঁছানোর আগে। ফলে এ নিয়ে কোন ধরনের ঝুঁকি তৈরি হয়নি। সোমবার বিলিয়নিয়ার জর্জ সোরোসের বাড়িতেও বোমা পাঠানো হয়েছিল বলে খবর দিয়েছিল পুলিশ। হেজ ফান্ড ব্যবসায়ী জর্জ সোরোসের নিউইয়র্ক সিটির বাড়ির ঠিকানায় পাঠানো বোমাটি তৈরি করা হয়েছিল প্রায় ছয় ইঞ্চি দীর্ঘ একটি পাইপের ভেতরে বিস্ফোরক পাউডার ভরে। গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে সিএনএন হোয়াইট হাউসের ঠিকানায় পাঠানো পার্সেলেও বোমা পাওয়ার খবর দিয়েছিল। তবে পরে ওই খবর প্রত্যাহার করে নেয়া হয়। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো লিখেছে, কারা এসব বোমা পাঠাচ্ছে, তা এখনও উদ্ঘাটন করতে পারেনি পুলিশ। এর দায়ও কেউ স্বীকার করেনি। বোমা পাঠানোর নিন্দা জানিয়ে হোয়াইট হাউসের এক বিবৃতিতে বলা হয়, এ ধরনের জঘন্য সন্ত্রাসী কাজের পেছনে যারাই থাকুক, তাদের আইনের মুখোমুখি করা হবে। ‘যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা দফতর এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তদন্ত শুরু করেছে। এই কাপুরুষদের হুমকি থেকে সবাইকে রক্ষার জন্য সব পদক্ষেপই নেয়া হচ্ছে।’
×