ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ০৭ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১

আগের ব্যবস্থাপত্রেই খালেদার চিকিৎসা চলবে

প্রকাশিত: ০৫:৩৬, ৮ অক্টোবর ২০১৮

আগের ব্যবস্থাপত্রেই খালেদার চিকিৎসা চলবে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ চিকিৎসাধীন কারাবন্দী বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসার লক্ষ্যে গঠিত মেডিক্যাল বোর্ড কর্তৃক তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা না হওয়া পর্যন্ত আগের ব্যবস্থাপত্রেই চিকিৎসা চালানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের (বিএসএমএমইউ) পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল আবদুল্লাহ-আল হারুন। রবিবার দুপুরে বিএনপি প্রধানের চিকিৎসা সংক্রান্ত সব কাগজপত্র পরীক্ষা করে মেডিক্যাল বোর্ড এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে তিনি সাংবাদিকদের জানান। এদিকে বিএনপির একটি প্রতিনিধি দল বিএসএমএমইউর পরিচালকের সঙ্গে দেখা করে বিএনপি প্রধানের চিকিৎসা যেন আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী হয় সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ জানিয়েছে। একই সঙ্গে পুনর্গঠিত মেডিক্যাল বোর্ডের দুই সদস্যের বিষয়ে তাদের আপত্তির কথাও পরিচালককে জানিয়েছেন। ব্রিগেডিয়ার হারুন সাংবাদিকদের বলেন, আপনারা জানেন বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া এখানে ভর্তি আছেন। মেডিক্যাল বোর্ডের সভাপতি অধ্যাপক আব্দুল জলিল চৌধুরী শনিবার তাকে দেখেছেন। রবিবার পাঁচ সদস্যের বোর্ড সদস্যরা বেলা সাড়ে ১১টা থেকে পৌনে ১২টার মধ্যে খালেদা জিয়ার কেবিনে গিয়েছিলেন ও চিকিৎসা সংক্রান্ত সমস্ত ডকুমেন্ট, কাগজপত্র ও দলিল-দস্তাবেজ দেখেছেন। সেখানে মেডিক্যাল বোর্ড সদস্যরা গিয়ে অপেক্ষা করেছেন, খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা হয়নি। বোর্ড সদস্যরা আজকে শুধু তার কাগজপত্র দেখেছেন। এরপর মেডিক্যাল বোর্ড সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, খালেদা জিয়ার চিকিৎসা বোর্ড পুনরায় না বসা পর্যন্ত আগে যে চিকিৎসাগুলো চলছিল সেগুলোই চলবে। সুবিধাজনক সময়ে তার শরীরের পূর্ণাঙ্গ ইতিহাস জেনে পরীক্ষা-নিরীক্ষা আবার করা হবে। বোর্ড হয়ত সোমবার আবার বেগম খালেদা জিয়াকে দেখবেন। হাসপাতালের পরিচালক বলেন, মেডিক্যাল বোর্ডের সদস্য অধ্যাপক সজল কৃষ্ণ ব্যানার্জী বরিশাল গিয়েছেন একটা জরুরী কাজে। তিনি আসবেন ৯ অক্টোবর। তাই তার স্থলে অধ্যাপিকা তানজিনা পারভিনকে মেডিক্যাল বোর্ডের সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তিনি বলেন, মেডিক্যাল বোর্ড কাগজপত্র দেখার সময় খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক আবদুল্লাহ আল মামুনও সঙ্গে ছিলেন। বোর্ডের সদস্যরা কাগজপত্র দেখার সময়ে তার সঙ্গেও কথা বলেছেন। খালেদা জিয়াকে ভর্তির পর হাইকোর্টের নির্দেশনা মেনে মেডিক্যাল বোর্ড পুনর্গঠনের কথা জানান বিএসএমএমইউর পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হারুন। ব্রিগেডিয়ার হারুন আদালতের নির্দেশনার উল্লেখ করে বলেন, কোর্টের শর্ট আদেশে যেটা সামারি আছে সেটার ৪ নম্বর প্যারায় একদম স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা আছে যে, এই বোর্ডে প্রফেসর আব্দুল জলিল চৌধুরী এবং এ্যাসোসিয়েট প্রফেসর বদরুন্নেসা আহমেদ এই দুইজন বাদ দিয়ে বাকি তিন সদস্য এমনভাবে নির্বাচন করতে হবে তারা যেন ড্যাব ও স্বাচিপের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য না হন। যদিও সাপোর্টার অথবা নিয়ার মেম্বার-এই শব্দটা আদালত ইউজ করেছেন, নিয়ার মেম্বার হন কোন অসুবিধা নাই। আমাদের কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে সেইভাবে মেডিক্যাল বোর্ড পুনর্গঠন করা হয়েছে। নবগঠিত এই বোর্ডে যারা আছেন তারা কেউই স্বাচিপ বা ড্যাবের বর্তমান কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য নন। খালেদা জিয়া কোন চিকিৎসক চেয়েছেন কি না এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, না এখনও কোন ডিমান্ড দেননি। ডিমান্ড দিলে আদালতের আদেশে যেটা বলা আছে আমরা সেভাবেই ব্যবস্থা নেব। এর আগে খালেদা জিয়ার আইনজীবী মওদুদ আহমদ, এজে মোহাম্মদ আলী, জয়নাল আবেদীন, কায়সার কামালের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল বিএসএমএমইউর পরিচালকের সঙ্গে দেখা করে বিএনপি প্রধানের চিকিৎসা যেন আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী হয় সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ জানায়। একই সঙ্গে পুনর্গঠিত মেডিক্যাল বোর্ডের দুই সদস্যের বিষয়ে তাদের আপত্তির কথাও জানান। এরপর মওদুদ আহমদ সাংবাদিকদের বলেন, আমরা উচ্চ আদালতের নির্দেশনার অনুযায়ী মেডিক্যাল বোর্ড পুনর্গঠন করা ও দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে পরিচালককে বলেছি। এটা না হলে আমরা আবার আদালতের কাছে যাব। উল্লেখ্য, চলতি বছরের গত ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় দুর্নীতির দায়ে খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদ- প্রদান করে বিচারিক আদালত। এদিন থেকেই রাজধানীর নাজিমউদ্দিন রোডের পুরনো ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারকে বিশেষ কারাগার ঘোষণা করে খালেদা জিয়াকে আটক রাখা হয়েছে। কারা কর্তৃপক্ষ চিকিৎসার জন্য শনিবার বিএসএমএমইউর কেবিন ব্লকে ভর্তি করে।
×