ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

আজ ভারত সফরে যাচ্ছেন পুতিন

সই হচ্ছে এস-৪০০ চুক্তি

প্রকাশিত: ০৪:৫২, ৪ অক্টোবর ২০১৮

সই হচ্ছে এস-৪০০ চুক্তি

রাশিয়া ও ভারতের মধ্যে শুক্রবার ৫ বিলিয়ন ডলার মূল্যের এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা চুক্তি সই হচ্ছে। নয়াদিল্লীতে চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এই ব্যবস্থা পাকিস্তান ও চীন সীমান্তে ভারতীয় আকাশসীমার প্রতিরক্ষাকে জোরদার করবে বলে আশা করা হচ্ছে। টাইমস অব ইন্ডিয়া ও ওয়েবসাইট। পুতিন বৃহস্পতিবার দুদিনের সফরে ভারতে যাচ্ছেন। তার এ সফরকালে এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ছাড়াও সামরিক ও বেসামরিক খাতে মোট ১০টি চুক্তি সই হবে। সম্প্রতি ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে এক বিএসএফ জওয়ানের মৃতদেহ উদ্ধারের পর থেকে ঘটনায় ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কে টানাপোড়েন শুরু হয়। ভারত মনে করে পাকিস্তান সীমান্তে বড় ধরনের হামলার পরিকল্পনা করছে। ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চলমান উত্তেজনার মধ্যেই রাশিয়ার সঙ্গে এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা চুক্তিটি হতে যাচ্ছে। ভারতের কাছে অত্যাধুনিক রুশ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা বিক্রি করা নিয়ে দীর্ঘদিন সময় ক্ষেপণ চলেছে। যুক্তরাষ্ট্র বরাবরই এমন একটি চুক্তির বিরোধিতা করে এসেছে। আগস্টে মার্কিন প্রতিরক্ষা দফতরের একজন কর্মকর্তা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছিলেন, রাশিয়ার কাছ থেকে এস-৪০০ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কিনলে নয়াদিল্লীকে ওয়াশিংটনের নিষেধাজ্ঞার মুখোমুখি হতে হবে। রাশিয়া যেন সহজেই বিশ্বের অস্ত্রের বাজারে জায়গা করে নিতে না পারে সে লক্ষ্যে বিশেষ আইনও করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এই আইন বলে রাশিয়ার কাছ থেকে যেসব দেশ অস্ত্র কিনবে তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে। এই আইনের মাধ্যমেই চীনের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। রাশিয়ার কাছ থেকে সুখোই বিমান কেনার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের বিরাগভাজন হয় বেজিং। ভারত অবশ্য বরাবরই মার্কিন হুঁশিয়ারি অগ্রাহ্য করে রুশ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কিনতে অনড় ছিল। নিষেধাজ্ঞা এড়াতে গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে বিশেষ ছাড় আবেদন করে ভারত। অন্যদিকে এ নিয়ে ভারতের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলে জানিয়েছিল মস্কো। দীর্ঘদিন এই নিয়ে উভয় পক্ষই যথেষ্ট সময় ক্ষেপণ করে। ২০০৭ সাল থেকে এ নিয়ে রাশিয়া ও ভারতের মধ্যে আলোচনা শুরু হয়েছিল। এই ব্যবস্থা ৪০০ কিলোমিটার দূরত্ব পর্যন্ত শত্রুর ক্ষেপণাস্ত্রকে চিহ্নিত এবং একইসঙ্গে ৪৮টি শত্রুপক্ষের ক্ষেপণাস্ত্রকে ধ্বংস করে দিতে পারে। অত্যাধুনিক যেসব যুদ্ধবিমানকে রাডারে ধরা যায় না, তাদেরও চিহ্নিত করতে পারে এই রুশ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। এটি হাতে এলে ভারতে নিশ্চিতভাবেই প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে কয়েক ধাপ এগিয়ে যাবে। এস-৪০০ রাশিয়ার তৈরি অত্যাধুনিক ক্ষেপণাস্ত্র বা আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। এটি মূলত রাশিয়ার এস-৩০০ ক্ষেপণাস্ত্রের উন্নত সংস্করণ। এর নক্সা করেছেন আলমাজ-এ্যান্টে। আর এটি উৎপাদন করছে ফাকেল মেশিন-বিল্ডিং ডিজাইন ব্যুরো। সর্বাধুনিক প্রযুক্তির এই ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা তিন ধরনের ক্ষেপণাস্ত্রে আঘাত হানতে সক্ষম। এর একটা ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থায় ৮টি স্তর রয়েছে। ৭২টি লাঞ্চারকে এক সঙ্গে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে এই সিস্টেম। ৩৮৪টি মিসাইলকেও একসঙ্গে নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা রয়েছে এই ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থার। বহুমুখী আক্রমণ তথা নানা দিক থেকে আক্রমণ করা হলেও এর এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম তাকে রুখতে পারবে। এক সঙ্গে ৩০০টি টার্গেটের ওপর নজরদারি চালাতে পারবে। এর স্বয়ংক্রিয় মিসাইল ব্যাটারি একসঙ্গে ৩৬টি ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়তে পারে। ৪০০ কিলোমিটার পাল্লার এই ক্ষেপণাস্ত্রগুলো লক্ষ্যভেদেও ব্যাপক কার্যকর। শুধু ক্ষেপণাস্ত্র নয় আকাশপথে ধেয়ে আসা যে কোন আক্রমণই রুখে দিতে পারবে এস-৪০০।
×