ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সাদাফ আমিন

আক্রান্ত শিক্ষার্থী

প্রকাশিত: ০৪:৪৬, ৪ অক্টোবর ২০১৮

আক্রান্ত শিক্ষার্থী

সাম্প্রতিক সময়ে মশা ও ডেঙ্গুজ্বর নিয়ে যত আতঙ্ক যেন তা থেকে পরিত্রাণ পাওয়া অসম্ভব। পরিচিত এক অভিভাবক মা ফেসবুকে তার আইডিতে পোস্ট করেন- ঈদের পর যথারীতি চালু হলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। আমার ছেলে ক্লাস শেষে বাসায় ফিরে বলল, ‘মশায় কামড়াইয়া শেষ করছে। ক্যাম্পাসে সব মশা।’ শুনে আমি ভয়ে বাঁচি না। ছেলের কয়েকজন বন্ধুর ডেঙ্গু হয়েছে। ঢাকা শহরে এখন ডেঙ্গু মহামারী আকার ধারণ করেছে। আমরা ঘর পরিষ্কার করি। বাইরে পরিষ্কার করবে কে? পাশের বাড়ি পরিষ্কার করবে কে? সম্মিলিত প্রয়াস ছাড়া এই বিপদের পরিত্রাণ নেই। স্কুল, কলেজ, অফিস বা বাইরে যেখানেই যাওয়া হোক না কেন, দয়া করে মোজা পরুন। লম্বা হাতা শার্ট পরুন। প্রত্যেকে যার যার ঘর বা এলাকা পরিষ্কার করুন। হলে থাকার সুবাদে ক্যাম্পাসের অবস্থা খুব ভালভাবে প্রত্যক্ষ করতে পারছি। সমস্যাটা হয় যারা হলে থাকে এবং জ্বরে আক্রান্ত হয়, তাদের বাসা ঢাকার বাইরে বা দূরে হওয়ায় খুব কষ্টে থাকে। প্রথম বর্ষের ছেলেরা গণরুমে থাকে তাদের অবস্থা আরও শোচনীয়। রুমমেটরা সবাই ক্লাসে কিংবা পরীক্ষা দিতে চলে যায় কিন্তু কেউ একজন হয়ত তীব্র জ্বরে আক্রান্ত হয়ে বিছানায় পড়ে আছে, ক্যান্টিনেও যেতে পারছে না, এ রকম শিক্ষার্থীও আছে যার ভাত খাওয়ার রুচি নেই, ফলমূল কিনে আনার শারীরিক কিংবা আর্থিক সামর্থ্য নেই। এই লেখাটি যখন লিখছি খবর পেলাম বাংলা বিভাগে পড়ুয়া সহপাঠী বান্ধবী নীলম বিশ্বাস ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত, তাকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মেডিক্যাল সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। অথচ দুঃখজনক খবর এই যে চিকুনগুনিয়া কিংবা ডেঙ্গু পরীক্ষার জন্য অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ঢাবি মেডিক্যাল সেন্টারে এখনও নেই, এদিকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের উপর নির্ভরশীলতা বেড়ে চলছে যা ঢাবির শিক্ষার্থীদের জন্য দুঃখজনক। যদিও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন স্বায়ত্তশাসিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মশকনিধন কর্মসূচী চালাচ্ছে তবুও ডেঙ্গুর প্রকোপ ছড়িয়ে পড়ছে পুরো ক্যাম্পাস। যখন ঢাবিরই এই অবস্থা, দেশের অন্যান্য স্থানে কি অবস্থা তা একবার ভাবুন, এই যে বস্তি এলাকা কিংবা পথশিশু-পথমানুষ যারা অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ বা নর্দমার পাশে পথে ঘুমায় এদের অবস্থা অত্যন্ত ভয়াবহ যা প্রশাসন কিংবা কর্তৃপক্ষের কল্পনাতীত। ডেঙ্গুজ্বর, মশার উৎপাত এ নিয়ে পত্রপত্রিকায়, টেলি-মিডিয়ায়, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচুর লেখালেখি হচ্ছে কিন্তু সে হারে উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে না, নেয়া হলেও তা আলোর মুখ দেখছে না। কেবল ঢাবি নয় পুরো দেশে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক, মানুষের সচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি আক্রান্ত রোগীর সংখ্যাও বৃদ্ধি পাচ্ছে, কিন্তু কেন? যারা আক্রান্ত হচ্ছে তাদের জন্য আদৌ কি কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে? এই যে ক্যাম্পাস কিংবা ক্যাম্পাসের বাইরে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ছে, মানুষজন ও শিক্ষার্থীরা জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছে, এর দায়ভার কে নেবে? যারা দায়ভার নেবে তারা কোথায় কি অবস্থায় আছে? ভাবার সময় হয়েছে প্রশাসনের জন্য আমরা নাকি আমাদের জন্য প্রশাসন? বিজয় একাত্তর হল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে
×