উত্তর কোরিয়ার হাতে ২০ থেকে ৬০টি পরমাণু অস্ত্র থাকতে পারে, দক্ষিণ কোরিয়ার একজন মন্ত্রী সোমবার পার্লামেন্টে এ কথা বলেছেন। উত্তর কোরিয়ার পরমাণু অস্ত্রের পরিমাণ সম্পর্কে দক্ষিণ কোরিয়া সরকার এই প্রথম কোন মন্তব্য করল। টাইমস অব ইন্ডিয়া।
দক্ষিণ কোরিয়ার একত্রীকরণ মন্ত্রী চো মিউং জিউন একজন এমপির প্রশ্নে উত্তরে সোমবার পার্লামেন্টে বলেন, উত্তর কোরিয়ার হাতে ২০ থেকে ৬০টি পরমাণু অস্ত্র থাকতে পারে। দক্ষিণ কোরিয়ার গোয়েন্দা সূত্রের বরাত দিয়ে তিনি এ কথা বলেন। দক্ষিণ কোরিয়ার প্রধান গোয়েন্দা সংস্থা ন্যাশনাল ইন্টেলিজেন্স সার্ভিস এ বিষয়ে তাৎক্ষণিক কোন মন্তব্য করেনি। চো সম্ভবত অনিচ্ছাকৃতভাবে এ তথ্য প্রকাশ করে থাকবেন। তার মন্ত্রণালয় মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে বলে যে, চো’র মন্তব্যের অর্র্থ এই নয় যে দক্ষিণ কোরিয়া পরমাণু শক্তিধর হিসেবে উত্তর কোরিয়াকে মেনে নেবে। এতে আরও বলা হয়, উত্তর কোরিয়াকে পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ করতে সিউলের কূটনৈতিক প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে। উত্তর কোরিয়ার পরমাণু অস্ত্র সম্পর্কিত চো’র অনুমান এ সম্পর্কে বিভিন্ন সময়ে ব্যক্তি বিশেষের দেয়া আনুমানিক পরিসংখ্যানের সঙ্গে খুব বেশি তফাত নেই। এর আগে প্রকাশিত দক্ষিণ কোরিয়া সরকারী ভাষ্যে বলা হয়েছে যে, উত্তর কোরিয়ার কাছে অস্ত্রে পরিণত করা যায় এ রকম প্রায় ৫০ কেজি (১১০ পাউন্ড) প্লুটেনিয়াম রয়েছে, যা দিয়ে আটটি পরমাণু বোমা বানানো সম্ভব। এছাড়া উত্তর কোরিয়ার কাছে ২৫০ থেকে ৫০০ কেজি উচ্চ মাত্রায় সমৃদ্ধকৃত ইউরোনিয়াম আছে বলে মনে করেন স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটির গবেষকরা, যাদের মধ্যে পরমাণু বিশেষজ্ঞ সিগফ্রিড হেকারও রয়েছেন। হেকার ২০১০ সালে উত্তর কোরিয়ার ইয়ংবিয়নে অবস্থিত একটি পরমাণু স্থাপনা পরিদর্শন করেছেন। পরমাণু নিরস্ত্রীকরণের বিষয়ে উত্তর কোরিয়া চলতি বছর যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছে। নিরস্ত্রীকরণের জন্য পিয়ংইয়ং আসলেই আন্তরিক কি না তা নিয়ে কূটনৈতিক পর্যায়ে অবশ্য সংশয় আছে। মার্র্কিন পররাষ্ট্র্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও চলতি মাসে দেশটি সফরে যাবেন বলে কথা রয়েছে। উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনের সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দ্বিতীয় বৈঠকের প্রস্তুতি সম্পন্ন করাই তার এ সফরের প্রধান উদ্দেশ্য বলে জানা গেছে। এ দিকে উত্তর কোরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী রি ইওং-হো গত সপ্তাহে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের বার্ষিক অধিবেশনে বলেছেন, তার দেশের ওপর মার্র্কিন নিষেধাজ্ঞা অব্যাহত থাকলে তারা কিছুতেই পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ করবে না। নিষেধাজ্ঞার দু’দেশের মধ্যে অনাস্থা গভীর হচ্ছে। তবে ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, পরমাণু অস্ত্র ধ্বংস না করা পর্যন্ত উত্তর কোরিয়ার ওপর তাদের নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকবে। উত্তর কোরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এ বক্তব্যের একদিন পর ট্রাম্প উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনের সঙ্গে তার সম্পর্কের ওপর নতুন করে আলোকপাত করে। ট্রাম্প এমন কথাও বলেন যে, তিনি উনের প্রেমে মজেছেন। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে উত্তর কোরিয়ার যুদ্ধ লেগে যাওয়ার মতো অবস্থা হয়েছিল। তার কূটনৈতিক প্রচেষ্টার কারণে সেটা এড়ানো সম্ভব হয়েছে। তিনি এ ও দাবি করেন যে উত্তর কোরিয়া এখন তাদের পরমাণু ও ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা বন্ধ করে দিয়েছে।