ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

এশিয়া কাপ খেলতে আজ দুবাই যাচ্ছেন মাশরাফিরা

প্রকাশিত: ০৭:০২, ৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮

এশিয়া কাপ খেলতে আজ দুবাই যাচ্ছেন মাশরাফিরা

মিথুন আশরাফ ॥ দেখতে দেখতে সময় এসে পড়ল। এশিয়া কাপ মিশনে নামার সময় যেন হয়ে গেল। আজ দুবাই যাত্রাও হয়ে যাবে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় এমিরেটস এয়ারলাইন্স যোগে উড়াল দেবেন মাশরাফিরা। সেই যাত্রায় সাকিব আল হাসান না থাকলেও দলের বাকি সব সদস্যই থাকছেন। মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লীগ (সিপিএল) খেলে দেশে ফিরে দলের সঙ্গেই আজ দুবাই যাবেন। দুবাই গিয়ে পাঁচদিন কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নেয়ার চেষ্টাই চলবে। সেই সঙ্গে উইকেট বুঝে ওঠার কাজও হবে। শেষদিকে নিজেদের পুরোদমে ঝালাই করে নেয়াও হবে। যুক্তরাষ্ট্র থেকে সাকিব দলের সঙ্গে যোগ দেবেন। এশিয়া কাপের উদ্দেশ্যে দেশের মাটিতে সাকিব দলের সঙ্গে অনুশীলন করেননি। তবে দুবাইয়ে দলের সঙ্গে অনুশীলন করবেন। সেই সঙ্গে ১৫ সেপ্টেম্বর টুর্নামেন্ট শুরুর আগে আঙ্গুলে চোট পাওয়া নাজমুল হোসেন শান্তরও অনুশীলনে যোগ দেয়ার আশা রয়েছে। তবে আঙ্গুলে চোট পাওয়া আরেক ক্রিকেটার তামিম ইকবাল আদৌ টুর্নামেন্ট শুরুর আগে অনুশীলনে যোগ দিতে পারবেন কিনা তা এখনও নিশ্চিত নয়। তা সময় গড়ানোর সঙ্গেই বোঝা যাবে। বাংলাদেশ দল এখন ‘চোটাক্রান্ত’ দলে পরিণত হয়ে গেছে। তাতে কঠিন পরিস্থিতির মধ্যেও পড়ে গেছে। পাকিস্তান সুপার লীগের (পিএসএল) সুবাদে সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহীম ও মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ সংযুক্ত আরব আমিরাতের মাঠগুলোতে খেলেছেন। দাপিয়ে বেড়িয়েছেন। বাকিদের মধ্যে অনুর্ধ-১৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপের সুবাদে মুস্তাফিজুর রহমান, লিটন কুমার দাস, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত, মেহেদী হাসান মিরাজ, আবু হায়দার রনি, নাজমুল হোসেন শান্তরও সংযুক্ত আরব আমিরাতে খেলার অভিজ্ঞতা আছে। এ ক্রিকেটারদের সংযুক্ত আরব আমিরাতের মাঠগুলোতে খেলার টাটকা অভিজ্ঞতাই আছে বলা চলে। এশিয়া কাপের উদ্দেশ্যে শেষ পর্যন্ত ঘোষিত চূড়ান্ত ১৬ সদস্যের দলে থাকাদের মধ্যে মাশরাফি বিন মর্তুজা (অধিনায়ক), মোহাম্মদ মিঠুন, আরিফুল হক, নাজমুল ইসলাম অপু, রুবেল হোসেন, মুমিনুল হকেরই সংযুক্ত আরব আমিরাতে কোন টুর্নামেন্টের হয়ে খেলার অভিজ্ঞতা নেই। যারা পিএসএল খেলেছেন তারা দুবাইয়ে খেলার অভিজ্ঞতা পেয়েছেন। যারা সংযুক্ত আরব আমিরাতে হওয়া অনুর্ধ-১৯ বিশ্বকাপ খেলেছেন তারাও আবুধাবিতে খেলার অভিজ্ঞতা কুড়িয়ে নিয়েছেন। এশিয়া কাপে গ্রুপপর্বে বাংলাদেশের খেলা দুই ভেন্যুতেই আছে। ১৫ সেপ্টেম্বর টুর্নামেন্ট শুরুর দিনই শ্রীলঙ্কার মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে হবে ম্যাচটি। এরপর ২০ সেপ্টেম্বর আবুধাবির শেখ জায়েদ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আফগানিস্তানের বিপক্ষে লড়াই করবে বাংলাদেশ। এ জন্য দুবাইয়ে আগে যাবে বাংলাদেশ দল। সংযুক্ত আরব আমিরাতের মাটিতে বহু বছর আগে খেলে বাংলাদেশ দল। সর্বশেষ ১৯৯৫ সালের এপ্রিলে খেলে। এশিয়া কাপে খেলে তিন ম্যাচ। সর্বপ্রথম খেলে ১৯৯০ সালের এপ্রিলে। অস্ট্রেলেশিয়া কাপে খেলে। এশিয়া কাপে ভারত, শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তানের সঙ্গে লড়াই করে। আর অস্ট্রেলেশিয়া কাপে ‘এ’ গ্রুপে থেকে অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে খেলে বাংলাদেশ। সবগুলো ম্যাচ হয় শারজাহতে। সবকটি ম্যাচেই হারে বাংলাদেশ। ২৩ বছর পর আবার সংযুক্ত আরব আমিরাতের মাটিতে ওয়ানডে খেলতে নামবে বাংলাদেশ। সেটি আবার এশিয়া কাপ দিয়েই। সেই সময়ের বাংলাদেশ দল আর এই সময়ের বাংলাদেশ দলের মধ্যে অনেক পার্থক্য। এই সময়ের বাংলাদেশ দল ওয়ানডেতে যে কোন দলকে হারাতে পারে। যে কোন দলের জন্যই শক্ত প্রতিপক্ষ বাংলাদেশ। ভেন্যু যেটিই হোক। ওয়ানডেতে বাংলাদেশকে সহজেই হারিয়ে দেয়ার কল্পনাও এখন কোন দল করতে পারে না। উল্টো হারতে পারে, সেই আতঙ্কেই থাকে। তাইতো বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা বলেছেন, ‘আসলে আমরা কতটুকু প্রস্তুত আছি টুর্নামেন্টটা জেতার জন্য, আপনারা অনেকে টুর্নামেন্ট জেতার কথা বলছেন। আমি আবার এই টাইপ না, আমি এই ধরনের কথা বলতে চাই না। আমি মনে করি আমাদের সামর্থ্য আছে। বাকি দলগুলোর সঙ্গে যদি তুলনা করেন, কন্ডিশন, উইকেট ও কিছু টুকটাক ব্যাপার থাকে, রিস্ট স্পিনাররা কেমন ফর্মে আছে; সবকিছু মিলিয়ে আমাদের থেকে বেটার টিম আছে এই টুর্নামেন্টে। তবে বাকি দলের সঙ্গে খুব বেশি পার্থক্য আছে বলে মনে হয় না। সেই পার্থক্যটা আমরা ভাল ক্রিকেট খেলে পূরণ করতে পারি। আমার কাছে সবকিছুই সম্ভব মনে হয়। সবকিছুর আগে নির্ভর করছে আমরা প্রথম ম্যাচটা (শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে) ভাল খেলে জিততে পারি কিনা।’ সঙ্গে ভেন্যু, কন্ডিশন যে কোন সমস্যা নয়, তা বোঝাতে গিয়ে জানান, ‘অস্ট্রেলিয়ায় যখন ২০১৫ বিশ্বকাপে কোয়ার্টার ফাইনাল খেলি, তার আগে কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে আমাদের স্মৃতি খুব ভাল ছিল না। সেটাই বললাম, যদি মাঠ বা আউটফিল্ড আমাদের পক্ষে না থাকে তাহলে পারফর্ম করতে পারব না, সেই বিশ্বাস নিয়ে যাওয়া ঠিক হবে না। আমাদের মনে হয় আমাদের সামর্থ্য আছে।’ এই সামর্থ্য নিয়েই আজ দুবাই যাচ্ছে বাংলাদেশ দল। সাকিব, শান্ত, তামিমের আঙ্গুলে চোট রয়েছে। সেই চোটের বিষয়গুলো দলে প্রভাব ফেলাটাই স্বাভাবিক। তবে সবকিছুকে জয় করে এখন বাংলাদেশ দল এশিয়া কাপে ভাল করুক সেই আশাই সবার আছে। এশিয়া কাপের সূচী গ্রুপ ‘এ’ ভারত, পাকিস্তান, হংকং গ্রুপ ‘বি’ বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, আফগানিস্তান গ্রুপপর্ব তারিখ প্রতিপক্ষ ভেন্যু ১৫ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ বনাম শ্রীলঙ্কা দুবাই ১৬ সেপ্টেম্বর পাকিস্তান বনাম হংকং দুবাই ১৭ সেপ্টেম্বর শ্রীলঙ্কা বনাম আফগানিস্তান আবুধাবি ১৮ সেপ্টেম্বর ভারত বনাম হংকং দুবাই ১৯ সেপ্টেম্বর ভারত বনাম পাকিস্তান দুবাই ২০ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ বনাম আফগানিস্তান আবুধাবি সুপারফোর ২১ সেপ্টেম্বর গ্রুপ ‘এ’ চ্যাম্পিয়ন-গ্রুপ ‘বি’ রানার্সআপ দুবাই ২১ সেপ্টেম্বর গ্রুপ ‘বি’ চ্যাম্পিয়ন-গ্রুপ ‘এ’ রানার্সআপ আবুধাবি ২৩ সেপ্টেম্বর গ্রুপ ‘এ’ চ্যাম্পিয়ন-গ্রুপ ‘এ’ রানার্সআপ দুবাই ২৩ সেপ্টেম্বর গ্রুপ ‘বি’ চ্যাম্পিয়ন-গ্রুপ ‘বি’ রানার্সআপ আবুধাবি ২৫ সেপ্টেম্বর গ্রুপ ‘এ’ চ্যাম্পিয়ন-গ্রুপ ‘বি’ চ্যাম্পিয়ন দুবাই ২৬ সেপ্টেম্বর গ্রুপ ‘এ’ রানার্সআপ-গ্রুপ ‘বি’ রানার্সআপ আবুধাবি ফাইনাল ২৮ সেপ্টেম্বর সুপারফোর চ্যাম্পিয়ন-রানার্সআপ দুবাই * সব খেলা বাংলাদেশ সময় বিকেল ৫.৩০ মিনিটে শুরু
×