ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ইউক্রেনকে অস্ত্র দেবে যুক্তরাষ্ট্র

প্রকাশিত: ০৩:৫৬, ২ সেপ্টেম্বর ২০১৮

ইউক্রেনকে অস্ত্র দেবে যুক্তরাষ্ট্র

ইউক্রেনের নৌ ও বিমান প্রতিরক্ষা জোরদার করতে যুক্তরাষ্ট্র দেশটি অস্ত্র পাঠাতে তৈরি আছে। ইউক্রেনে নিযুক্ত মার্কিন বিশেষ দূত এ কথা বলেছেন। ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় বিচ্ছিন্নতাবাদীদের প্রতি রাশিয়া সাহায্য-সহযোগিতা অব্যাহত রাখায় তিনি এ মন্তব্য করেন। গার্ডিয়ান। গার্ডিয়ানকে দেয়া সাক্ষাতকারে ইউক্রেনে নিযুক্ত মার্কিন বিশেষ দূত কূর্ট ভোলকার বলেন, ইউক্রেন যুদ্ধের চার বছর পরও সেখানে জাতিসংঘ রক্ষীকর্মীদের মোতায়েন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে স্পষ্ট মতভেদ আছে। ভোলকার এর আগে ন্যাটো জোটে মার্কিন রাষ্ট্রদূত ছিলেন। তিনি ধারণা করেন, রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন হয়ত আগামী বছর ইউক্রেনে প্রেসিডেন্ট ও পার্লামেন্ট নির্বাচনের জন্য অপেক্ষা করছেন। ওই নির্বাচনগুলোর পর তিনি ইউক্রেনের সঙ্গে সংলাপের কৌশল নতুন করে ঠিক করবেন। তবে তিনি মনে করেন সময় এখন পুতিনের অনুকূলে নয়। দেশটিতে রুশ বিরোধী পশ্চিমাপন্থী মনোভাব বাড়ছে। ভোলকার বলেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রশাসন ইউক্রেন নতুন সমরাস্ত্র পাঠাতে তৈরি আছে। এ বছর এপ্রিলে যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে যে এ্যান্টি ট্যাঙ্ক মিসাইল দিয়েছিল এগুলো তার অতিরিক্ত হবে। ভোলকার বলেন, দেশ রক্ষা করতে যেয়ে প্রতিমাসেই ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী কিছু সৈন্য নিহত হচ্ছে। তার মতে, এমন পরিস্থিতিতে যেকোন দেশই নিজেদের সামরিক বাহিনীকে শক্তিশালী করার চেষ্টা করবে, এক্ষেত্রে খুব স্বাভাবিকভাবেই অন্যদেশের সহযোগিতা চাইতে পারে। সঙ্গত কারণেই তাদের প্রয়োজন মারণাস্ত্র। কারণ তারা সরাসরি আক্রমণের শিকার হচ্ছে। ২০১৪ সালে রাশিয়া ক্রিমিয়া দখল করে নেয়ার পর থেকে ইউক্রেনকে যে সামরিক সহায়তা দিয়ে আসছে যুক্তরাষ্ট্র তা ১০০ কোটি ডলার ছাড়িয়ে গেছে। জুলাইতে মার্কিন প্রতিরক্ষা দফতর জানায়, তারা ইউক্রেনকে ২০ কোটি ডলার সামরিক সহায়তা দেবে, যাতে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটি সামরিক বাহিনীকে সংহত করতে পারে। পেন্টাগন তখন বলেছিল, প্রাণঘাতী নয় ইউক্রেনকে এমন সামরিক সহায়তা দেয়ার জন্য তারা অর্থ ব্যয় করতে যাচ্ছে। ইউক্রেনকে চলমান প্রশিক্ষণ, সক্ষমতা বৃদ্ধি, পরিস্থিতি সম্পর্কে আরও সজাগ থাকার প্রকল্প, যোগাযোগ ব্যবস্থাকে নিরাপদ রাখা, সেনাবাহিনীর মোতায়েন দ্রুততর করার বিষয়টি নিশ্চিত করা, নাইট ভিশন চশমার ব্যবহার এবং সামরিক চিকিৎসা সহায়তার জন্য খরচ করা হবে। কিন্তু ভোলকার এখন বলছেন, যুক্তরাষ্ট্র প্রাণঘাতী অস্ত্র দিয়ে সহায়তা করার জন্য তৈরি আছে। ইউক্রেন যেন সার্বভৌমত্ব ও ভূখ-গত অখ-তা রক্ষায় এবং আগ্রাসন ঠেকাতে দেশটিতে দীর্ঘমেয়াদী প্রতিরক্ষা সহযোগিতা পরিকল্পনার আওতায় যুক্তরাষ্ট্র দেশটিকে নিয়মিত সহায়তা দিয়ে এসেছে।’ এ সহযোগিতা মূলত প্রতিরক্ষামূলক। গত মাসে ড্রোন থেকে পাওয়া ছবিতে দেখা গেছে, রাশিয়া ডোনবাস অঞ্চলের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের নিয়মিত অস্ত্র সহায়তা দিয়ে এসেছে। অর্গানাইজেশন ফর সিকিউরিটি এ্যান্ড কো-অপারেশন ইন ইউরোপের (ওএসসিই) প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, রাশিয়া রাতের অন্ধকারে বিচ্ছিন্নতাবাদী গ্রুপগুলোকে এই সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে। ২০১৪ সালে রাশিয়া ইউক্রেনের ক্রিমিয়া উপদ্বীপ দখল করে নেয়। দেশটির পূর্বাঞ্চলে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের হাতে অস্ত্র রাশিয়া তুলে দিচ্ছে বলেও অভিযুক্ত হয়েছিল। পূর্বাঞ্চলের দোনেস্ক ও লুহানস্ক অঞ্চলে বিদ্যমান সংঘর্ষে কমপক্ষে ১০ হাজার মানুষ প্রাণ হারায়। সেখানে সৈন্য পাঠানো এবং বিচ্ছিন্নতাবাদীদের অস্ত্র সহায়তা দেয়ার অভিযোগ মস্কো বারবার অস্বীকার করে এলেও বিদ্রোহীদের জন্য স্বেচ্ছাসেবকের ভূমিকা গ্রহণ করার কথা তারা স্বীকার করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের ধারণা ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে এখনও অন্তত ২০ হাজার রুশ সৈন্য অবস্থান করছে।
×