ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

সুজন সম্পাদকের প্রতিবাদ ও প্রতিবেদকের বক্তব্য

প্রকাশিত: ০৫:১৯, ১৯ আগস্ট ২০১৮

 সুজন সম্পাদকের প্রতিবাদ ও প্রতিবেদকের বক্তব্য

সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার ১৮ আগস্ট এক প্রতিবাদ লিপিতে বলেন, গত ১২ আগস্ট ২০১৮ তারিখে দৈনিক জনকণ্ঠের প্রথম পাতায় আমাকে জড়িয়ে শংকর কুমার দে লিখিত ‘মোহাম্মদপুর ষড়যন্ত্র’ ব্যর্থ হলেও থেমে নেই সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্র শিরোনামে ছাপা প্রতিবেদনটি সম্পূর্ণ কল্পনাপ্রসূত, বানোয়াট ও উদেশ্যপ্রণোদিত এবং সাংবাদিকতার নীতি-নৈতিকতা বিবর্জিত। গোয়েন্দা সংস্থার বরাত দিয়ে বৈঠকটির সম্পর্কে প্রতিবেদনের বিস্তারিত বিবরণের কথা উল্লেখ করা হয়। প্রতিবাদ লিপির এক জায়গায় বলা হয়, নৈশভোজের অনুষ্ঠানটি ছিল নিন্তাই একটি পারিবারিক অনুষ্ঠান এবং নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের তিন সপ্তাহ আগে নির্ধারিত। তাই ষড়যন্ত্রের মনগড়া গল্প ফাঁদার অবকাশ নেই। প্রতিবেদকের এ অপচেষ্টার মাধ্যমে আমার সুনাম ক্ষুণ্ণই হয়নি, একই সঙ্গে এর মাধ্যমে সাংবাদিকতা পেশায় এক নতুন কলঙ্ক সংযোজিত হয়েছে। বস্তুত এর মাধ্যমে নৈতিকতা, বস্তুনিষ্ঠতা এবং সত্যবাদিতার মৌলিক মূল্যবোধকেই বিসর্জন দেয়া হয়েছে। আমি এই বানোয়াট প্রতিবেদনটির তীব্র প্রতিবাদ জানাই। প্রতিবেদকের বক্তব্য ॥ সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে বিষোদগার করে প্রায়শ যে ধরনের বক্তব্য রাখতে অভ্যস্ত সেইভাবেই তার বাসায় যে সেই দিন বৈঠকের খবর পাওয়ার পর বিক্ষুব্ধ জনতা যে হামলা চালায়, ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে সেই ঘটনাগুলো প্রতিবেদনে প্রকাশ করা হলেও তিনি এই সত্যকে বেমালুম চেপে গিয়ে প্রতিবাদ লিপিতে উল্লেখ করেননি। রাজধানীতে সুধী সমাজের ব্যক্তিদের বাড়িতেই অসংখ্য নৈশভোজের আয়োজন করা হলেও কিন্তু হামলা, ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেনি। সুজন সম্পাদকের বাড়িতে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের ও ড. কামাল হোসেনের মতো খ্যাতনামা আইনজীবীর নৈশভোজের অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে যারা হামলা করেছে তারাই ষড়যন্ত্র, সরকার উৎখাতের তৃতীয় পক্ষের হাত দেখেছে। প্রতিবেদনে সেই কথাই উল্লেখ করা হয়েছে। সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদারের বাসায় বৈঠককে ষড়যন্ত্র হিসেবে অভিহিত করেছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও ১৪ দলীয় নেতৃবৃন্দ। আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ধানম-ির রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতাদের সঙ্গে এক বৈঠকে এই ধরনের মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। রাজধানীর তোপখানা রোডে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির কার্যালয়ে কেন্দ্রীয় ১৪ দলের বৈঠকে উপস্থিত নেতারা বলেন, উনি (মার্শা বার্নিকাট) সরকারের কোন সংস্থাকে কোনরকম নোটিফাই (নোটিস) ছাড়াই সেখানে যান। যেখানে শিক্ষার্থীদের নিরাপদ সড়কের আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ঢাকা শহরে একটা উত্তপ্ত পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এরকম উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে উনি ওই বৈঠকে গেলেন কেন? আর যারা নৈশভোজের আয়োজক তারাও কেন সরকারের কোন সংস্থাকে ইনফর্ম করল না? এই ঘটনার দায় কে নেবে?’ ১৪ দল নেতাদের প্রশ্ন বার্নিকাট প্রভাবশালী রাষ্ট্রের একজন রাষ্ট্রদূত। উনি তো সংশ্লিষ্ট থানায় ইনফর্ম করে যেতে পারতেন। কেন উনি এভাবে প্রটোকল ভেঙ্গে গেলেন? বাংলাদেশ সরকার তার চলাচলের ওপর তো কোন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেনি? তাহলে এত লুকোচুরি কেন? এই গোপনীয়তাই প্রমাণ করে বৈঠকটি সরকারবিরোধী ষড়যন্ত্রেরই একটি অংশ ছিল? এ বিষয়ে বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে ১৪ দলের মুখপাত্র মোহাম্মদ নাসিম সরকারবিরোধী ষড়যন্ত্রের কথা উল্লেখ করে বলেছেন, ‘চক্রান্ত চলছে, চক্রান্ত আরও গভীর হবে।’ তারা চক্রান্তে ব্যর্থ হয়েছে কিন্তু তারা আবারও চক্রান্ত করতে পারে সে জন্য দেশবাসীসহ সকল গণতান্ত্রিক শক্তির দলকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান। সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদারের বাসায় বৈঠকের পর রাজনৈতিক দল ও নেতৃবৃন্দ যেসব প্রতিক্রিয়া ও বক্তব্য দিয়েছেন তা সংবাদপত্রেই ছাপা হয়েছে। অথচ গোয়েন্দা সংস্থার বরাত দিয়ে দৈনিক জনকণ্ঠে প্রকাশিত সংবাদপত্রের সর্বজনস্বীকৃত পন্থায় লেখা প্রতিবেদনটিকে যে ভাষায় আক্রমণ করা হয়েছে তাতে মনে হয় সংবাদপত্র, সাংবাদিকতা তিনি ছাড়া আর কেউই বুঝে না, জানে না।
×