ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সাম্প্রদায়িক শক্তিকে প্রতিহত করব ॥ কাদের

প্রকাশিত: ০৫:৫৯, ১৬ আগস্ট ২০১৮

শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সাম্প্রদায়িক শক্তিকে প্রতিহত করব ॥ কাদের

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, দেশের জনগণকে সঙ্গে নিয়ে সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে প্রতিহত করা হবে। আমরা শঙ্কার মধ্যেই এগিয়ে যাব। মৃত্যুর মিছিলে দাঁড়িয়ে আমরা জীবনের জয়গান গাই, ধ্বংসস্তূপের ওপর দাঁড়িয়ে আমরা সৃষ্টির পতাকা উড়াই। আর এটাই হলো আওয়ামী লীগের ইতিহাস। বুধবার ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৩তম শাহাদাতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে রাজধানীর ধানম-িস্থ ৩২ নম্বর সড়কে বঙ্গবন্ধু ভবনের সামনে রক্ষিত বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা শেষে সাংবাদিকদের কাছে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে তিনি এ কথা বলেন। ওবায়দুল কাদের বলেন, জাতীয় শোক দিবসে আমাদের শপথ হবে, বঙ্গবন্ধুর কন্যা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে যে কোন অপশক্তি বিশেষ করে সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে দেশের জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আমরা প্রতিহত করব। আজ বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের মধ্যেই শুধু সীমিত থাকলে চলবে না। আমরা আজ বঙ্গবন্ধুর সততা ও সাহসের দৃষ্টান্ত যদি অনুসরণ করি তাহলেই বঙ্গবন্ধুর প্রতি যথাযথ শ্রদ্ধা নিবেদন করা হবে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বঙ্গবন্ধু আজ নেই। তাঁর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এখন জনগণের মুক্তির সংগ্রামের আপোসহীন কা-ারি। বঙ্গবন্ধুর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশের মানুষ ঐক্যবদ্ধ রয়েছে। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার ষড়যন্ত্র জানত জিয়া-মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন ॥ সমাজকল্যাণমন্ত্রী ও ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেছেন, বঙ্গবন্ধুর খুনীদের রক্ষা করতেই পরিকল্পিতভাবে ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করা হয়েছিল। সবকিছুই হয়েছে জিয়াউর রহমানের সরাসরি দিক-নির্দেশনায়। খুনীরা হত্যার আগে জিয়ার কাছে পরামর্শের জন্য গিয়েছিল, জিয়া তাদের গ্রেফতার তো করেইনি বরং তাদেরকে বলেছে তোমরা যা ভাল মনে কর করতে পার। জিয়ার এই গ্রীন সিগন্যাল পেয়েই খুনীরা ইতিহাসের নিকৃষ্টতর বর্বর হত্যাকা- ঘটিয়েছিল। বুধবার সকালে রাজধানীর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন এলাকায় ২১ নং ওয়ার্ড কর্তৃক আয়োজিত জাতীয় শোক দিবসের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখতে গিয়ে মন্ত্রী আরও বলেন, বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীরা আজও সক্রিয়। বঙ্গবন্ধুর হত্যার বিচার হলেও সেই ষড়যন্ত্রের কুশীলবদের স্বরূপ আজও উম্মোচিত হয়নি। এই দিনে আমাদের শপথ নিতে হবে, ষড়যন্ত্র প্রতিরোধ করে দেশকে গণতন্ত্র ও উন্নয়নের ধারায় এগিয়ে নিতে হবে। রমনা থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ মোকলেসুর রহমানের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ, কাউন্সিলর মুন্সী কামরুজ্জামান কাজল, কাউন্সিলর এ্যাডভোকেট আবদুল হামিদ খান, কাউন্সিলর ফরিদউদ্দিন আহমেদ রতন প্রমুখ। মুক্তিযুদ্ধের গভীরে যেতে হবে- সংস্কৃতিমন্ত্রী ॥ সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর বলেছেন, শুধু পুঁথিগত জ্ঞান দিয়ে মুক্তিযুদ্ধকে আবিষ্কার করা সম্ভব নয়। এর গভীরে প্রবেশ করতে হবে। তারুণ্যকে মুক্তিযুদ্ধকে আবিষ্কার করতে হবে। সুবিশাল ত্যাগ-তিতীক্ষা, আত্মদান, নিদারুণ নিপীড়ন, বঞ্চনা জড়িত রয়েছে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের সঙ্গে। এসব কাহিনী আমাদের নতুন প্রজন্মকে জানাতে হবে। সম্ভব হলে মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ পরিবারের সদস্যদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এনে তাঁদের ত্যাগ-তিতীক্ষা ও সংগ্রামের ইতিহাস ছাত্রছাত্রীদের শোনাতে হবে। মুক্তিযুদ্ধ এমন একটি অসাধারণ ঘটনা যেটি ভুলে গেলে চলবে না। বুধবার সকারে রাজধানীর ভিকারুন নিসা নূন স্কুল এ্যান্ড কলেজ মিলনায়তনে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। গবর্নিং বডির সভাপতি গোলাম আশরাফ তালুকদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন গবর্নিং বডির সদস্য মারুফ আহমেদ মনসুর, ড. ইউনুস আলী আকন্দ, আতাউর রহমান, ডাঃ মুহাম্মদ মজিবুর রহমান হাওলাদার, ড. মুহাম্মদ তাজুল ইসলাম, তিন্না খুরশিদ জাহান, ফারহানা খানম, মাহবুবুল হক মিঠু, মুশতারী সুলতানা, কলেজ শাখার কো-অর্ডিনেটর হাসিনা খানম, শিক্ষা কেকা রায় চৌধুরী, সৈয়দা তানজিমা ইমান, শিক্ষার্থী আনিকা হক অনন্যা প্রমুখ। বঙ্গবন্ধু প্রতিটি বাঙালীর হৃদয়ে-ঢাবি উপাচার্য ॥ জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র মিলনায়তনে আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে রাখতে গিয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ আখতারুজ্জামান বলেন, জীবিত মুজিবের চেয়েও মৃত মুজিব এখন অনেক বেশি শক্তিশালী। স্বাধীনতাবিরোধী কুচক্রী মহল জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করে ইতিহাস থেকে তাঁর নাম মুছে দিতে চেয়েছিল। তাদের সে ষড়যন্ত্র সকল হয়নি। শিশু-কিশোর-যুবকসহ সকল বয়সের মানুষের মাঝে আজ বঙ্গবন্ধুর জীবন-দর্শনের প্রভাব প্রবাহিত হচ্ছে। আলোচনা সভায় প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দীন, ঢাবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল, অফিসার্স এ্যাসোশিয়েশনের সভাপতি সৈয়দ আলী আকবর প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। সভা পরিচালনা করেন ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মোঃ এনামউজ্জামান। উপাচার্য আরও বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ইতিহাসের একটি ঘৃণ্য দিন। এই দিনে বঙ্গবন্ধুর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আসার কথা ছিল। তাঁকে সংবর্ধনা দেয়ার জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারে সাজ সাজ রব চলছিল। কিন্তু তাঁর আর বিশ্ববিদ্যালয়ে আসা হয়নি। এর আগেই ঘাতকদের নির্মম বুলেটে তাঁকে শাহাদাত বরণ করতে হয়। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি করা হয়, যাতে কেউ বঙ্গবন্ধুর নাম উচ্চারণ করতে না পারে। সেই অবস্থা থেকে বাংলাদেশ এখন পরিত্রাণ পেয়েছে। শিশুরা আজ বঙ্গবন্ধুর ছবি, ৭ মার্চের ভাষণের ছবি, তাঁর দৈনন্দিন জীবনের ছবি আঁকছে। গ্রামগঞ্জ, পাড়া, মহল্লা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তাঁকে নিয়ে আলোচনা চলছে। ভবিষ্যতেও এই ধারা অব্যাহত থাকবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
×