ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৫ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১

ব্রাজিলের দৃষ্টি এখন ২০২২ বিশ্বকাপে

প্রকাশিত: ০৬:৪১, ২৭ জুলাই ২০১৮

 ব্রাজিলের দৃষ্টি এখন ২০২২ বিশ্বকাপে

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ রাশিয়া বিশ্বকাপে সফল হতে না পারলেও কোচ পদে তিতেকে বহাল রেখেছে ব্রাজিলিয়ান ফুটবল ফেডারেশন (সিবিএফ)। ৫৭ বছর বয়সী সাবেক এই মিডফিল্ডার ২০২২ বিশ্বকাপ পর্যন্ত নেইমার, মার্সেলোদের দেখভালের দায়িত্ব পালন করবেন। বুধবার তিতে ও সিবিএফের মধ্যে এ বিষয়ে চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে। চুক্তি নবায়নের পর তিতে জানিয়েছেন, পরের বিশ্বকাপ জয়ের মতো যোগ্য একটা দল গড়ে তোলাই হবে তার প্রধান কাজ। চুক্তির বিষয়ে নিজস্ব ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে ব্রাজিলিয়ান ফুটবল ফেডারেশন (সিবিএফ) জানায়, তিতের সঙ্গে চুক্তি নবায়ন করেছে সিবিএফ। নতুন চুক্তির আওতায় ২০২২ সালের কাতার বিশ্বকাপ পর্যন্ত দলের প্রধান কোচের দায়িত্বে থাকবেন তিনি। ১৯৭৮ সালে ক্লডিও কটিনহোর পর এই প্রথম বিশ্বকাপে ব্যর্থতার পরও জাতীয় ফুটবল দলের কোচের সঙ্গে চুক্তি নবায়ন করলো সেলেসাওরা। কিছুদিন আগে শেষ হওয়া বিশ্বকাপে ব্রাজিল ছিল টপ ফেবারিট। কিন্তু কোয়ার্টার ফাইনালেই থেমে যায় পেলের দেশের পথচলা। বেলজিয়ামের কাছে অপ্রত্যাশিতভাবে ২-১ গোলে হারে ব্রাজিল। ২০০২ সালে সর্বশেষ বিশ্বকাপ জেতা দলটি টানা চার বিশ্বকাপে ব্যর্থ হয়েছে। এ কারণে ফুটবল পাগল দেশটি এখন থেকেই কাতার বিশ্বকাপ নিয়ে ভাবতে শুরু করেছে। নতুন দায়িত্বের পর তিতে বলেন, দলের মধ্যে ঐক্যবদ্ধ পরিবেশ এবং পেশাদরিত্ব বাড়ানোর শর্তে ফেডারেশন আমাদের দায়িত্ব দিয়েছে। এটি একটি দারুণ চ্যালেঞ্জ। এটা মোকাবেলার সুযোগ পেয়ে আমরা খুশি। এরই মধ্যে পরবর্তী ম্যাচের দিকে আমরা মনোনিবেশ করেছি। এখন তিতের প্রধান চ্যালেঞ্জ ২০১৯ কোপা আমেরিকার শিরোপা জয় করা। যেটি অনুষ্ঠিত হবে নিজ দেশ ব্রাজিলে। এর আগে একগুচ্ছ প্রীতি ম্যাচে অংশগ্রহণ দিয়ে বিশ্বকাপ পরবর্তী পুনর্বাসন কাজ শুরু করবে তারা। যার প্রথমটি অনুষ্ঠিত হবে আগামী ৭ সেপ্টেম্বর নিউজার্সিতে স্বাগতিক যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে। সিবিএফের নির্বাহী পরিচালক রোজেরিও ক্যাবোকলো বলেন, সাড়ে ছয় বছরের জন্য লা সেলেসাওয়ের কোচিং স্টাফের দায়িত্ব দিয়ে সিবিএফ একটি দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। আমরা বিশ্বাস করি, একটি সাবধানী পরিকল্পনার মাধ্যমে ব্রাজিল ফুটবল প্রত্যাশিত ফল লাভ করবে। ২০১৬ সালের জুনে দুঙ্গার জায়গায় দায়িত্ব পান তিতে। তার অধীনে ২৬টি ম্যাচের মধ্যে মাত্র দুটিতে হেরেছে ব্রাজিল। জিতেছে ২০টি ও ড্র হয়েছে চারটি। ২০১৮ বিশ্বকাপের বাছাইপর্বে তার অধীনে অপ্রতিরোধ্য ছিলেন নেইমাররা। অবশ্য এর আগে ২০০৬ জার্মানি বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে বিদায় নেয়ার পর বরখাস্ত হয়েছিলেন কোচ আলবার্তো পেরেইরা। ২০১০ দক্ষিণ আফ্রিকা বিশ্বকাপেও শেষ আট থেকে বিদায় নেয় তারা। সেবার হল্যান্ডের কাছে ২-১ গোলে হারের পর দুঙ্গা চাকরি হারান। আর ২০১৪ সালে বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে দেশের মাটিতে জার্মানির বিরুদ্ধে ৭-১ গোলে হারের পর লুই ফিলিপ সোলারি নিজেই সরে দাঁড়িয়েছিলেন। এবার ৪০ বছর পর এই ধারাবাহিকতার ব্যত্যয় ঘটেছে। বিশ্বকাপে সফল না হওয়ার পরও ব্রাজিলের কোচ পদে থেকে গেছেন তিতে। এদিকে বিশ্বকাপ ব্যর্থতার পর ব্রাজিলের সেরা তারকা নেইমারের জনপ্রিয়তায় অনেকটা ধস নেমেছে। নানা কারণে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পিএসজি তারকাকে নিয়ে সমালোচনাই হচ্ছে বেশি। অথচ বিশ্বকাপ শুরুর আগে মেসি-রোনাল্ডোর সঙ্গে উচ্চারিত হয়েছে নেইমারের নাম। কিন্তু বিশ্বকাপে প্রত্যাশিত পারফর্মেন্স প্রদর্শন করতে না পারার পাশাপাশি অযাচিত ডাইভ দেয়ার ঘটনায় তার ইমেজ অনেকটাই ক্ষুণœ হয়েছে। দু’দিন আগে ঘোষিত ফিফা সেরার দশজনের সংক্ষিপ্ত তালিকাতেও ঠাঁই হয়নি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নেইমারকে নিয়ে এমনিতেই অনেক আলোচনা-সমালোচনা হয়। বিশ্বকাপের পর এর নেতিবাচক প্রভাবটাই বেশি লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
×