ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

নারী ও শিশু নির্যাতন বিচারকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা

প্রকাশিত: ০৫:৪৮, ২৪ জুলাই ২০১৮

নারী ও শিশু নির্যাতন বিচারকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা

কোর্ট রিপোর্টার ॥ নারায়ণগঞ্জ জেলার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক (জেলা জজ পদমর্যাদা) মোঃ জুয়েল রানার বিরুদ্ধে ঢাকার আদালতে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করেছেন এক নারী। ওই ট্রাইব্যুনালের বিচারক শামসুন্নাহার অভিযোগের বিষয়ে বাদীর জবানবন্দী গ্রহণের পর ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিমকে (সিএমএম) বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। ঢাকার ৫ নম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে সোমবার মামলা করেন ঝালকাঠি জেলার নলছিটি থানার আমিরাবাদ নিবাসী ওই নারী। বাদীর আইনজীবী এ্যাডভোকেট রায়হান মোর্শেদ মামলা এবং বিচার বিভাগীয় তদন্তের বিষয়টি সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন। মামলার অভিযোগে বলা হয়, অভিযুক্ত বিচারক মোঃ জুয়েল রানা এর আগে ঢাকা জজ কোর্টে অতিরিক্ত জেলা জজ হিসেবে ২০১৫ সালে কর্মরত থাকাকালীন তার আদালতে একটি পারিবারিক রিভিশন মামলা বিচারাধীন ছিল। পরবর্তীতে বিচারক নিজেই বাদীকে ফোন করে সরকারী চাকরির প্রলোভন দিয়ে ওই আদালতে অস্থায়ী স্টেনোগ্রাফার হিসেবে চাকরি দেন। এরপর তিনি বাদীকে সরকারী চাকরির প্রস্তুতি নিতে ষাটলিপি শিখতে ভর্তি হওয়াসহ বিভিন্ন সৎ উপদেশ দিলে তিনি বাদীর বিশ^াস অর্জন করেন। পরবর্তীতে বাদী আদালতে নিয়োগ পরীক্ষা দিলেও সরকারী চাকরি না হওয়ায় তিনি একটি কোম্পানিতে চাকরি নিয়ে চলে যান। বাদী চলে গেলেও বিচারক জুয়েল রানা বাদীকে ফোন করে আসতে বলেন। না আসলে পারিবারিক মামলা আপীলে আসলে ক্ষতি করবেন বলে হুমকি দেন। বাদী বাধ্য হয়ে অফিসে আসেন এবং বিচারকের অধীনে কাজ করতে থাকেন। এরপর ২০১৫ সালের ৮ জুন বিচারক জুয়েল রানা বাদীকে তার স্ত্রীর সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেয়ার কথা বলে তার বাসায় নিয়ে যান এবং বাসায় কেউ না থাকার সুযোগে মাথায় রিভলবার ঠেকিয়ে জোর করে ৩ বার ধর্ষণ করেন। উক্ত ঘটনা সম্পর্কে বাদী কাউকে কিছু জানালে খুন করে ফেলবে বলে আসামি হুমকি দেন। এরপর বাদী ওই বাসা থেকে বের হয়ে ঢাকা মেডিক্যালে গিয়ে চিকিৎসা করান। পরবর্তীতে ২০১৫ সালের ৩ নবেম্বর বাদী অসুস্থ হলে তাকে বিয়ে করে আসামিকে চিকিৎসা করাতে বলেন। পরে আসামি ওই বছর ৮ নবেম্বর এক র‌্যাব কর্মকর্তাকে বাদীর বাসায় পাঠিয়ে ধর্ষণ সংক্রান্ত সমস্ত কাগজপত্রসহ বাদীকে আসামির কাছে নিয়ে আসেন। এরপর ২০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেটের মাধ্যমে খিলক্ষেত থানায় একটি মিথ্যা মামলার মাধ্যমে বাদীকে জেলে পাঠান। পরবর্তীতে বাদী জামিনে মুক্তি পেয়ে ধর্ষণের কাগজপত্রের ডুপ্লিকেট কপি তোলার চেষ্টা করলে আসামি ২০১৭ সালের ৩১ জুলাই অজ্ঞাত পরিচয় লোক দিয়ে বাদীকে তুলে আনেন এবং রমনা থানায় নিজে বাদী হয়ে বাদীর বিরুদ্ধে তথ্য-প্রযুক্তি আইনের একটি মামলা করেন। ওই মামলায় বাদী ২০১৮ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি কারাগার থেকে মুক্তি লাভ করেন।
×