ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

পুরোদেশের ওপর নিয়ন্ত্রণ নেই আফগান সরকারের

আফগানিস্তানে রণকৌশলে পরিবর্তন আনছে যুক্তরাষ্ট্র

প্রকাশিত: ০৫:০২, ১৪ জুলাই ২০১৮

  আফগানিস্তানে রণকৌশলে পরিবর্তন আনছে যুক্তরাষ্ট্র

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আফগানিস্তানে ১৭ বছরের যুদ্ধে তার দেশের সংশ্লিষ্টতা বাড়ানোর এক বছর পর রণকৌশল পরিবর্তন আনতে যাচ্ছেন বলে জানা গেছে। ওয়াশিংটনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন এ বিষয়ে পর্যালোচনার প্রস্তুতি চলছে। ইয়াহু নিউজ। ট্রাম্প গত আগস্টে আফগানিস্তানের ওপর একটি কৌশল প্রকাশের পর থেকে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে অগ্রগতি না হওয়ায় নৈরাশ্যের আভাস দিয়েছেন। তিনি ওই কৌশলে মার্কিন সামরিক উপদেষ্টা, প্রশিক্ষক ও বিশেষ সেনাবাহিনীর উন্মুক্ত মোতায়েন প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন এবং আফগান নিরাপত্তা বাহিনীর জন্য বিমান সমর্থন বৃদ্ধি করেছিলেন। কাবুল সরকারের সঙ্গে শান্তি আলোচনা শুরু করার জন্য তালেবান জঙ্গীদের ওপর চাপ প্রয়োগ ছিল এর লক্ষ্য। ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের এ দীর্ঘতম যুদ্ধে সংশ্লিষ্ট থাকার বিরোধী ছিলেন। কিন্তু আরও সময় দেয়ার জন্য তার উপদেষ্টারা তাকে সম্মত করেছিলেন। তিনি গত বছর অতিরিক্ত ৩ হাজার সৈন্য মোতায়েনের অনুমতি দেন। এই নিয়ে আফগানিস্তানে মার্কিন সৈন্য সংখ্যা দাঁড়ায় মোট ১৫ হাজার। প্রায় ১ বছর পর বর্তমান পরিস্থিতি এক অচলাবস্থায় এসে দাঁড়িয়েছে। তালেবান গ্রামাঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ছে। কিন্তু শহর এলাকায় বড় কেন্দ্রগুলো দখল করতে ব্যর্থ হচ্ছে তারা এবং আফগান নিরাপত্তা বাহিনীর সামর্থ্য সন্দেহমুক্ত নয়। বর্তমানে প্রচুর সংখ্যক আফগান বেসামরিক লোক হতাহত হচ্ছে। কিছুসংখ্যক মার্কিন কর্মকর্তা ও অন্য সাবেক কর্মকর্তা ও উপদেষ্টারা বলেছেন, হোয়াইট হাউস এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে পর্যালোচনার নির্দেশ দেয়নি। কিন্তু তারা আগামী কয়েক মাসের মধ্যে সরকারীভাবে একটি মূল্যায়নের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। কর্মকর্তারা পরিচয় গোপন রাখার অনুরোধ জানিয়ে বলেছেন, বিষয়টি প্রকাশ্যে আলোচনা করার জন্য তাদের কর্তৃত্ব দেয়া হয়নি। একজন কর্মকর্তা বলেছেন, আমরা হোয়াইট হাউস থেকে কিছু আভাস পেয়েছি যে, ট্রাম্প আগামী কয়েক মাসের মধ্যে পর্যালোচনার নির্দেশ দিতে পারেন। তাই, সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি। পর্যালোচনায় অগ্রগতি কতটুকু হয়েছে-মার্কিন সৈন্যদের উপস্থিতি ও তালেবানের সঙ্গে আলোচনার ভবিষ্যতসহ বর্তমান কৌশলের বিশেষ সমস্যাগুলো নিয়ে আলোচনা হবে। উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা বলেছেন, পাকিস্তানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক বিষয়ও পর্যালোচনায় আসবে। এ বিষয়ে মন্তব্য চাওয়া হলে হোয়াইট হাউস তাৎক্ষণিকভাবে কোন জবাব দেয়নি। যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন বাহিনী আল-কায়েদাকে আশ্রয় দেয়ার অভিযোগে তালেবান সরকারকে পদচ্যুত করার জন্য ২০০১ সালে আফগানিস্তানে সেনা অভিযান চালায়। তখন থেকে এ যুদ্ধে প্রায় ১ হাজার ৯শ’ মার্কিন সৈন্য নিহত হয়েছে। দেশটিতে দুর্নীতি জেঁঁকে বসেছে। নিরাপত্তা ব্যবস্থা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। যুক্তরাষ্ট্র সরকারের এক সাম্প্রতিক পর্যবেক্ষণ রিপোর্টে বলা হয় যে, আফগান সরকার বর্তমানে দেশের মাত্র ৫৬ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ করছে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও সোমবার আফগানিস্তানে এক আকস্মিক সফরে গেছেন। তিনি তালেবানের সঙ্গে শান্তি আলোচনা শুরু করার লক্ষ্যে প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনির প্রতি সমর্থনের প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন এবং আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্রের অংশগ্রহণের ইচ্ছা পুনর্ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, ‘গত বছর ঘোষিত কৌশল সক্রিয় রয়েছে এবং আফগানদের পুনরায় আশ্বস্ত করে বলেন, তারা তাদের দেশ ও জনগণকে মুক্ত করার লড়াই যতদিন অব্যাহত রাখবে আমরা তাদের সমর্থন দিয়ে যাব’।
×