‘জার্মানি রাশিয়ার কাছে জিম্মি’ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের এমন মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় জার্মান চ্যান্সেলর এ্যাঞ্জেলা মেরকেল বলেছেন, সোভিয়েত ইউনিয়ন নিয়ন্ত্রিত ‘জার্মানিকে আমি প্রত্যক্ষভাবে দেখেছি’। সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন তৎকালীর পূর্ব জার্মানিকে নিয়ন্ত্রণ করত। আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে, ফেডারেল রিপাবলিক অব জার্মানি নামে আজ আমরা ঐক্যবদ্ধ একটি দেশ।’ ১৯৫৪ সালে হামবুর্গে জন্মগ্রহণকারী মেরকেল অনেকবার অনেক অনুষ্ঠানেই সোভিয়েত ইউনিয়নের নিয়ন্ত্রণাধীন জার্মানির বিষয়ে বলেছেন। সিএনএন ও আলজাজিরা।
মেরকেল বলেন, ‘আমার শৈশবে দেখা প্রথম যে রাজনৈতিক আমি ভালভাবে স্মরণ করতে তা হলো বার্লিন প্রাচীর নির্মাণ। ৫০ বছরের আগে ওই প্রাচীর নির্মাণ করা হয়। ওই সময় আমার বয়স মাত্র ৭ বছর। তারপর দিন দিন বড় হতে হতে অনেক কিছুই দেখলাম। সে সময় আমার পরিবারের লোকেরা অনেক সময় কান্না করত। এগুলো দেখে আমিও কষ্ট পেতাম। আমার মায়ের পরিবার ওই দেয়ালের কারণে বিভক্ত হয়ে পড়েছিল। আমি জার্মানির একটি অংশে বেড়ে উঠেছি। সেটি মুক্ত বা স্বাধীন ছিল না। বহু বছর ধরে আমি অন্য অনেকের মতো স্বাধীন হওয়ার স্বপ্ন দেখতাম। এমন কি, স্বাধীনভাবে যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণেরও স্বপ্ন দেখতাম। এর আগে পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোর সেক্রেটারি জিন্স স্টলটেনবার্গকে ট্রাম্প বলেন, জার্মানি রাশিয়ার কাছে জিম্মি হয়ে আছে। এটা ঠিক না। আমি মনে করি, এটি একটি বিষয় যে, ন্যাটোকে বিষয়টি দেখা উচিত। বুধবার ব্রাসেলসে ন্যাটো প্রধানের সঙ্গে বৈঠকের আগে রাশিয়ার কাছ থেকে জার্মানির তেল ও গ্যাস আমদানির তীব্র সমালোচনা করেন ট্রাম্প। তিনি বলেন, মস্কোর সঙ্গে জার্মানি যখন গ্যাসের চুক্তি সমর্থন করছে, তখন রাশিয়া থেকে ইউরোপের সুরক্ষায় যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ খরচ করাটা ‘খুবই অযৌক্তিক।’ সকালের নাস্তার সময় সাক্ষাতে স্টলটেনবার্গকে ট্রাম্প বলেন, ‘তারা রাশিয়াকে হাজার হাজার বিলিয়ন ডলার দিচ্ছে এবং আমরা সেই রাশিয়ার হুমকি থেকে সুরক্ষা দিচ্ছি জার্মানিকে। রাশিয়ার কাছে জার্মানির জিম্মি হয়ে পড়াটা আমার কাছে উদ্বেগের। কারণ দেশটি রাশিয়ার কাছ থেকে প্রচুর পরিমাণে জ্বালানি আমদানি করছে।’ ইউরোপীয় ইউনিয়নের আপত্তি সত্ত্বেও বাল্টিক সাগর হয়ে জার্মানিতে গ্যাস সরবরাহে রাশিয়ার পাইপলাইন বসানোর কাজে সমর্থন দিচ্ছে বার্লিন।