ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

হাজার হাজার মানুষের অংশগ্রহণ

জার্মানিতে অভিবাসন প্রত্যাশীদের সমর্থনে পদযাত্রা

প্রকাশিত: ০৪:৪৫, ৯ জুলাই ২০১৮

 জার্মানিতে অভিবাসন প্রত্যাশীদের  সমর্থনে পদযাত্রা

জার্মানিতে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের সমর্থনে হাজার হাজার মানুষ পদযাত্রায় অংশ নিয়েছে। শনিবার হাজার হাজার মানুষ ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) অভিবাসন নীতির বিরুদ্ধে এবং ভূমধ্যসাগরে অভিবাসীদের উদ্ধারে জড়িত বেসরকারী সংস্থাগুলোর (এনজিও) সমর্থনে এ পদযাত্রায় অংশ নেন। রাজধানী বার্লিনে অন্তত ১২ হাজার মানুষ একটি র‌্যালিতে অংশ নিয়েছে বলে স্থানীয় একটি রেডিওতে বলা হয়েছে। একইভাবে দেশটির গুরুত্বপূর্ণ শহর মিউনিখ ও লিপজিগে জার্মানভিত্তিক সংগঠন লাইফলাইনসহ অন্য দাতব্য সংস্থার পক্ষে র‌্যালিতে অংশ নিয়ে বহু মানুষ বিক্ষোভ করে। সম্প্রতি ইতালির সামুদ্রিক এলাকায় প্রবেশকালে লাইফলাইনের শরণার্থী উদ্ধারকারী নৌকাগুলো বাধার মুখে পড়ে। খবর এএফপি ও বিবিসির। গত মাসে ২৩০ জনেরও বেশি শরণার্থীবোঝাই লাইফলাইনের জাহাজকে মাল্টায় ফেরত যেতে বাধ্য করা হয়। শনিবার বিক্ষোভকারীরা উদ্ধারকারী দলের পোশাক পরে ‘মানবতা কোন রাজনৈতিক মতাদর্শ নয়’ ও ‘ভূমধ্যসাগরে মানবাধিকার বিসর্জন দিও না’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকে। রাজনৈতিক কারণে ‘সমুদ্রে বিষাদ বৃদ্ধির’ জন্য দায়ী দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হোস্ট শেফার অভিবাসনপ্রত্যাশীদের পক্ষে বিক্ষোভকারীদের বিরোধিতা করে আসছেন। এদিকে বিক্ষোভকারীরা অস্ট্রীয় নেতা সেবাস্তিন কার্জ ও ইতালির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সালভিনির বিরুদ্ধেও বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। র‌্যালির উদ্যোক্তারা জানান, তারা মানবতাকে অবজ্ঞা করছেন। এটি গ্রহণযোগ্য নয় ও আপত্তিকর। জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক শরণার্থী সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছর ১৪ শ’রও বেশি মানুষ ভূমধ্যসাগর পাড়ি দেয়ার চেষ্টা করেন। গত সপ্তাহে ইইউ সদস্য রাষ্ট্রগুলো আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্য থেকে আগত অভিবাসন প্রত্যাশী ও শরণার্থীদের সঙ্গে একটি বিতর্কিত চুক্তি করার পরিকল্পনা করে। চুক্তিতে এই জোটে এবং জোটের বাইরে যেসব দেশে শরণার্থীরা রয়েছেন তাদের জন্য আলাদা নিরাপত্তা কেন্দ্র তৈরি করার কথা বলা হয়। এদিকে লিবিয়া থেকে ইউরোপে পাড়ি দেয়ার পথে ভূমধ্যসাগরে গত কয়েকদিনে নৌকাডুবিতে প্রায় ২ শতাধিক অভিবাসন প্রত্যাশীর মৃত্যু হয়। এই নিয়ে চলতি বছর এই পথ দিয়ে আসার চেষ্টায় মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ১ হাজার। মধ্যপ্রাচ্যের সংবাদভিত্তিক ব্রিটিশ ওয়েবসাইট মিডলইস্ট মনিটরের এক প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা যায়। আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা এক বিবৃতিতে জানায়, গত শুক্রবার থেকে রবিবার পর্যন্ত ভূমধ্যসাগরে নৌকাডুবিতে ২০৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। সংস্থাটি জানায়, শুক্রবার মৃত ১০৩ জনের মধ্যে ৩ শিশু ছিল। এদের মধ্যে উদ্ধার করা হয়েছে ৪১ জনকে। শেফ দ্য মিশন অথম্যান বেলবেইসি বলেন, লিবিয়া উপকূলে মৃতের সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। আইওএমের মতে, চলতি বছর ভূমধ্যসাগর দিয়ে প্রায় ৪৫ হাজার অভিবাসনপ্রত্যাসী ইউরোপে প্রবেশ করেছে। গত বছর এই পথ পাড়ি দিয়ে ইতালি ও অন্য ইউরোপীয় দেশগুলোতে প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার শরণার্থী পৌঁছেছে। এই পথ ব্যবহার করতে গিয়ে চলতি বছরের জুনের প্রথম দিকে তিউনিসিয়া উপকূলে নৌকাডুবে মৃত্যু হয় প্রায় ১ শ’ ১২ শরণার্থী ও অভিবাসন প্রত্যাশীর। ফেব্রুয়ারিতে লিবিয়ার পশ্চিম উপকূলে নৌকাডুবে প্রায় ৯০ জন প্রাণ হারায়।
×