ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

শুল্ক নিয়ে অনড় অবস্থানে ট্রাম্প

প্রকাশিত: ০৬:৩৪, ৪ জুলাই ২০১৮

শুল্ক নিয়ে অনড় অবস্থানে ট্রাম্প

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প শুল্ক ও বাণিজ্যের ইস্যুতে নিজের বিতর্কিত অবস্থান ফের সমর্থন করেছেন। অনিশ্চয়তা ও অস্থিতিশীলতার মধ্য দিয়ে বৈশ্বিক বাজারগুলো যখন বছরের দ্বিতীয়ার্ধ শুরু করতে যাচ্ছে এ রকম এক সময় তিনি শুল্ক ইস্যুতে তার অনড় অবস্থানের কথা ফের জানিয়েদিলেন। গার্ডিয়ান। ট্রাম্প সোমবার তার ওভাল অফিসে নেদারল্যান্ডসের প্রধানমন্ত্রী মার্ক রুটের সঙ্গে বৈঠককালে বলেন, বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা (ডব্লিউটিও) যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সঠিক আচরণ করছে না। আমি আশা করি তারা তাদের দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টাবে। অনেক বছর ধরেই তারা আমাদের সঙ্গে অন্যায্য আচরণ করে এসেছে বা আমরা তাদের অন্যায় আচরণের শিকার হয়েছি। এই কারণে ডব্লিউটিও নিয়ে আমরা বড় ধরনের সমস্যার মধ্যে আছি। ট্রাম্প আরও বলেন, আমরা এখনও কিছু করিনি। তারা যদি আমাদের সঙ্গে সঠিক আচরণ না করে তবে আমরা কিছু করতে বাধ্য হবো। বাণিজ্য আলোচনায় আমরা খুব ভাল ও ন্যায্য চুক্তির কাছাকাছি পর্যায়ে আমরা পৌঁছে গেছি। আমি বলতে চাই না খুব ভাল চুক্তি তবে ন্যায্য চুক্তি। আমাদের করদাতা, শ্রমিক ও কৃষকদের জন্য নায্য চুক্তি। ট্রাম্প প্রশাসনের নীতি বৈশ্বিক বাণিজ্যে যখন নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে তখন তিনি এই মন্তব্য করলেন। ২০১৮ সালের দ্বিতীয়ার্ধ বিনিয়োগকারীদের জন্য কঠিন হবে বলে গোল্ডম্যান স্যাকস আগেই সতর্ক করে দিয়েছিল। শুল্ক ও সুদের হার বেড়ে যাওয়ায় বিনিয়োগকারীদের এ সমস্যা হবে। অন্যদিকে মার্কিন কলকারখানাগুলোর ওপর আইএইচএস মার্কিটের করা সর্বশেষ জরিপেও দেখা গেছে আমদানি শুল্কারোপের ফলে দেশের ভেতর উৎপাদনকারীদের খরচ বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি একক মুদ্রা ইউরো ব্যবহারকারী ইউরোজোনের প্রবৃদ্ধিও কমে গেছে। এ বিষয়ে আরও কঠোর সতর্কবাণী উচ্চারণ করে জেপি মর্গ্যান। তারা বলেছে, পুরোদমে বাণিজ্য যুদ্ধ শুরু হয়ে গেলে সেটি বিশ্ব বাণিজ্যের মধ্যে একটি শূন্যতা তৈরি করবে, মোট বাণিজ্যের পরিমাণ কমবে, সাপ্লাই চেইন ভেঙ্গে পড়বে এবং ভোক্তাদের আস্থা পড়ে যাবে। জেপি মর্গ্যানের সিনিয়র কর্মকর্তা জন নরমান্ড আশঙ্কা করছেন আগামী দুবছরে বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধি ১.৪ শতাংশ কমবে। সঙ্কটের কিছু নমুনা এরই মধ্যে টের পাওয়া যাচ্ছে। বিখ্যাত মার্কিন পেরেক উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান মিড কন্টিনেন্ট নেইল এরই মধ্যেই ৬০ জন কর্মীকে ছাঁটাই করেছে। চলতি গ্রীষ্ম মৌসুমের মধ্যেই কোম্পানিটি ব্যবসা গুটিয়ে নিতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ইস্পাত আমদানির ওপর শুল্কারোপের সরাসরি মাসুল দিচ্ছে কোম্পানিটি। পেরেক উৎপাদনের জন্য তাদের উচ্চমূল্যে ইস্পাত কিনতে হচ্ছে। ফলে কম দামি আমদানি করা পেরেকের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকতে পারছে না। চলতি বছর মার্চের শুরুর দিকেগ ট্রাম্প তার ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নীতি অনুসারে শাস্তিমূলক শুল্কারোপের ঘোষণা দেন। ইস্পাত ও এলুমিনিয়াম আমদানির ওপর প্রাথমিকভাবে এই শুল্কারোপ করা হবে। কংগ্রেসের রিপাবলিকান নেতৃবৃন্দের আপত্তি অগ্রাহ্য করেই তিনি ওই ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, ইস্পাতের তৈরি বিদেশী জিনিস আমদানির ওপর ২৫ শতাংশ এবং এলুমিনিয়ামের তৈরি সামগ্রীর ওপর তিনি ১০ শতাংশ আমদানি শুল্কারোপ করা হবে। ট্রাম্পের এই ঘোষণার পরপরই কানাডা ও ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ মিত্রদেশগুলো উদ্বেগ প্রকাশ ও পাল্টা শুল্কারোপের হুমকি দেয়। অন্যসব নীতির মতো ট্রাম্প শুল্কারোপের সিদ্ধান্তে এখন অটল আছেন। তিনি মনে করেন তার দেশের ব্যবসা বাঁচাতে এর কোন বিকল্প নেই।
×