ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

রাশিয়ার আনুকূল্য পায় ইইউবিরোধী ব্রিটিশরা

ব্রেক্সিটপন্থীদের রুশ যোগসাজশ

প্রকাশিত: ০৩:৪৮, ৩ জুলাই ২০১৮

ব্রেক্সিটপন্থীদের রুশ যোগসাজশ

ব্রেক্সিট সমর্থনকারী ব্রিটিশ বিনিয়োগকারী এ্যারোন ব্যাঙ্কসকে গণভোটের আট মাস আগে রাশিয়া ব্যবসার প্রস্তাব দিয়েছিল। এই তিনি রুশ রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে ওই সময় ছয় ঘণ্টা সময় ব্যয় করেন। নিউইয়র্ক টাইমস। ব্যাঙ্কসের স্ত্রী রাশিয়ায় জন্মগ্রহণ করেছেন, এছাড়া তার গাড়ির লাইসেন্স প্লেটের নম্বরের সঙ্গে ব্রিটিশ গোয়েন্দা সংস্থা এমআই ফাইভেও নামের বেশ মিল আছে। এসব নিয়ে অনেক সময় প্রশ্ন উঠেছে। তবে ব্যাঙ্কস বরাবরই ক্রেমলিনের সঙ্গে তার সম্পর্ক থাকার বিষয়টি হেসে উড়িয়ে দিয়েছেন। সম্প্রতি ফাঁস হওয়া গোপন তথ্যে জানা গেছে, ব্যাঙ্কস ও তার উপদেষ্টাদের সঙ্গে রাশিয়ার যোগাযোগ তিনি আগে যা বলেছিলেন তার চেয়েও অনেক বেশি। ব্রেক্সিট বা ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে আসতে প্রচারাভিযান চালাতে ব্যাঙ্কস ৮ মিলিয়নের বেশি ব্রিটিশ পাউন্ড ব্যয় করেন। ব্রিটেন ইইউ ছাড়ুক, রাশিয়াও তা চেয়েছে। লন্ডনে ব্রিটিশ দূতাবাসের সঙ্গে তার ছিল নিয়মিত যোগাযোগ। এই যোগাযোগের সুবাদেই তিনি রাশিয়ার সোনা অথবা হীরার খনিগুলোতে বিশাল অঙ্কের বিনিয়োগের সুযোগ হাতিয়ে নেন। এই কাজে ব্যাঙ্কসের সহযোগী হিসেবে যিনি কাজ করেন তিনি ব্রেক্সিটের একজন সমর্থক, তিনি তাকে অন্তত একটি একটি খনি চুক্তিতে পৌঁছতে সহযোগিতা করেন। সর্বশেষ প্রকাশিত এ খবর থেকে ব্রেক্সিট ইস্যুতে রাশিয়া প্রভাব খাটিয়েছে বলে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে। ব্রেক্সিটের পক্ষে যারা কাজ করেছে দেখা যাচ্ছে যে ক্রেমলিন তাদের পুরস্কৃত করেছে। ব্রেক্সিট ইস্যুতে রাশিয়ার হস্তক্ষেপের বিষয়টি অনেকটা ২০১৬ সালে মার্কিন নির্বাচনে নাক গলানোর মতই। ওই ঘটনা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে এখন তদন্ত চলছে। মার্কিন তদন্তকারীরা ধারণা করেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সহযোগীরা রুশ কর্মকর্তাকে সহযোগিতা করে থাকতে পারেন। ব্রিটেনকে এখন ভাবতে হবে ব্রেক্সিট ইস্যুতে রাশিয়া কিভাবে প্রভাব বিস্তার করেছে বা ব্রেক্সিটের পক্ষে প্রচারকারী ব্রিটিশ নাগরিকদের পুরস্কৃৃত করেছে। রুশ খনিগুলোর চুক্তি করার জন্য ব্যাঙ্কস যে ব্রিটেনে অবস্থানরত রুশ কূটনীতিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন ওয়াশিংটনে মার্কিন তদন্তকারীরা তার প্রমাণ পেয়েছেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রুশ হস্তক্ষেপের বিষয়টি নিয়ে তদন্তকারী রবার্ট মুয়েলার ও হাউস ইন্টেলিজেন্স কমিটির ডেমোক্র্যাট সদস্যদের কাছে ব্যাঙ্কসের যোগাযোগের সেসব প্রমাণ রযেছে। ব্যাঙ্কস ও ব্রেক্সিটপন্থী অন্য ব্রিটিশদের সঙ্গে ট্রাম্পের প্রচার টিমের যোগাযোগ হয়েছিল কি না তদন্তকারীরা সেটি এখন খতিয়ে দেখছেন। ২০১৬ সালের ১২ অক্টোবর প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচিত ট্রাম্পের সঙ্গে তার নিউইয়র্কের বাসভবনে দেখা করেছিলেন ব্যাঙ্কস। তিনি আমেরিকা থেকে ব্রিটেনে ফেরার পথে ট্রাম্পের সঙ্গে দেখা করেন। হাউস ইন্টেলিজেন্স কমিটির প্রধান ও ক্যালিফোর্নিয়া থেকে নির্বাচিত ডেমোক্র্যাটিক দলীয় সদস্য এ্যাডাম শিফ বলেন, ‘মার্কিন নির্বাচনে রুশ হস্তক্ষেপ এবং ব্রেক্সিটপন্থীদের সঙ্গে রাশিয়ার যোগাযোগের ঘটনাটি পাশাপাশি ঘটে। ব্রেক্সিটের পক্ষে সবচেয়ে বড় পৃষ্ঠপোষককে সোনা ও হীরার খনিতে বিনিয়োগের সুযোগ করে দিয়েছে রাশিয়া।’
×