ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

নজিরবিহীন সহিংসতা পেরিয়ে মেক্সিকোয় ভোটগ্রহণ শেষ

প্রকাশিত: ০৪:১৫, ২ জুলাই ২০১৮

  নজিরবিহীন সহিংসতা পেরিয়ে মেক্সিকোয় ভোটগ্রহণ শেষ

নির্বাচনী প্রচারে নজিরবিহীন সহিংসতার পর মেক্সিকোজুড়ে জাতীয় নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে। রবিবার দেশটির ৮ কোটি ৮০ লাখ ভোটার নতুন প্রেসিডেন্টের পাশাপাশি ১২৮ সিনেটর, কংগ্রেসের ৫০০ ডেপুটি এবং বিভিন্ন রাজ্য ও অঞ্চলের স্থানীয় প্রতিনিধি ঠিক করতে তাদের রায় দেন। খবর বিবিসির। দুর্নীতির বিরুদ্ধে সর্বাত্মক অভিযান চালানোর প্রতিশ্রুতি দেয়া মেক্সিকো সিটির সাবেক মেয়র বামপন্থী আন্দ্রেস ম্যানুয়েল লোপেজ ওব্রাদোর (৬৪) প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের জরিপগুলোতে এগিয়ে আছেন বলে খবর আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের। এই নির্বাচনে জিতলে লোপেজে প্রায় এক শ’ বছর ধরে মেক্সিকোর ক্ষমতা ভোগ করা প্রধান দুটি দলকে ক্ষমতা কেন্দ্রের বাইরে সরিয়ে দিতে সক্ষম হবেন বলে ধারণা পর্যবেক্ষকদের। শ্লথ অর্থনীতি, বিস্তৃত দুর্নীতি ও অপরাধের কারণে ক্ষুব্ধ ভোটারদের অনেকেই বর্তমান প্রেসিডেন্ট এনরিক পেনা নিয়েতার সরকারকে ক্ষমতা থেকে হটাতে আগ্রহী। বামপন্থী লোপেজের প্রচারণা আবর্তিতই হয়েছে মেক্সিকো থেকে দুর্নীতি দূর করার প্রতিশ্রুতিকে কেন্দ্র করে। রাজনীতি ও ব্যবসায়িক অঙ্গনের অভিজাতদের পাশাপাশি রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর অর্থের অপব্যবহার কমিয়ে মজুরি এবং পেনশন বাড়ানোরও আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। লোপেজ আগের দুই নির্বাচনে দ্বিতীয় হয়েছিলেন। নির্বাচনে জিতলে তিনি দশকের পর দশক ধরে পাল্টাপাল্টি ক্ষমতায় থাকা ইনস্টিটিউশনাল রেভ্যুলেশনারি পার্টি (পিআরআই) ও ন্যাশনাল এ্যাকশন পার্টির (পিএএন) অধিপত্যের অবসান ঘটাবেন। দল দুটিকে ‘ক্ষমতাকেন্দ্রিক একই মাফিয়ার অংশ’ আখ্যা দিয়েছেন মোরেনো দলের শীর্ষ নেতা লোপেজ। নির্বাচনে তার নিকটতম প্রতিন্দ্বদ্বী হিসেবে ন্যাশনাল এ্যাকশনের রিকার্ডো আনায়া আবির্ভূত হবেন বলে ধারণা বিবিসির। শেষ মুহূর্তেও লোপেজকে ‘পপুলিস্ট’ ও অর্থনীতি পরিচালনার জন্য বিশ্বস্ত নয় এমন ‘বাউন্ডুলে’ আখ্যা দিয়ে জনসমর্থন বাড়ানোর চেষ্টা করছেন এ পিএএন নেতা। সাবেক অর্থমন্ত্রী হোসে আন্তোনিও মিয়েদে প্রেসিডেন্ট পদে ক্ষমতাসীন পিআরআইয়ের প্রার্থী। ল্যাতিন আমেরিকার দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি ও বিশ্বের অন্যতম প্রধান তেল রফতানিকারক দেশ হওয়ার পরও মেক্সিকোর ৪০ শতাংশেরও বেশি নাগরিকের অবস্থান দারিদ্র্যসীমার নিচে। দুর্নীতি ও তুমুল সহিংসতার কারণেও বহুজাতিক অনেক কোম্পানি দেশটি থেকে মুখ ফিরিয়ে রেখেছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তেলের দাম কমে যাওয়া ও ডলারের বিপরীতে মেক্সিকোর মুদ্রা পেসোর দরপতনের কারণে দেশটির অর্থনীতিকে কঠিন সময় পার করতে হচ্ছে। স্থানীয় রাজনীতিকে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা অপরাধীগোষ্ঠীগুলোর কারণে মেক্সিকোর এবারের নির্বাচনী প্রচারে নজিরবিহীন সহিংসতা হয়েছে। গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকে নির্বাচনী প্রচার শুরু হওয়ার পর থেকে সহিংসতায় ১৩০ জনেরও বেশি রাজনৈতিক কর্মী ও প্রার্থী প্রাণ হারিয়েছেন। সাংবাদিকদের জন্য বিশ্বের অন্যতম বিপজ্জনক দেশ হিসেবেও মেক্সিকোর কুখ্যাতি আছে। শনিবারও কুনতানা রো-র সাবান গ্রামের একটি বারে এক সাংবাদিককে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে বলে কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছে।
×