ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

রাসিক নির্বাচন

মেয়র পদ থেকে সরে দাঁড়াল জামায়াত, কৌশলে প্রার্থী দিয়েছে ওয়ার্ডে

প্রকাশিত: ০৬:১০, ৩০ জুন ২০১৮

  মেয়র পদ থেকে সরে দাঁড়াল জামায়াত, কৌশলে প্রার্থী দিয়েছে ওয়ার্ডে

মামুন-অর-রশিদ, রাজশাহী ॥ তফসিল ঘোষণার আগে ও পরে মাঠে হুঙ্কার ছড়ালেও শেষ পর্যন্ত রাজশাহীতে বিএনপিকেই মাঠ ছেড়ে দিয়েছে জামায়াত। রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ঘোষণা দিয়েও মেয়র পদে প্রার্থী দেয়নি স্বাধীনতাবিরোধী এ দলটি। বিএনপির সঙ্গে জোটবদ্ধ দলটির নেতারা জানান, ২০ দলের সিদ্ধান্ত মেনে তারা ভোট থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। তবে কৌশলে রাসিকের সবকটি ওয়ার্ডে কাউন্সিলর প্রার্থী দিয়েছে স্বাধীনতাবিরোধী জামায়াত। আগামী ৩০ জুলাই হতে যাওয়া রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ভোটের তফসিল ঘোষণার আগেই রাজশাহীতে প্রার্থী ঘোষণা দিয়ে মাঠে সক্রিয় হয় জামায়াত। রাজশাহীতে মহানগর জামায়াতের সেক্রেটারি সিদ্দিক হোসেন মেয়র পদে লড়বেন বলে ঘোষণা দেয়া হয়। ব্যানার ফেস্টুনও ঝোলান নগরীর মোড়ে মোড়ে। তফসিল ঘোষণার পর মনোনয়ন উত্তোলন ও জমাও দেয়নি এ দলের কোন নেতা। তবে রাজশাহী জামায়াতের নেতারা জানান, তারা ক্ষান্ত দিয়েছেন। গত ১২ মার্চ তাদের ঘোষিত প্রার্থী গ্রেফতারের পর আর মুক্তি পাননি। এ কারণে নগরজুড়ে ‘নাগরিক পরিষদের’ ব্যানারে ব্যাপক প্রচার চললেও সিদ্দিক হোসেনের নির্বাচনী প্রক্রিয়ার বাইরে রাখার মনস্থির করে দলটি। কারাগারে থেকে অবশ্য ভোট করতে আইনী কোন বাধা নেই। তবে নানা কারণে রাজনীতিতে বিপর্যস্ত জামায়াত আর নতুন করে এই ধকল নিতে চাইছে না। মনোনয়নপত্র দাখিল ও জমা দেয়ার শেষ দিন বৃহস্পতিবার দুপুরে মহানগর জামায়াতের নায়েবে আমির আবু ইউসুফ সেলিম বলেন, ২০ দলীয় জোটের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আমরা এই নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াচ্ছি। রাজশাহীতে ২০ দলীয় জোটের প্রার্থী হিসেবে আমরা বিএনপি নেতা মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলকেই সমর্থন দিচ্ছি বলেও জানান তিনি। সেলিম বলেন, ‘আমরা নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়েছিলাম। প্রার্থী কারাগারে থাকলে তার মনোনয়নপত্র তুলতে আদালতের অনুমতি নিতে হয়। চার-পাঁচ দিন আগে আমরা এই অনুমতিও পেয়েছিলাম। কিন্তু বুধবার রাতে কেন্দ্রের নেতারা এখানে মনোনয়নপত্র না তোলার জন্য নির্দেশনা দিলেন। ফলে আমরা এখানে প্রার্থী দিচ্ছি না। জামায়াতের এ নেতা দাবি করে বলেন, ‘এখানে আমাদের যথেষ্ট ভোট আছে। মেয়র পদে প্রার্থিতার জন্য আমাদের প্রথম পছন্দই ছিল রাজশাহী। কিন্তু কেন্দ্রের সিদ্ধান্তের বাইরে তো যাওয়া যাচ্ছে না। ফলে আমাদের সরে দাঁড়াতে হলো। এদিকে মেয়র পদে সরে দাঁড়ালেও নগরীর প্রতিটি ওয়ার্ডে প্রার্থী দেয়া হয়েছে কাউন্সিলর পদে। এমনটি নগরীর সবকটি সংরক্ষিত আসনেও রয়েছে জামায়াতের প্রার্থী। তারা দলীয় পরিচয় গোপনে রেখেই ভোটের মাঠে নেমেছে। জামায়াত নেতারা বিষয়টি ঘোষণা না দিলেও কাউন্সিলর প্রার্থীর তালিকা দেখে তা প্রমাণিত হয়েছে। অনেকে মনে করছেন, মেয়র পদ ছেড়ে দিলেও কৌশলে তারা কাউন্সিল প্রার্থী দিয়েছেন ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে। তাদের জয়ের জন্য মাঠে থাকবেন জামায়াত নেতারা। লিটনকে মেয়র নির্বাচিত করার প্রত্যয় বাদশার ॥ রাজশাহী সদর আসনের সংসদ সদস্য ও ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা আগামী ৩০ জুলাই রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন মেয়র নির্বাচনে ১৪ দলকে সর্বশক্তি দিয়ে জনগণের সঙ্গে থেকে এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনকে মেয়র নির্বাচিত করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন। বৃহস্পতিবার রাতে নগরীর কুমারপাড়ার মহানগর আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে রাজশাহী মহানগর ১৪ দলের এক সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, গত ৫ বছরে রাজশাহী অনেক পিছিয়েছে, লিটনকে জয়যুক্ত করুন রাজশাহীর উন্নয়ন এগিয়ে নিন। সভায় সভাপতিত্ব করেন রাজশাহী মহানগর ১৪ দলের সমন্বয়কারী এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। খায়রুজ্জামান লিটনকে জয়যুক্ত করতে এবং সিটি মেয়র নির্বাচন পরিচালনার জন্য ১৪ দলের পক্ষে ৯ সদস্য বিশিষ্ট একটি স্টিয়ারিং কমিটি গঠন করা হয়। স্টিয়ারিং কমিটিতে মুস্তাফিজুর রহমান খান আলমকে (ভারপ্রাপ্ত) আহ্বায়ক করা হয়। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- লিয়াকত আলী লিকু, ডাবলু সরকার, প্রদীপ মৃধা, আব্দুল্লাহ আল মাসুদ শিবলী, দেবাশীষ প্রামণিক দেবু, নুরুল ইসলাম হিটলার, শফিকুল ইসলাম শফিক, সাইদুল ইসলাম এবং কমরেড মাসুদ রানা। কমিটি আগামী ৩০ জুলাই পর্যন্ত মেয়র প্রার্থী এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন-এর পক্ষে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন পরিচালনা করবে। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কুশল বিনিময় ॥ শুক্রবার নগরীর বিভিন্ন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। তিনি নেতাকর্মীদের নিয়ে বেলা ১২টা থেকে মহানগরীর সাহেব বাজারের সবজি, মাছ, গরুর মাংস ও মুরগি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। শুরুতেই মাছ ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কুশল বিনিময়ের পর সবজি, গরুর মাংস ও মুরগি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। এছাড়া তিনি নগরীর মনি চত্বর এলাকার বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের সঙ্গেও কুশল বিনিময় করেন এবং সবার কাছে দোয়া চান। এ সময় ব্যবসায়ীরা তাদের বিভিন্ন সমস্যার কথা তুলে ধরেন। সমস্যাগুলো শুনে তা সমাধানের আশ^াস দেন খায়রুজ্জামান লিটন।
×