ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

মালয়েশিয়ায় নজিবের সহযোগী গ্রেফতার

প্রকাশিত: ০৩:৫৪, ২৬ জুন ২০১৮

মালয়েশিয়ায় নজিবের সহযোগী গ্রেফতার

মালয়েশিয়ার কর্তৃপক্ষ সদ্য ক্ষমতা হারানো প্রধানমন্ত্রী নজিব রাজাকের সাবেক এক সহযোগীকে গ্রেফতার করেছে। রাষ্ট্রীয় অর্থায়নে ওয়ান মালয়েশিয়া ডেভেলোপমেন্ট বারহেড (ওয়ানএমডিবি) উন্নয়ন প্রকল্পে হাজার কোটি ডলার কেলেঙ্কারির তদন্তে এই প্রথম কাউকে আটক করা হল। আটকের পর ওই সাবেক সহযোগীকে রিমান্ডে পাঠানো হয়েছে বলে সোমবার বারনামা নিউজ জানিয়েছে। খবর ইউএস নিউজের। মাহাথির মোহাম্মদের (৯২) নেতৃত্বে মালয়েশিয়ার নতুন সরকার ওয়ানএমডিবির হাজার কোটি ডলারের অবৈধ লেনদেনের অভিযোগের বিষয়ে নতুন করে তদন্ত শুরু করে। ওয়ানএমডিবির কেলেঙ্কারির প্রেক্ষিতে জনমনে অসন্তোষ দেখা দেয়ায় এবং জীবনযাত্রার ব্যয় ক্রমবর্ধমান হারে বাড়তে থাকায় মে মাসে অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনে নজিবের দল হেরে যায়। জাতীয় সংবাদ সম্প্রচার মাধ্যম বারনামার প্রতিবেদন অনুযায়ী জানা যায়, সোমবার এক ম্যাজিস্ট্রেট আদালত দুর্নীতি দমন কর্মকর্তাদের ওয়ানএমডিবি তদন্তে সহায়তার জন্য আবেদনের প্রেক্ষিতে নজিবের সাবেক সহযোগীর এক সপ্তাহের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে। প্রশাসনিক রাজধানী পুত্রজায়ায় অবস্থিত মালয়েশিয়ান এন্টি-করাপশন কমিশনের (এমএসিসি) সদর দফতর এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ৪২ বছর বয়স্ক নজিবের সাবেক সহযোগীকে রবিবার রাতে আটক করা হয়েছে। তিনি ২০০৯ সাল থেকে নজিবের সঙ্গে কাজ শুরু করেন। এ মাসের শুরুতে মালয়েশিয়ার নতুন এ্যাটর্নি জেনারেল জানিয়েছেন, দুর্নীতি দমন সংস্থার কাছ থেকে রাষ্ট্রীয় তহবিল তছরুফের তদন্তের কাগজপত্র পাওয়ার পর তার কার্যালয় ওয়ানএমডিবি মামলার সম্ভাব্য অপরাধ ও গৃহীত ব্যবস্থা সম্পর্কে পরীক্ষা করে দেখছে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী নজিব রাজাক ওয়ানএমডিবি প্রতিষ্ঠা করেছেন। পরে এটি অর্থ পাচারের একটি মাধ্যম হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে বলে প্রমাণিত হয়। নজিব তার বিরুদ্ধে আনা অর্থ পাচারের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। ওয়ানএমডিবি কেলেঙ্কারির বিষয়ে নজিব বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিয়ে মন্তব্য দিয়েছেন। গত সপ্তাহে তিনি একটি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন যে, তিনি জানেন না কিভাবে তার ব্যক্তিগত এ্যাকাউন্ডের মাধ্যমে ওয়ানএমডিবির শত কোটি ডলার সরানো হয়েছে। জানা গেছে, তহবিলের অর্থ পাচারের মাধ্যমে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। যা দিয়ে পরবর্তীতে বিভিন্ন দেশে সম্পদ কেনা হয়েছে। যার মধ্যে ইয়ট, পেইন্টিং, রত্ম ও প্রধানত আবাসন ক্রয় অন্যতম। ওয়ানএমডিবিতে জড়িত লেনদেন সম্পর্কিত তদন্ত ছয়টি দেশে করা হচ্ছে। যার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র অন্যতম। যেখানে ডিপার্টমেন্ট অব জাস্টিসের অধীনে একে এন্টি-ক্লিপটোক্রেসি কর্মসূচীর আওতায় সবচেয়ে বড় ধরনের কেলেঙ্কারি হিসেবে গণ্য করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের ডিপার্টমেন্ট অব জাস্টিস অভিযোগ করেছে যে, ওয়ানএমডিবি থেকে ৪৫০ কোটি ডলারের বেশি জটিল ওয়েব ও শেল কোম্পানির মাধ্যমে লেনদেন হয়েছে। যার মধ্যে নজিবের ব্যাংক এ্যাকাউন্টের মাধ্যমে ৬৮ কোটি ১০ লাখ ডলার লেনদেন হয়েছে। নজিব জানিয়েছেন, তার এ্যাকাউন্টের এই অর্থ সৌদি আরব থেকে পাওয়া অনুদান ছিল। যা পরে ফিরিয়ে দেয়া হয়। মার্কিন জাস্টিস ডিপার্টমেন্টের মতে, ওয়ানএমডিবির অর্থ সম্পদ ক্রয়ে ব্যবহার করা হয়েছে। যার মধ্যে পিকাসোর চিত্রকর্ম, দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়া ও নিউইয়র্কে বিলাসবহুল আবসন, হলিউডের প্রযোজনা কোম্পানিতে বিনিয়োগ, ২৬ কোটি ৫০ লাখ ডলারের ইয়ট, ২০ কোটি ডলারেরও বেশি গহনা কেনায় ব্যবহৃত হয়েছে। গহনার মধ্যে ২২ ক্যারেটের গোলাপী হীরার লকেট ও নেকলেস রয়েছে।
×