ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

নেতানিয়াহুর সঙ্গে প্যারিসে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ম্যাক্রো

ইরান নিয়ে উত্তেজনা বাড়াবেন না

প্রকাশিত: ০৪:০৭, ৮ জুন ২০১৮

ইরান নিয়ে উত্তেজনা বাড়াবেন না

ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ মঙ্গলবার প্যারিসে সফররত ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে আলোচনা শেষে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, ইরানকে নিয়ে যে ধরনের উত্তেজনাকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হচ্ছে তা শুধু সংঘাতের দিকেই এগিয়ে নিয়ে যাবে। সবাইকে স্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে ও উত্তেজনার তীব্রতা না বাড়াতে আহ্বান জানিয়েছেন। এএফপি। ইরান তার ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের ক্ষমতা বৃদ্ধির পরিকল্পনা ঘোষণা চাপের মুখে পড়ে এগিয়ে চলেছে বলে উল্লেখ করে ম্যাক্রোঁ যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দিক নির্দেশনাকে দোষারোপ করে বলেন, তেহরানকে পরমাণু বোমা বানানো বন্ধ করার বিনিময়ে ২০১৫ সালে বৈশ্বিকভাবে চুক্তিটি হয়েছে। সেটি থেকে যুক্তরাষ্ট্রের এক তরফাভাবে বেরিয়ে যাওয়াই ইরানকে পরমাণু সমৃদ্ধকরণের দিকে এগিয়ে যেতে বাধ্য করেছে। যখন আপনি সিদ্ধান্ত নেবেন নিজের দিক থেকে কোন চুক্তি শেষ করে দিতে তখন যারা একে সম্মান জানায় তাদের পক্ষ থেকে কোন উৎসাহ যোগাবে না। এটি প্রকৃত সাধারণ চিন্তা। ম্যাক্রোঁ-নেতানিয়াহু আলোচনায় অপ্রত্যাশিত কিছু আলোচনা করা হয়নি। ম্যাক্রোঁ কোন ইঙ্গিত না দিয়ে বরং জোর যে, ইরান চুক্তির শর্ত মেনে চলেছে। যা গত মাসে ট্রাম্প একতরফাভাবে প্রত্যাহার করে নেয়। নেতানিয়াহুর সঙ্গে তিনি এ বিষয়ে একমত হন যে, চুক্তিটি ত্রুটিপূর্ণ। ম্যাক্রোঁ আরও বলেন, যদি আপনি বুঝতে পারেন এটি অসম্পূর্ণ তাহলে একে বাদ দেয়ার আগে আরও এগিয়ে নেয়া উচিত। চুক্তিটি থাকাই বরং ভাল। ইরানের সঙ্গে স্বাক্ষরিত ছয় বিশ্বশক্তির চুক্তিতে অপর স্বাক্ষরকারী দেশ ব্রিটেন, ফ্রান্স ও জার্মানি সফরের অংশ হিসেবে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে যান নেতানিয়াহু। ওয়াশিংটনের চুক্তি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পথ অনুসরণ করেই এ সফর অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ফ্রান্স, জার্মানি ও ব্রিটেন এখন চেষ্টা করছে চুক্তিটিকে রক্ষা করতে। তারা চেষ্টা করছে সর্বোচ্চ সুযোগ কাজে লাগিয়ে তেহরানের পারমাণবিক বোমা তৈরির পথ রুদ্ধ করতে। তবে ইসরাইল মনে করে যে, ইরান পশ্চিমাদের বোকা বানাচ্ছে। তারা পরিকল্পনা করেছে চুক্তির শর্ত ভেঙ্গে আর্থিকভাবে সচ্ছল হয়ে পরমাণু কর্মসূচীকে এগিয়ে নেয়ার। মঙ্গলবার নেতানিয়াহু জানিয়েছেন, তিনি ম্যাক্রোঁকে চুক্তি থেকে বেরিয়ে যাওয়া নিয়ে কোন রকম বোঝাপড়া করতে পদক্ষেপ নিতে বলতে আসেননি। তিনি বলেন, তিনি বিশ্বাস করেন ইউরোপ এই চুক্তি রক্ষা করে মার্কিন চাপের পড়বে। এ ধরনের হুমকি ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্র দিয়ে রেখেছে। যদি ইউরোপের কোন দেশ ইরানের সঙ্গে ব্যবসা করে তবে তার জন্য মার্কিন নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়তে হবে। আমি প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁকে চুকি থেকে বেরিয়ে আসার বিষয়ে কোন জিজ্ঞাসা করিনি। আমি মনে করি অর্থনৈতিক বাস্তবতাই তাদের এই সমস্যার সমাধান করতে সহায়তা করবে। তাই এটি নয় যে আমরা বিষয়টির ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছি। মঙ্গলবার নেতানিয়াহু বলেন, তিনি ম্যাক্রোঁর সঙ্গে কোন প্রকার সমঝোতা করার পদক্ষেপ নেবেন না। পাশাপাশি তিনি বলেন, তিনি বিশ্বাস করে ইউরোপ তার পক্ষে সক্ষম সবকিছু করবে। যাতে মার্কিন নিষেধাজ্ঞায় চাপের মুখে নিজেদের রক্ষা করতে পারে। ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ইরানের সঙ্গে যেই চুক্তি করবে তাকে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হবে বলে হুমকি দিয়ে রেখেছে। চুক্তি থেকে বেরিয়ে আসবেন কি না সে বিষয়ে আমি প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁকে কোন কিছু জিজ্ঞাসা করিনি। আমি মনে করি, অর্থনৈতিক বাস্তবতার নিরিখে সবকিছুর সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। এটি কোন বিষয় নয় যে আমরা কোন বিষয়কে গুরুত্ব দিচ্ছি। আমরা কোন বিষয়ে গুরুত্ব দিচ্ছি ও আমি কোন বিষয়ে গুরুত্ব দিচ্ছি তাই নয় বরং এই অঞ্চলে ইরানের আগ্রাসন রোধ করতে কি করণীয় তা আলোচনা করতে হবে। ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী অভিযোগ করেন, তেহরান চুক্তিকে আর্থিকভাবে সুবিধা পাওয়ায় ব্যবহার করছে।
×