ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

নিজেদের নিয়েই ভাবতে চান তামিম

প্রকাশিত: ০৭:১৯, ২৭ মে ২০১৮

নিজেদের নিয়েই ভাবতে চান তামিম

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ সামনেই আফগানিস্তানের বিপক্ষে টি২০ সিরিজ রয়েছে। বাংলাদেশ ও আফগানিস্তানের মধ্যকার সিরিজের ম্যাচগুলো ৩ জুন (প্রথম টি২০), ৫ জুন (দ্বিতীয় টি২০) ও ৭ জুন (তৃতীয় টি২০) অনুষ্ঠিত হবে। এ সিরিজের আগেই ফিট হয়ে উঠেছেন বাংলাদেশ ওপেনার তামিম ইকবাল। ফিট হওয়ার সঙ্গে আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজে শুধু নিজেদের নিয়েই ভাবতে চান তামিম। অন্য কিছু নিয়ে ভাবতে রাজি নন। শনিবার নিজেদের মধ্যে প্রস্তুতি ম্যাচ হয়। প্রস্তুতি ম্যাচেও খেলেন তামিম। ইনজুরি পড়ার পর থেকে প্রথম কোন ম্যাচ খেলতে নামেন তামিম। খেলতে নামার আগে জানান, ‘আমরা আমাদেরকে নিয়ে বেশি চিন্তা করি।’ আফগান লেগ স্পিনার রশিদ খান আইপিএল কাঁপিয়ে দিচ্ছেন। তাকে নিয়েই যত চিন্তা আছে। যখনই রশিদের কথা উঠেছে, তখনই তামিম এমন কথা বলেন। জানান, ‘ বেশি যদি একটা বিষয় নিয়ে চিন্তা করেন তখন দেখা যাবে কি, যেই জিনিসটা আপনি পারেন, সেটাও আপনি পারবেন না। কারণ, আপনি খুব বেশি চিন্তা করছেন ওটা নিয়ে। ভালো বোলার (রশিদ)। ক্যারিয়ারের সেরা বোলিং করছে। এখন সব ঠিক আছে। কিন্তু ওকে (রশিদ) নিয়ে চিন্তা করা বাদে যদি আমরা আমাদেরকে নিয়ে বেশি চিন্তা করি, তাহলে খুব হেল্প হবে।’ বারবারই সাংবাদিকদের সঙ্গে তামিমের কথাবার্তায় রশিদ খান ফিরে এসেছে। তামিমের কাছে প্রশ্ন ছুড়ে গেছে, সাকিবের সঙ্গে কথা হয়েছে কিনা আফগান অস্ত্র (রশিদ) নিয়ে? তামিম বলেন, ‘এ ব্যাপারে কথা হয়নি। ও (রশিদ খান) তো আমার টিমেও ছিল একমাস, কুমিল্লায় (ভিক্টোরিয়ান্স)। অনেক সময় আপনি কথা বলেন কিছুটা ধারণা পান। কিন্তু এটা না যে সব কিছু আপনি বুঝে যাবেন। যদি তাই হতো তাহলে ও এত ভালো পারফরম্যান্স আইপিএলে করতে পারত না। ডিপেন্ড অন দ্য ডে যে আপনি উইকেটে ওকে কিভাবে রিড করছেন। কিভাবে আপনি ওকে প্লান করে খেলছেন। ওটাই সব থেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আমি পরিকল্পনা করে, ট্যাকটিক্যালি সব কিছু করে প্রস্তুত থাকতে পারি। কিন্তু আমি যদি মাঠে গিয়ে ঠিকমতো প্রয়োগ করতে না পারি তাহলে কোন লাভই হবে না। হ্যাঁ ছোট কিছু তথ্য সব সময়ই সাহায্য করে। কিন্তু নির্ভর করছে আপনি নির্দিষ্ট দিনে কিভাবে কাজ করছেন। সেটাই মূল বিষয়।’ রশিদ খান কেন টাফ? এমন প্রশ্নও তামিমের কাছে করা হয়েছে। তামিমের জবাব, ‘আমার কাছে মনে হয় ওর কুইক আর্ম এ্যাকশনটা হচ্ছে মোস্ট ডিফিকাল্ট পার্ট। ওর একটা জিনিস যেটা ছয় মাস আগেও ছিল না, এ্যাকুরেসিটা। এখন ও বেশ এ্যাকুরেট। এখন অনেক সাকসেসফুল। বিশ্বের সেরা ব্যাটসম্যানদের ডিফিট করছে। খুবই ভালো করছে। বাট এটা না যে ওকে আমরা খেলতেই পারব না। আমরা যদি নিজেদেরকে ভালো করে এপ্লাই করি তাহলে কেন না। আমি একজনের উপর ফোকাস করব, সেরকম মানসিকতা নেই। আপনাকে চিন্তা করতে হবে ওদের দলে আরও ভালোভালো খেলোয়াড় আছে। আরও অনেক ভালো বোলার আছে। শুধু একজনের পিছনে ফোকাস করলে তাহলে আপনি আগের থেকেই একটা নেতিবাচক মনোভাব তৈরি করে যাচ্ছেন। নো ডাউট ও এখন টি২০র সেরা একজন বোলার। বাট আমি সিউর যে এরকম অনেক চ্যালেঞ্জেস আমরা পাড় করে অনেক ভালো খেলে এসেছি। এটাই আশা করছি এবারও পারব।’ দুই মাস রিহ্যাবে থাকার পর কোন ম্যাচে খেলতে নেমে এক্সাইটেড তামিম, ‘অবশ্যই এক্সাইটেড। প্রায় দুই মাস আমি রিহ্যাবে ছিলাম। প্রথম অনুশীলন ম্যাচ। যেই ইনজুরি ছিল সেটা ভালোভাবে পুরোপুরি ভাবে রিকোভার করেছি। আমাদের হাতে যতটুকু ছিল তার থেকে বেশি করেছি আমরা। ফিটনেসের কাজটা বেশি করেছি। স্ট্রেন্থ নিয়েও কাজ করেছি। ফিটনেস ওয়াইজও আগের থেকে ভালো অবস্থানে আছি। সব কিছু মিলিয়ে আমি মনে করি আমার প্রত্যেকটা কাজ ঠিক করেছি।’ সঙ্গে ফিট হওয়া নিয়ে বলেন, ‘আমি বলতে পারছি ফিটনেসের দিক থেকে আগের থেকে অনেক ভালো অবস্থায় আছি। সব ঠিক। কিন্তু এটা বেঞ্চ মার্ক না। আমি মনে করি এখান থেকে আমি আরও ভালো হতে পারি। দলে আরও অনেকেই আছে। ওদের স্ট্যান্ডার্ডে যেতে হলে আমাকে আরও কঠোর পরিশ্রম করতে হবে। আরও অনেক কষ্ট করা লাগবে।’ লর্ডসে বিশ্ব একাদশের হয়ে খেলবেন তামিম। এ নিয়েও উত্তেজিত তামিম, ‘এক্সাইটমেন্ট তো অবশ্যই আছে। এরকম একটা খেলায় অংশগ্রহণ করা বড় কথা। আশা এটাই করব যে শুধু তো প্রতিনিধিত্ব করতে যাচ্ছি না। চেষ্টা করব ভালো খেলারও। যদি ভালো খেলি, তাহলে অবশ্যই ভালো লাগবে। একটা ভালো উদ্দেশ্যর জন্য যাচ্ছি। এটা আশা করব যে কারণে ওরা এই আয়োজন করছে সেটা যেন ফুলফিল হয়। এই ম্যাচের মাধ্যমে যে যথেষ্ট পরিমাণে ফান্ড রেইস করতে পারি।’ লর্ডসের অনার্স বোর্ডে বাংলাদেশ থেকে আছেন তামিম ইকবাল। সেই স্মৃতি তামিমের পুঁজি হয়ে থাকছে। তবে বিশ্ব একাদশের প্রতিনিধিত্ব করাই তামিমের কাছে বড়, ‘স্মৃতি যদি ভালো নাও থাক তো তাহলেও লর্ডসে গিয়ে ভালো লাগত। কারণ লর্ডসে আমাদের খুব বেশি খেলা হয় না। আবার ওখানে অনেক দিন পর খেলব, ওটার জন্য অবশ্যই এক্সাইটেড। বাট ওটার থেকেও ওয়ার্ল্ড ইলাভেনকে প্রতিনিধিত্ব করা আমার জন্য বড় ব্যাপার। এটার জন্য বেশি এক্সাইটেড।’ তামিম টি২০তে নিজের ব্যক্তিগত লক্ষ্যের খোলাসাও করেছেন, ‘আমাকে কি রোল দেয়া হবে সেটার ওপর ভিত্তি করে আমার লক্ষ্য ঠিক হবে। যদি বলা হয় আমাকে ইনিংসটা সাজাতে হবে, তাহলে আমি ইনিংসটা সাজাতেই হবে। যদি বলা হয় শুরু থেকেই আপনাকে চান্স নিতে হবে, তাহলে সেটাই করতে হবে। ছয় ওভারের মধ্যে আউট হয়ে গেলে আউট। ওপেনারদের মধ্যে একটা ইয়ে থাকে যে আপনাকে চান্স নিতেই হবে। যদি আমি ছয় ওভারের পর ব্যাটিং করি তাহলে আমার লক্ষ্য থাকতে যে ইনিংস বড় করা। কারণ ৬ থেকে ১৫ ওভার পর্যন্ত যেই সময়টা ওটাই মোস্ট ক্রিটিক্যাল পার্ট টি২০তে। ওখানে খুব বেশি উইকেট খরচ না করে যদি একজন ইনিংসকে ক্যারি করতে পারে তাহলে আমাদের জন্য খুব ভালো হবে। আমি চেষ্টা করব যদি ওরকম কিছু করতে পারি তাহলে গ্রেট। যেটা বললাম প্রথম ছয় ওভারে আমাকে সুযোগ নিতে হবে। যদি ছয় ওভার পাড় করে ফেলে তাহলে এটাই টার্গেট থাকবে।’
×