ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ক্রমেই ইনজুরিমুক্ত হচ্ছেন ক্রিকেটাররা

অনুশীলনে বাংলাদেশ জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা

প্রকাশিত: ০৫:৫৩, ১৪ মে ২০১৮

অনুশীলনে বাংলাদেশ জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজকে সামনে রেখে রবিবার থেকে শুরু হয়েছে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের অনুশীলন। প্রথমদিনে হয়েছে ‘বিপ টেস্ট’। ক্রিকেটারদের ফিটনেস কোন পর্যায়ে আছে তা দেখা হয়। তাতে সন্তুষ্টি মিলেছে। ইনজুরিতে পড়া ক্রিকেটাররা সেরে উঠছেন। তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহীম, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ও তাসকিন আহমেদ এখন পুরোপুরি সুস্থ হওয়ার পথে আছেন। সন্তুষ্টি মেলার সঙ্গে আছে খানিক অসন্তুষ্টিও। ‘বিপ টেস্টে’ ফেল হয়েছেন জাতীয় দলের পেসার রুবেল হোসেন, ওপেনার তামিম ইকবাল ও অভিজ্ঞ স্পিনার আব্দুর রাজ্জাক। মূলত হার্টে কতটা অক্সিজেন সঞ্চালিত হচ্ছে, ‘বিপ টেস্টে’ তাই দেখা হয়। এতে করে ফিটনেসের কি অবস্থা আছে তাও বোঝা যায়। স্ট্রেন্থ এ্যান্ড কন্ডিশনিং কোচ মারিও ভিল্লাভারায়েন সেই টেস্ট নিয়ে থাকেন। তাতে একটি মার্কও দেয়া হয়। রুবেল তাতে সবচেয়ে কম ৮.২ মার্ক পেয়েছেন। তার বিপের মাত্রা ৮.২। সাধারণত বিপ ১০ হলে ফিটনেস ঠিক ধরা হয়। এর কম হলেই সমস্যা বোঝা যায়। রুবেলের সমস্যা অনেক বেশি। তাতেই ‘বিপ টেস্টে’ ফেল মেরেছেন রুবেল। ফেল হয়েছেন তামিম ও রাজ্জাকও। তামিমের বিপের মাত্রা ৯.১৪ ও রাজ্জাকের ৯.৪। অবশ্য তাতে খুব বেশি চিন্তার কোন কারণও নেই। ফিজিওদের পরামর্শ অনুযায়ী চললেই ঠিক হয়ে যাবে। এক সপ্তাহ ঠিকমতো খাওয়া-দাওয়া করলে এবং ফিজিওদের দেয়া পরামর্শ অনুযায়ী চললেই ঠিক হয়ে যাবেন রুবেল, তামিম ও রাজ্জাক। বিপের মাত্রাও ১০ বা তার বেশি হয়ে যাবে। পেশাদার খেলোয়াড়দের জন্য বিপ পরীক্ষা করা জরুরী। আর পেসারদের জন্যতো তা আরও জরুরী। কারণ একজন পেসার টেস্টে অনেক ওভার বল করেন। যদি তার বিপ ঠিক স্থানে না থাকে, হার্টে অক্সিজেন সঞ্চালন ঠিকমত না হয়; তাহলে কয়েক ওভার বল করেই পেসার হাঁপিয়ে উঠতে পারেন। তাই পেসারদের বিপ বাড়ানো খুবই গুরুত্বপূর্ণ। রুবেল প্রথমদিনে সেই বিপ টেস্টে ফেল মার্কই পেয়েছেন। তামিম যেহেতু ব্যাটসম্যান এবং রাজ্জাক যেহেতু স্পিনার, তাদের বিপ ১০ বা তার ওপরে থাকলে ভাল, নয়তো তার কাছাকাছি থাকলেও চলে। ‘বিপ টেস্টে’ সবচেয়ে বেশি সুবিধাজনক স্থানে আছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। তার বিপের মাত্রা ১২.৫। মিরাজের পরেই আছেন ১২.১ মাত্রায় থাকা মুশফিকুর রহীম, সৌম্য সরকার ও সাব্বির রহমান। এ তিনজনের পরে আছেন ১২.০ মাত্রা নিয়ে মুমিনুল হক ও নাঈম হাসান। মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের বিপের মাত্রা ১১.৫। মাশরাফি বিন মর্তুজার ১০.৩০। জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের সবারই অবস্থা ভাল। রুবেল, তামিম ও রাজ্জাককে বাদ দিয়ে। তাদের তিনজনের ‘বিপ’ এখন বাড়ানোর কাজ চলবে। ভিল্লাভারায়েন ইনজুরিতে পড়া ক্রিকেটারদের নিয়ে বলেছেন, ‘প্রথমদিনটি (অনুশীলনের) ঠিক ছিল। প্রথমদিনে ক্রিকেটারদের কি অবস্থা, তা জানা হলো। তাসকিন, মুশি (মুশফিক), রিয়াদ ও তামিম ভাল আছেন। তারা ফিরে আসছেন।’ আর ক্রিকেটারদের ফিটনেস নিয়ে ভিল্লাভারায়েন জানান, ‘কয়েকজনের অবস্থা নিম্নদিকে আছে। তাদের সঙ্গে কাজ করতে হবে।’ ভিল্লাভারায়েনের কথাতে এও বোঝা গেছে বোলারদের নিয়ে আছে বিশেষ চিন্তা। ক্রিকেটারদের ইনজুরি হওয়াতে ফুটবল খেলা সামনে চলে আসছে। কিন্তু ভিল্লাভারায়েন সরাসরিই বলে দিয়েছেন, এটা ফুটবল খেলা থেকে হয়নি। জুলাই-আগস্টে অনুষ্ঠেয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরকে সামনে রেখে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) ৩১ সদস্যের প্রাথমিক দল ঘোষণা করেছে। ঘোষিত দলে আছেন- তামিম ইকবাল, ইমরুল কায়েস, সৌম্য সরকার, মুশফিকুর রহীম, সাকিব আল হাসান, সাব্বির রহমান রুম্মন, মাশরাফি বিন মর্তুজা, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, লিটন কুমার দাস, মুমিনুল হক, মেহেদী হাসান মিরাজ, তাইজুল ইসলাম, মুস্তাফিজুর রহমান, তাসকিন আহমেদ, নাঈম হাসান, আবু হায়দার রনি, কামরুল ইসলাম রাব্বি, রুবেল হোসেন, নুরুল হাসান সোহান, মোসাদ্দেক হোসেন, এনামুল হক বিজয়, আবু জায়েদ রাহি, নাজমুল হোসেন শান্ত, নাজমুল ইসলাম অপু, মোহাম্মদ মিঠুন, আরিফুল হক, শফিউল ইসলাম, সাদমান ইসলাম, ইয়াসিন আরাফাত, আবুল হাসান রাজু ও আব্দুর রাজ্জাক। এ দল থেকেই আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের দলও দেয়া হবে। আফগানদের বিপক্ষে জুনের ৩, ৫ ও ৭ তারিখে যথাক্রমে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় টি২০ অনুষ্ঠিত হবে। ভারতের দেরাদুনে রাত্রিতে খেলাগুলো হবে। বাংলাদেশ সময় রাত ৮টায় ম্যাচগুলো শুরু হবে। এ দুটি সিরিজের আগে যে সময়টুকু পাওয়া যাচ্ছে, শুরুতে ফিটনেস নিয়ে কাজ হচ্ছে। এই ফিটনেস ট্রেনিংয়ে থাকতে পারেননি সাকিব আল হাসান ও মুস্তাফিজুর রহমান। তারা আইপিএলে খেলার জন্য ভারতে আছেন। অনুশীলনের প্রথমদিনে ফিটনেস টেস্ট হয়েছে। আজ একদিন বিরতির পর মঙ্গলবার মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে রানিং সেশন রয়েছে। বুধবার দুই গ্রুপ করে দুপুরে ও বিকেলে হবে জিম সেশন। বৃহস্পতিবার আবার রানিং সেশন হবে। একদিন রানিং সেশন ও একদিন বিরতির পর আরেকদিন জিম সেশন চলবে। এভাবে ২০ মে পর্যন্ত প্রাথমিক দলের ক্রিকেটারদের ফিটনেস নিয়ে কাজ হবে। তারপর শুরু হবে স্কিল ট্রেনিং। যেখানে ব্যাটিং, বোলিং, ফিল্ডিংÑ সব থাকবে। ফিটনেস ট্রেনিং মারিও ভিল্লাভারায়েনের তত্ত্বাবধানেই চলবে। স্কিল ট্রেনিং চলবে এখন ছুটিতে থাকা ওয়েস্ট ইন্ডিজের কিংবদন্তি পেসার ও বাংলাদেশ দলের বোলিং কোচ কোর্টনি ওয়ালশের তত্ত্বাবধানে। তিনিই আসন্ন আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজে ভারপ্রাপ্ত প্রধান কোচের দায়িত্ব পালন করবেন।
×