ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

মঙ্গল গ্রহে নাসার নতুন অভিযান

প্রকাশিত: ০৬:৪৪, ৫ মে ২০১৮

মঙ্গল গ্রহে নাসার নতুন অভিযান

২০১২ সালের নবেম্বরে মঙ্গল গ্রহে ন্যাশনাল এ্যারোনটিকস এ্যান্ড স্পেস এ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (নাসা) পাঠানো মহাকাশযান উৎক্ষেপণের পর এই প্রথম ইনসাইট নামে আরেকটি মহাকাশযান উৎক্ষেপণ করা হবে। এর কাজ হবে মঙ্গলের ভূমিকম্প ও পাথুরে মাটির রহস্য উন্মোচন করা, যাতে বিজ্ঞানীরা বুঝতে পারেন যে, সেটি পৃথিবী থেকে কতটা আলাদা। খবর এএফপির। যদি সব পরিকল্পনা সফল হয় তবে ক্যালিফোর্নিয়ার ভ্যানডেনবার্গ এয়ার ফোর্স বেস থেকে স্থানীয় সময় শনিবার সকাল সাতটা পাঁচ মিনিটে মহাকাশযানটি উৎক্ষেপণ করা হবে। এটি নবেম্বরের ২৬তারিখ মঙ্গলের মাটিতে অবতরণ করবে। ধারণা করা হয়, পৃথিবী ও মঙ্গল চার শ’ ৫০ কোটি বছর আগে একই প্রক্রিয়ায় গঠিত হয়েছে। মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার আশা, মহাকাশযানটি মাটির ভিন্নতার ওপর বিশেষ আলোকপাত করবে, যা সিসমিক ইনভেস্টিগেশন ব্যবহার করে ইনটেরিওর এক্সপ্লোরেশন, জিওডেসি এ্যান্ড হিট ট্রানপোর্ট করবে। ইনসাইটের লক্ষ্য, মঙ্গলের ভূমিকম্পের একটি বিচ্ছিন্ন বিন্দু শনাক্ত করা। যাকে নাসা একটি ফ্ল্যাশ বাল্ব বলে বর্ণনা করেছে। এটি গ্রহটির অভ্যন্তরের কাঠামোকে আলোকিত করবে। মহাকাশযানটি তিনটি যন্ত্র ব্যবহার করে তথ্য সংগ্রহ করবে। যার মধ্যে একটি হলো সিসমোমিটার। এটি মঙ্গলের ভূ-অভ্যন্তরে অভ্যন্তরীণ কাঠামোর ভূতাত্ত্বিক পরীক্ষা করবে। ফরাসী স্পেস এজেন্সি যন্ত্রটি তৈরি করেছে। অভিযানের হৃৎপিন্ড হচ্ছে এই সিসমোমিটার। মহাকাশযানটি মঙ্গলে অবতরণ করার পর এর রোবোটিক বাহু আস্তে করে নিজের হাতটি টেনে বের করবে এবং মাটিতে তা বসাবে। বিজ্ঞানীরা আশা করছেন, মিশন চলাকালে প্রায় এক শ’টি ভূমিকম্প হবে। অধিকাংশ ভূমিকম্পই রিখটার স্কেলে ৬ এর নিচে হবে। সিসমিক তরঙ্গ কিভাবে মঙ্গলের ভূত্বক, আবরণ ও অভ্যন্তরের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হবে তা অধ্যয়ন করে বিজ্ঞানীরা স্তর তৈরি করবেন এবং তার গভীরতা জানতে পারবেন। দ্বিতীয় প্রধান উপকরণটি মঙ্গলের নিজস্ব হ্যামারিং ব্যবস্থার ওপর উপরিভাগের তাপের প্রবাহ পর্যবেক্ষণ করবে। হিট ফ্লো এ্যান্ড ফিজিক্যাল প্রোপারটিজ প্যাকেজের আওতায় এটি জার্মান স্পেস এজেন্সির সঙ্গে পোলিশ স্পেস এজেন্সির অংশগ্রহণে তৈরি হয়েছে। আগের সব মঙ্গল অভিযান থেকে এই প্রোবটি ১৫গুণ বেশি গভীর। আগের মিশনগুলোর এই প্রোবটি দশ থেকে ১৬ফুট (তিন থেকে পাঁচ মিটার) গভীর ছিল। তৃতীয় যন্ত্রটি মঙ্গলের উপরিভাগে ঘুরতে থাকবে তার সঠিক অবস্থান নির্ণয় করার জন্য। যাতে পৃথিবীর বিজ্ঞানীরা সঠিকভাবে তথ্য পান। মহাকাশযান তৈরি ও রকেট উৎক্ষেপণের জন্য যুক্তরাষ্ট্র ৮১ কোটি ৩৮লাখ মার্কিন ডলার ব্যয় করেছে। এতে ফ্রান্স ও জার্মানির তৈরি যন্ত্রপাতির জন্য ব্যয় হয়েছে ১৮ কোটি মার্কিন ডলার। ছোট একজোড়া মহাকাশযানও রকেটের সঙ্গে উৎক্ষেপণ করা হবে যে জন্য এক কোটি ৮৫লাখ মার্কিন ডলার ব্যয় হয়েছে। মার্স কিউব ওয়ান (মারকো) নামে ব্রিফকেস আকারের একটি উপগ্রহও মঙ্গল গ্রহের উদ্দেশে ইনসাইটকে অনুসরণ করে উড়ে যাবে।
×