ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

আমিন জুয়েলার্সের স্বর্ণ চুরির ঘটনা

মূলহোতা সোবহানসহ ৪ জন গ্রেফতার, ৪৯৮ ভরি স্বর্ণ ও ২০ লাখ টাকা উদ্ধার

প্রকাশিত: ০৬:৩০, ১৯ এপ্রিল ২০১৮

মূলহোতা সোবহানসহ ৪ জন গ্রেফতার, ৪৯৮ ভরি স্বর্ণ ও ২০ লাখ টাকা উদ্ধার

স্টাফ রিপোর্টার ॥ রাজধানীর গুলশান-২ ডিসিসি মার্কেটে আমিন জুয়েলার্সের স্বর্ণ চুরির ঘটনায় মূলহোতা সোবহানসহ চারজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ সময় তাদের কাছ থেকে ৪৯৮ ভরি স্বর্ণ ও ২০ লাখ ২৬ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়। বুধবার সকাল পর্যন্ত গোপালগঞ্জ, চাঁদপুর ও মাওয়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা হলো- মোঃ আব্দুস সোবহান মোলা (৬১), তার স্ত্রী আলেয়া বেগম (৫৫), মেয়ে সীমা (২৭) ও মেয়ের জামাই হাফেজ মোঃ বিলাল হোসেন ওরফে বুলবুল (৪০)। তবে এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত আরেক আসামি সাদ্দাম এখনও পলাতক রয়েছে। এখনও ১৮২ ভরি স্বর্ণ উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। বুধবার গুলশান থানায় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশের উপ-কমিশনার (ডিসি) মোস্তাক আহমেদ এ তথ্য জানান। তিনি জানান, ‘শো-রুমের নিরাপত্তাকর্মী ও রাজমিস্ত্রি সাদ্দাম পরিকল্পিতভাবে এই চুরির ঘটনা ঘটায়। গত ১৪ তারিখ রাতে তারা শো-রুমের ছাদ কেটে ভেতরে ঢুকে স্বর্ণ ও টাকা চুরি করে। পরে ছাদের কাটা অংশে ঢালাই দিয়ে বন্ধ করে তার ওপর একটি ড্রাম দিয়ে ঢেকে পালিয়ে যায়। এরপর সোমরাব দোকান খুলে মালিক এই চুরি ঘটনা টের পান। থানায় মামলা দায়ের করলে পুলিশ তদন্তে নামে। এরপর ওই শো-রুমের নিরাপত্তাকর্মী সোবহানকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পরে সন্দেহ হলে তার শরীরে বিভিন্ন স্থানে কাটা ছেঁড়া দেখে এর কারণ জানতে চায় পুলিশ। তারপর পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে চুরির ঘটনা সে স্বীকার করে। তার দেয়া তথ্য অনুযায়ী অভিযান চালিয়ে ৪৯৮ ভরি স্বর্ণ ও ২০ লাখ ২৬ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে ডিসি মোস্তাক আহমেদ বলেন, এই ঘটনায় পলাতক এক আসামিকে গ্রেফতার ও চুরি যাওয়া বাকি ১৮২ স্বর্ণ উদ্ধারে রাজধানী ও এর আশপাশে বিভিন্ন স্থানে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গ্রেফতারের পর আসামিদের ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হয়। এসব স্বর্ণ ও টাকা উদ্ধারের ঘটনায় গুলশান থানা পুলিশের তিনটি টিম কাজ করেছে। তদন্ত টিমের কর্মকর্তারা জানান, নিরাপত্তাকর্মী সোবহানের বাড়ি গোপালগঞ্জে। চুরির পর তার স্ত্রী এসব স্বর্ণ নিয়ে পালিয়ে যায়। পরে গোপালগঞ্জের নিলফা গ্রামের নজর লের বাড়ি থেকে ২৫৩ ভরি স্বর্ণসহ তাকে গ্রেফতার করা হয়। বাকি স্বর্ণ মাওয়া ও মানিকগঞ্জ থেকে উদ্ধার করা হয়। এদিকে, গুলশান-২ এর ডিসিসি মার্কেট আমিন জুয়েলার্সের শো-রুমের মালিক কাজী সিরাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ‘শো-রুমের নিরাপত্তাকর্মী সোবহান দীর্ঘ ১৮ বছর ধরে আমাদের সঙ্গে কাজ করছে। আমরা ভাবতেও পারিনি, সে এমন চুরির ঘটনা ঘটাবে। সে আমাদের খুব বিশ্বাসী ছিল। ‘পহেলা বৈশাখে আমাদের বেশি বিক্রি হয়। ওইদিন বিক্রি শেষে রাত ১০টার পরে দোকান বন্ধ করে চলে যাই। রবিবার সাধারণত দোকান বন্ধ থাকে। তাই সোমবার সকালে এসে দোকান খুলে দেখি জুয়েলারি বাক্সের ভেতর থেকে স্বর্ণ নিয়ে গেছে। পরে বিষয়টি থানায় জানানো হলে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে তদন্ত শুরু করে। কাজী সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘যখন শো-রুমের ছাদে কাজ চলছিল তখন সাদ্দাম ও সোবহানকে জিজ্ঞাসা করলে সব সময় ওরা বলত যে স্যার সব কিছু ঠিক আছে, কোন সমস্যা নেই। ‘কিন্তু ওদের বিশ্বাস করায় দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে পরিকল্পিতভাবে এই চুরির ঘটনা ঘটায় তারা।’ পুলিশকে ধন্যবাদ দিয়ে কাজী সিরাজুল ইসলাম বলেন, এ পর্যন্ত যতগুলো জুয়েলারি দোকানে চুরির ঘটনা ঘটেছে, সেগুলোর মধ্যে খুব কম সময় পুলিশ অভিযান পরিচালনা করে আসামি গ্রেফতার করতে পেরেছে। আর উদ্ধারের পরিমাণও অনেক।
×