ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৫ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১

অভিমত ব্যাডমিন্টন এশিয়ার ডেভেলপমেন্ট ম্যানেজার আরিক্রিশনানের, ব্যাডমিন্টন কোচদের ট্রেনিং ও চার বছরের চুক্তি

‘২০২৪ অলিম্পিকে বাংলাদেশকে থাকতে হবে’

প্রকাশিত: ০৬:৩৩, ১২ এপ্রিল ২০১৮

‘২০২৪ অলিম্পিকে বাংলাদেশকে থাকতে হবে’

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ সস্প্রতি বাংলাদেশ সফরে এসেছিলেন ব্যাডমিন্টন এশিয়ার ডেভেলপমেন্ট ম্যানেজার থানা আরিক্রিশনান। বাংলাদেশ ত্যাগের আগে তিনি জানিয়ে গেছেন বাংলাদেশকে নিয়ে তাদের সংস্থার পরিকল্পনা ও আশার কথা। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এশিয়ার ৪৫ দেশকে ব্যাডমিন্টনের ক্ষেত্রে এগিয়ে নেয়াই আমাদের মূল লক্ষ্য। বাংলাদেশও এই দেশগুলোর একটি। এ জন্যই আমার এখানে আসা। এখানে এসে শাটলার, কোচ, খেলার অবকাঠামো... সবকিছুই পর্যবেক্ষণ করেছি। এখন ফিরে গিয়ে এগুলোর আরও উন্নতিকল্পে পরিকল্পনা করে তার বাস্তবায়ন ঘটনোর চেষ্টা করব।’ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বর্তমানে ভারতই সবচেয়ে এগিয়ে আছে ব্যাডমিন্টন সাফল্যে। থানাও চান এই অঞ্চলের বাকি দেশগুলোকেও এই খেলাটিতে শক্তিশালী করতে। ‘আমাদের ভবিষ্যত লক্ষ্য দক্ষিণ এশিয়ার এই দেশগুলোকে ব্যাডমিন্টনের পরাশক্তি হিসেবে তৈরি করা।’ বাংলাদেশের শাটলাররা বেশি পরিমাণে আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে অংশ নিয়ে ভাল ফল করলে সেটার সুপ্রভাব পড়বে তাদের র‌্যাঙ্কিংয়ে। এতে করে অলিম্পিক বাছাইয়ে খেলার যোগ্যতা অর্জন করবে তারা। এ প্রসঙ্গে থানার ভাষ্য, ‘আমরা চাই আগামী ২০২৪ অলিম্পিকে যেন অবশ্যই বাংলাদেশের শাটলাররা খেলতে পারে। এভাবেই অগ্রসর হতে হবে তাদের। তবে তার আগে তাদের নিজ দেশের বা জাতীয় পর্যায়ের ব্যাডমিন্টনের অবকাঠামোর উন্নয়ন ঘটাতে হবে। আপাতত আমরা তাদের এ বিষয়টি নিয়েই সাহায্য করতে চাই।’ বাংলাদেশ ব্যাডমিন্টন ফেডারেশন খেলাটির উন্নয়নে বেশ আন্তরিক এবং সক্রিয়। তারা বেসরকারী পৃষ্ঠপোষক প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে পৃষ্ঠপোষকতাও সংগ্রহ করার চেষ্টা করছেন। ব্যাডমিন্টন এশিয়াও তাদের এ ব্যাপারে অবশ্যই সাধ্যমতো সহযোগিতা করবে বলে আশ্বাস দেন থানা। তিনি আরও জানানÑ আগামী ডিসেম্বরে বাংলাদেশে একটি সিনিয়র এবং একটি জুনিয়র আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত হবে ব্যাডমিন্টন এশিয়ার অর্থায়নে। ব্যাডমিন্টন খেলার বিভিন্ন সামগ্রী বেশ ব্যয়বহুল। বাংলাদেশের শাটলারদের কাছে এগুলো সহজলভ্য করার জন্যও কাজ করে যাচ্ছে ব্যাডমিন্টন এশিয়া। বাংলাদেশের ব্যাডমিন্টন উন্নয়নে ব্যাডমিন্টন এশিয়ার সহযোগিতা শুধু প্রধান শহরকেন্দ্রিক থাকবে না, এটি দেশের সর্বত্রই ছড়িয়ে দেয়া হবে। নইলে প্রতিভা উঠে আসবে না। সাবেক জাতীয় চ্যাম্পিয়ন শাটলার এনায়েত উল্লাহ খান। তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশে অনেক মেধাবী শাটলার আছে। সাম্প্রতিক সময়ে একটি ট্যালেন্ট হান্ট প্রোগ্রাম হয়েছে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের অধীনে। বাংলাদেশ ব্যাডমিন্টন ফেডারেশনের অধীনেও শীঘ্রই আরেকটি ট্যালেন্ট হান্ট প্রোগ্রাম হবে। এখান থেকে বাছাই করা সেরা শাটলারদের নিয়ে দুই বছর মেয়াদী একটি প্রশিক্ষণ ক্যাম্পের আয়োজন করার চিন্তা-ভাবনা করা হচ্ছে। এই পরিকল্পনা যদি বাস্তবে রূপ দেয়া যায় তাহলে এশিয়ান অলিম্পিক প্রজেক্টের (এওপি) আওতায় আমাদের ভিশন ২০২৪ বাস্তবায়িত হবে। আর তাহলে আমরা অলিম্পিকে খেলতে পারব এবং ভাল কিছু ফল করতে পারব বলে আশাকরি।’ ক্রিকেট-ফুটবলের জনপ্রিয়তায় এদেশ অনেক পিছিয়ে ব্যাডমিন্টনে। দেশের নতুন ও তরুণ প্রজন্মকে কিভাবে আকৃষ্ট করা যাবে এই খেলাটিতে? এনায়েতের উত্তর, ‘কিছুদিন আগে ব্যাডমিন্টন অস্ট্রেলিয়ার সহযোগিতায় আমরা শাটল টাইম প্রোগ্রাম করেছি দেশের বিভিন্ন স্থানে। এতে ব্যাপক সাড়া পেয়েছি। এটা মূলত ব্যাডমিন্টন খেলা শুরু করতে চায় নবাগত শাটলারদের জন্য। পরের মাসেই আমরা এই প্রোগ্রামের পরবর্তী ১০টি পর্ব নিয়ে কাজ শুরু করব। তাছাড়া আমি মনে করি ব্যাডমিন্টন এদেশে মোটেও অজনপ্রিয় খেলা নয়। বরং ক্রিকেটের পরেই এর স্থান। দেশের আনাচে-কানাচে অনেকটা নীরবেই এই খেলা হয়ে থাকে বলে সেভাবে আসলে চোখে পড়ে না। থানাও সহমত পোষণ করেন এনায়তের সঙ্গে, ‘ভারতে কিন্তু জনপ্রিয়তায় ক্রিকেটকে ছাড়িয়ে গেছে ব্যাডমিন্টনে। কেননা আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে বর্তমানে ক্রিকেটের চেয়ে ব্যাডমিন্টনেই সাফল্য বেশি। এ জন্য দেশটির তরুণ প্রজন্ম ক্রিকেটার হওয়ার চেয়ে ব্যাডমিন্টন খেলতেই বরং বেশি আগ্রহী।’ ভাল শাটলার তৈরিতে প্রয়োজন ভাল কোচও। এ প্রসঙ্গে এনায়েত বলেন, ‘আগে আমাদের ভাল কোচের অভাব থাকলেও এখন সেই অবস্থার উন্নতি হয়েছে। ইতোমধ্যেই বাংলাদেশে লেভেল-১ কোচের সংখ্যা ১১। কিছুদিন আগে নেপালে একটি কোচেস ট্রেনিং হয়েছিল। সেখানে ৪১ জনের মধ্যে আমি তৃতীয় এবং আমার স্ত্রী এলিনা সুলতানা পঞ্চম হয়েছিল।
×