ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

জাতিসংঘের সন্ত্রাসী তালিকায় ॥ পাকিস্তানের ১৩৯ ব্যক্তি, সংগঠন

প্রকাশিত: ০৫:৪০, ৫ এপ্রিল ২০১৮

জাতিসংঘের সন্ত্রাসী তালিকায় ॥ পাকিস্তানের ১৩৯ ব্যক্তি, সংগঠন

পাকিস্তানের ১৩৯ ব্যক্তি ও সংগঠনকে সমন্বিত সন্ত্রাসী তালিকাভুক্ত করেছে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ। মঙ্গলবার ওই তালিকা হালনাগাদ করা হয়। এরা আইমান আল জাওয়াহিরির আলকায়েদা থেকে লস্কর ই তৈয়বা (এলইটি) পর্যন্ত বিভিন্ন গ্রুপের সদস্য। তারা পাকিস্তানী নাগরিক না হলেও সেদেশের ভূখন্ড ব্যবহার করে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালিয়ে থাকে বলে অভিযোগ রয়েছে। ডন ও টাইমস অব ইন্ডিয়া। তালিকায় সবার ওপরে থাকা ব্যক্তিটি আইমান আল জাওয়াহিরি। ওসামা বিন লাদেন নিহত হওয়ার পর তিনি আল কায়েদার দায়িত্ব নিয়েছেন বলে ধারণা করা হয়। তিনি পাক-আফগান সীমান্তের কোথাও আত্মগোপন করে আছেন বলে জাতিসংঘের ওই প্রতিবেদনে ধারণা প্রকাশ করা হয়েছে। তার কিছু অনুসারীও একসঙ্গে আত্মগোপনে রয়েছে বলে প্রতিবেদনে মন্তব্য করা হয়েছে। তাদের নামও ওই তালিকায় রয়েছে। এরপর তালিকায় দ্বিতীয় যার নাম রয়েছে তিনি রামজি বিনাল শেইবাহ। ইয়েমেনের ওই নাগরিককে করাচীতে আটক করার পর মার্কিন কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দেয়া হয়েছে। হাফিজ সাইদ সম্পর্কে মন্তব্য করা হয়েছে যে, তাকে ইন্টারপোল খুঁজছে। তার বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কর্মকা-ে জড়িত থাকার অভিযোগ আনা হয়েছে। এই ক্যাটাগরিতে এক ডজনের বেশি সন্ত্রাসীর নাম রয়েছে। এদের অনেককে আটক করার পর মার্কিন কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দেয়া হয়েছে। তাদের বেশিরভাগের পাকিস্তানী পাসপোর্ট রয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যে পাকিস্তানের মিশনগুলো এসব পাসপোর্ট ইস্যু বা নবায়ন করেছে। হাফিজ সাইদকে সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে জড়িত থাকার জন্য ইন্টারপোলের ওয়ান্টেড হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। এলইটির মিডিয়া কন্টাক্ট হাজি ইয়াহিয়া মুজাহিদ ও সাইদের কয়েকজন ডেপুটিও এ তালিকায় রয়েছেন। যাদের মধ্যে আব্দুস সালাম এবং জাফর ইকবালের নাম ঠিক সাইদের পরেই এসেছে। তাদেরও ইন্টারপোল খুঁজছে। তালিকায় এলইটি এবং এর অঙ্গসংঠন আল মানসুরিয়ান, পাসবান ই কাশ্মীর, পাসবান ই আহলে হাদিস, জামাত উদ দাওয়া এবং ফালাহ ই ইনসানিয়াত ফাউন্ডেশন রয়েছে। সংগঠনগুলো পাকিস্তানের ভূখন্ড ব্যবহার করে তাদের কর্মকান্ড চালিয়ে থাকে বলে অভিযোগ রয়েছে। এরা হয় পাকিস্তানের ভূখন্ড ব্যবহার করছে অথবা পাকিস্তানী নাগরিকদের পৃষ্ঠপোষকতা পাচ্ছে। কোন কোন সংগঠন পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের সীমান্ত এলাকা ব্যবহার করছে। যুক্তরাষ্ট্র সোমবার হাফিজ সাইদের রাজনৈতিক দল মিল্লি মুসলিম লীগকে (এমএমএল) জঙ্গী সংগঠনের তালিকাভুক্ত করেছে। লস্কর ই তৈয়বার শাখা হিসেবেই দলটি গঠিত হয়েছিল। ট্রাম্প প্রশাসন বলেছে যে, সেটি কোন রাজনৈতিক দল নয়। দলটি পরবর্তী সাধারণ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য তৈরি হচ্ছিল। ২০০৮ সালে সংঘটিত মুম্বাই হামলার জন্য হাফিজ সাইদকে দায়ী বলে ভারত দাবি করে। এমএমএলের পাশাপাশি তেহরিক-ই-আজাদি-ই-কাশ্মীরি (টিএজেকে)-কেও জঙ্গী সংগঠনের তালিকাভুক্ত করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। দু’টি সংগঠনই পাকিস্তানে প্রকাশ্যে জঙ্গী কার্যকলাপ চালায় বলে হোয়াইট হাউসের বিবৃতিতে দাবি করা হয়েছে। এতে আরও বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র জঙ্গী কার্যকলাপকে সমর্থন করে না। যুক্তরাষ্ট্র কালো তালিকাভুক্ত করায় দলটির পক্ষে স্বাধীনভাবে রাজনৈতিক কর্মকান্ড চালিয়ে যাওয়া কঠিন হবে। এলইটি সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে রাজনৈতিক দল গঠন করা মৌলিক মানবাধিকারের মধ্যে পড়ে। ট্রাম্প প্রশাসনের এই সিদ্ধান্ত যুক্তরাষ্ট্রের মৌলিক আদর্শেরও বিপক্ষে যায় বলে দলটি দাবি করেছে। তালিকায় অন্যদের মধ্যে রয়েছে মাফিয়া ডন দাউদ ইব্রাহিমের নামও। তিনি ভারতীয় নাগরিক। তবে নিরাপত্তা পরিষদের দেয়া তথ্য মতে দাউদের একাধিক পাকিস্তানী পাসপোর্ট রয়েছে। করাচী ও রাওয়ালপিন্ডি থেকে এসব পাসপোর্ট ইস্যু করা হয়েছে। এছাড়া করাচীতে তার প্রাসাদের মতো বাড়ি রয়েছে বলে জাতিসংঘ সূত্রে জানান হয়েছে।
×