ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

মালেকা খান

একাত্তরের শহীদ লে. আতিক

প্রকাশিত: ০৫:২০, ১ এপ্রিল ২০১৮

একাত্তরের শহীদ  লে. আতিক

ভাই-বোনদের মধ্যে আমি সবার বড়। আতিক পঞ্চম। বড় বোন হিসেবে আতিককে মাস তিনেক বয়সেই কোলে নেয়া, ঘুম পাড়ানো, ওর কাপড়চোপড় সবকিছু ভাঁজ করে গুছিয়ে রাখার দায়িত্ব পড়ে আমার ওপর। শিশু আতিকের যত্ন-আত্মি করতে গিয়েই তাকে ছোটবেলা থেকে খুব কাছ থেকে দেখার ও জানার সুযোগ হয়। যেমন- খিদে না পেলে আতিক কখনও কাঁদত না। খলখলিয়ে হাসত। প্রথম জন্মদিনে এক পা দু’পা করে হেঁটেছে। আমরা তো দারুণ খুশি। দু-তিন বছরের আতিক ছিল হৃষ্ট-পুষ্ট শিশু। স্বভাবে ছিল শান্তশিষ্ট। যে পোশাক পরাতাম বিনা আপত্তিতে তা-ই পরত। একটুও বিরক্ত করত না। ছোট বয়সেই বেশ বুদ্ধিমান ছিল আতিক। একবার এক শিশুদিবসে ‘বেবি শো’ দেখতে গেলাম সুরুজ ভাইয়ের সঙ্গে। ‘বেবি শো’ আয়োজন করা হয়েছিল সদরঘাটের লেডিজ পার্কে। মঞ্চের দু’পাশে অতিথিদের বসার ব্যবস্থা। প্রতিযোগিতার জন্য তালিকাভুক্ত শিশুদের লম্বা লম্বা বেঞ্চে বসানো হয়েছে। ডাক্তার শিশুদের স্বাস্থ্য ও ওজন দেখছে। দেখছে পরিচ্ছন্নতা ও সার্বিক পরিপাটির বিষয়টিও। সবাই শিশুদের উৎসাহিত করছে হাততালি দিয়ে। মাঠের চতুর্দিক দড়ি দিয়ে ঘেরা। দড়ির বাইরে সাধারণ দর্শনার্থীদের দাঁড়াবার ও অনুষ্ঠান দেখার সুযোগ। আতিক সুরুজ ভাইয়ের হাত ধরে দাঁড়িয়ে আছে আমাদের সঙ্গে। হঠাৎ বেবি শো-এর দুই কর্মকর্তা আতিককে দেখিয়ে বললেন, এই বেবির সঙ্গে কে এসেছে? আমরা হাত উঠিয়ে বললাম ‘ওর সঙ্গে আমরা এসেছি’। কর্মকর্তা দুজন এরপর সুন্দর পরিপাটি পোশাক পরা আর মায়াভরা চেহারার আতিককে কোলে করে ভিক্টোরি স্ট্যান্ডের কাছাকাছি নিয়ে গেলেন। আতিক কিন্তু ‘বেবি শো’-এর কোন প্রতিযোগী ছিল না। আতিক নির্বিকার, কোন ভয়-ডর নেই। আমরা দেখলাম ডাক্তার আতিকের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করছে, ওজন নিচ্ছে। আতিকের সঙ্গে কথা বলছে। আমরা দূর থেকে শুধু দেখছি। কিছুই শুনতে পাইনি। সাধারণ একটি শিশু, যার নাম আতিক, বেবি শোতে সে হয়েছে ‘ফার্স্ট’। বারবার আতিকের নাম ঘোষণা হচ্ছে। আমরা ভাই-বোনরা আনন্দে কেঁদেই ফেললাম। সকল দর্শক করতালি দিয়ে আতিককে অভিনন্দিত করতে লাগল। ভিক্টোরি স্ট্যান্ডে সবার ওপরে আতিক; আর এক ধাপ নিচে দু’পাশে সেকেন্ড ও থার্ড হওয়া দুই শিশু দাঁড়িয়ে। আতিক নিজেই হাততালি দিচ্ছে আর হাসছে। পরদিন খবরের কাগজে এই ছবিটা ছাপা হয়েছিল। এই সাফল্যে পাড়ার সবাই খুশি। দু-তিনদিন কেবল আতিকের এই অর্জনই আলোচনার বিষয় হলো এবেলা-ওবেলা। আতিকের জন্ম ১৫ জানুয়ারি ১৯৫১। তিন বছর পার হলে বাবা তাকে স্কুলে ভর্তি করলেন। প্রকৌশলী পিতার অফিসের উল্টো পাশেই আতিকের স্কুল। স্কুলের নাম সেন্ট জ্যাভিয়ার্স কনভেন্ট। আতিক ভর্তি হলো কেজি ওয়ানে। তারপর কনভেন্টের পড়া শেষ হলে আবার ভর্তি হলো সেন্ট গ্রেগরি স্কুলে। দু’টোই ইংরেজী মাধ্যম স্কুল। স্কুলে আতিক বরাবরই ভাল ছাত্র ছিল। সে বাবার সঙ্গে ইংরেজীতে কথাবার্তা বলত, আর আমরা অবাক হতাম। তবে আতিক ছিল একদিকে সহজ-সরল কিন্তু চঞ্চল, অন্যদিকে আত্মসম্মানবোধসম্পন্ন ও পরিচ্ছন্ন স্বভাবের। খেলাধুলাতেও সে বরাবরই ভাল ছিল। তবে আতিক সম্পর্কে আমাদের বাবা বলতেন, ‘ছেলেটা আমার মতো দুরন্ত হলো না’। আতিক যখন ক্লাস সিক্সে পড়ে তখন আমার বাবা সিদ্ধান্ত নিলেন তিনি গ্রামের যে স্কুল থেকে ম্যাট্রিক পাস করেছেন আতিকও সেই স্কুল থেকেই ম্যাট্রিক পরীক্ষা দেবে। কাজেই বাবার সিদ্ধান্তকে মর্যাদা দিয়ে মাকে ঢাকার সংসার গুটিয়ে দাদুর বাড়ি ময়মনসিংহ জেলার রসুলপুরে যেতে হলো। বাবার স্কুল ধলা হাইস্কুলে আতিককে ভর্তি করা হলো। আমাদের গ্রাম রসুলপুর থেকে ধলা হাইস্কুলের দূরত্ব দুই মাইল। কখনও পায়ে হেঁটে, কখনওবা সাইকেলে চড়ে স্কুলে যেত আতিক। আমার যখন বিয়ে হয় তখন আতিক সিক্সে পড়ে। ম্যাট্রিক পাস করে ঢাকার জগন্নাথ কলেজে আইএসসিতে ভর্তি হয়। বিএসসি সেকেন্ড ইয়ারে পড়ার সময় সামরিক বাহিনীর কমিশন অফিসার পদে যোগদানের জন্য একান্ত নিজস্ব চিন্তায় আবেদন করে, যা ছিল আমাদের কাছে অজানা। ঢাকায় সে আমার কাছেই থাকত। ফলে অন্য ভাই-বোনের তুলনায় আতিককে কাছে দেখার, জানার ও বোঝার সুযোগ আমি বোধ হয় একটু বেশিই পেয়েছি। কলেজ থেকে সে তাড়াতাড়ি বাসায় ফিরে আসত। তার প্রধান আকর্ষণ ছিল দাবা খেলা। দাবা খেলায় আমরা সবাই ছিলাম আতিকের শিষ্য। দাবা সে খুব ভালই রপ্ত করল। নিজে খেলত এবং এটাও সে মনেপ্রাণে চাইত যে, বাসার অন্যরাও যেন ভাল দাবাড়ু হয়। তার আরও শখ ছিল সবাই মিলে ঘুরে বেড়ানো, নয়ত ছুটির দিনে সিনেমা দেখা। একা থাকলে সে সময় কাটাত বই পড়ে ও গান শুনে। সজীব একহারা গড়নের সংস্কৃতমনা প্রাণোচ্ছল আতিককে পরিবারের সবাই ভালবাসত। আমার স্বামী অধ্যাপক সাখাওয়াত আলী খান ছিলেন আতিকের সাংস্কৃতিক চেতনা ও যুক্তিগ্রাহ্য চিন্তার উন্মেষের প্রধান সহায়ক। বই পড়ার এবং পড়ার পর বইটি নিয়ে আলাপ-আলোচনার ক্ষেত্রে তাদের মধ্যে একটা সখ্যর সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল। হাতে ধরে আতিককে তিনি বাংলা, এমনকি মাঝে মাঝে ইংরেজিও পড়াতেন। বাংলা সাহিত্যে মূলত তাঁর কাছেই হয়েছিল আতিকের হাতেখড়ি। বিজ্ঞানের ছাত্র হয়েও আতিক দিন দিন বাংলা সাহিত্যের প্রতি দারুণ অনুরাগী হয়ে উঠেছিল। আতিক আইএসএসবিতে টিকে যাওয়ার পর আমরা নিশ্চিত হলাম যে, তাকে পশ্চিম পাকিস্তানের কাকুলস্থ মিলিটারি একাডেমিতে ট্রেনিংয়ে যেতে হবে। বাবা-মা তখনও জানেন না আতিক কাকুল যাচ্ছে। বাবা-মা তার এই সিদ্ধান্ত মেনে নেবেন কিনা তা নিয়ে আমরা চিন্তায় ছিলাম। পশ্চিম পাকিস্তানীদের সঙ্গে তখনই বাঙালীর সম্পর্ক দিন দিন খারাপ হচ্ছিল। যা হোক, শেষ পযর্ন্ত সবাই জানল আতিক কাকুল মিলিটারি একাডেমিতে যাচ্ছে ট্রেনিং নিতে। আমি আর আমার স্বামী গেলাম বিমানবন্দরে তাকে বিদায় জানাতে। বিমানবন্দরে আমরা দেখলাম কাকুলে যাওয়ার জন্য আতিকের সহযাত্রী আরও বেশকিছু যুবক। উদ্দেশ্য একই। এতগুলো টগবগে বাঙালী তরুণকে একসঙ্গে দেখে আতিকের সম্পর্কে আমাদের উদ্বেগ অনেকটাই কমে গেল। ভবিষ্যতের বাঙালী সেনা অফিসারদের নিয়ে বিমানটি আকাশে উড়ল। যতক্ষণ দেখা যায় ততক্ষণ আমরা আকাশে বিমানটির দিকে তাকিয়ে থাকলাম। আতিক আমাকে কাকুল থেকে প্রায়ই চিঠি লিখত। খামে পরিবারের অন্যদের নামেও আলাদা চিঠি থাকত। এক সময় ট্রেনিং শেষে কমিশন পেয়ে সেকেন্ড লেফটেনেন্ট আতিক ফিরে আসল ঢাকায়। তার পোস্টিং হলো কুমিল্লা সেনানিবাসে। সেখানে জয়েন করে দুদিনের ছুটি নিয়ে এসে বাবা-মা ও আমাদের সবার সঙ্গে দেখা করে আবার কুমিল্লা ফিরে গেল। ১৯৭০ সালের নবেম্বর মাসে বাংলার দক্ষিণাঞ্চলে স্মরণাতীতকালের প্রবল ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে লাখ লাখ মানুষ প্রাণ হারায়। জানমালের ক্ষতি হয় বর্ণনাতীত। এক কথায় বিশাল এলাকা সম্পূর্ণ তছনছ, ল-ভ-। এ অঞ্চলে অবস্থানকারী সেনাবাহিনী, বিশেষ করে বাঙালী সৈন্য ও অফিসাররা ছুটে গেল উপদ্রুত এলাকায়। আতিকও ছিল একজন উদ্ধারকর্মী। নিজ হাতে আতিক অনেক লাশ উদ্ধার করেছে। অন্যদের সঙ্গে মিলে দূরবর্তী এলাকায় লাশ নিয়ে দাফন করেছে। আমার মনে আছে, ত্রাণ কার্যে নিয়োজিত আতিকের ছবি প্রকাশিত হয়েছিল ইত্তেফাকে। আমরা সেই ছবি দেখে দারুণ গর্বিত। একবুক পানিতে দাঁড়িয়ে উদ্ধার কাজ করছে এক বাঙালী সেনা অফিসার। সে আমাদের আতিক। সে সময়কার এবং পরবর্তীকালের বাঙালীর সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সবারই জানা। সেই ইতিহাস পাকিস্তানীদের হাতে পৃথিবীর জঘন্যতম গণহত্যার ইতিহাস। সেই নৃশংসতা, বর্বরতা ও বিশ^াসভঙ্গের ওপর অনেক লেখালেখি হয়েছে। আমার দুর্বল লেখনীর সামর্থ্য নেই তা প্রকাশ করার। শুধু প্রসঙ্গক্রমে বলছি, সেই তা-বে পশ্চিম পাকিস্তানী সেনাবাহিনী চরম নিষ্ঠুরতায় অনেক বাঙালী সৈন্য ও অফিসারকে নির্বিচারে হত্যা করেছিল। তাদের একমাত্র অপরাধ ছিল তারা স্বাধীনতাকামী বাঙালী। আতিকও চেয়েছিল কুমিল্লা সেনাবাহিনী থেকে বেরিয়ে এসে স্বাধীনতা যুদ্ধে যোগ দিতে; কিন্তু সে তা পারেনি। তার আগেই বাঙালী অফিসারদের নিরস্ত্র করে গ্রেফতার ও হত্যা শুরু করে। আতিকও গ্রেফতার হয়ে যায় এবং নিষ্ঠুরভাবে ৩০ এপ্রিল, ১৯৭১ সালে তাকে বন্দী অবস্থায় হত্যা করা হয়। তার সঙ্গে একইভাবে জ্ঞাতিভাই লে. কর্নেল আনওয়ারুল ইসলামসহ মোট ২৪ জন সেনা অফিসারকে সেদিন হত্যা করা হয়। ব্রিগেড গ্রাউন্ডে সারি সারি করে দাঁড় করিয়ে নিরস্ত্র সাধারণ সৈন্যদের ব্রাশফায়ারে মেরে ফেলা হয়। বিধির কি বিধান ছেলের অপেক্ষায় থেকে থেকে অসুস্থ পিতা ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে ৩০ এপ্রিল ১৯৭২ সালের না ফেরার দেশে চলে যান। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর আতিকের সন্ধানে আমরা ছুটে গেছি বারবার কুমিল্লার ময়নামতিস্থ সেনানিবাসে। অবশেষে ৪ মে অনেক মরদেহ তোলা হলো। পরেরদিন সেখানে পৌঁছালে গণহত্যার প্রত্যক্ষদর্শী রমনী শীল আমাদের সঙ্গে নিয়ে সব দেখাল। একে একে শহীদদের দেহগুলো কাঠের বাক্সে সারি সারি করে রাখা। আতিকের পরনে তখনও ইউরিফরম। বাঁ দিকের বুকে ধুলা মাখানো শুকনো রক্ত। আমি তার দেহটাকে উল্টে দেখলাম। দেখি পেছনে কিছুই নেই। বুলেটের আঘাত শরীরের সবকিছু নিয়ে বেরিয়ে গেছে। তবুও মনে হলো আতিক যেন হাসছে। আমি তার সম্পূর্ণ দেহটাকে সদ্যফোটা কৃষ্ণচূড়া দিয়ে ঢেকে অভিবাদন জানালাম। আতিকের সঙ্গে এই আমার শেষ দেখা। কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্টে মুক্তিযুদ্ধকালীন হত্যা করা বহু সামরিক ও বেসামরিক লোককে হত্যা করে মাটিচাপা দেয়া হয়। একসঙ্গে অনেক লাশ একই গর্তে মাটি চাপা দেয় বর্বর পাকিস্তানী সৈন্যরা। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর এই সমস্ত গর্ত খুঁড়ে উদ্ধার করা হয় অগণিত শহীদের দেহাবশেষ। তাদের অনেককে সেনাবাহিনীর ডাক্তার এবং তথাকথিত আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার ‘আসামি’ ডাঃ কর্নেল খুরশীদের তত্ত্বাবধানে শনাক্ত করা হয়। সেই শহীদেরই একজন সেকেন্ড লে. আতিকুর রহমান সিরাজী। শহীদ আতিক এখন আরও অনেক শহীদ সেনাদের সঙ্গে ঘুমিয়ে আছে কুমিল্লা সেনানিবাসের বিশেষ সমাধিস্থলে। সমাধিস্থলের গেটে লেখা ‘যাঁদের রক্তে-মুক্ত স্বদেশ’। সমাধিস্থলের পাশে রয়েছে একটি ছোট জাদুঘর। জাদুঘরে আতিকসহ আরও অনেকের স্মৃতিচিহ্ন এবং তাদের সম্পর্কে তখনকার পত্র-পত্রিকায় লেখা করুণ ভয়ঙ্কর অনেক কাহিনী মুক্তিযুদ্ধের সাক্ষ্য বহন করছে। সেসব কাহিনী পুনর্মুদ্রিত হয়েছে ‘বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধের দলিলপত্র’ সংক্রান্ত ১৬ খ-ের প্রকাশনায়। অষ্টম খন্ডে একটি রিপোর্টে আতিকসহ অনেক সেনা অফিসার ও বিশিষ্ট দেশপ্রেমিক রাজনীতিক ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের হত্যা কান্ডের বিবরণ লিপিবদ্ধ রয়েছে। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর অসহায় ভগ্ন হৃদয় নিয়ে বহুবার ছুটে গেছি কুমিল্লা সেনানিবাসে আতিকের খোঁজে। কতবার যে চারটা নদী পার হয়েছি নৌকায় করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে শুধু ত্যাগের মহিমায় ভাস্বর সত্যটুকু জানার জন্য। শেষ অবধি আমরা সাহস হারাইনি, হারিয়েছি প্রিয়জনদের। যাঁরা একে একে হয়েছেন শহীদ। তাঁদেরই রক্তে স্নাত আমাদের মাটি ও পতাকা। অভিবাদন আমাদের সকল শহীদ ও মুক্তিযোদ্ধার প্রতি। লেখক : সমাজকর্মী
×