ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

লাওসের সঙ্গে দুর্দান্ত ড্র বাংলাদেশের

প্রকাশিত: ০৭:০৭, ২৮ মার্চ ২০১৮

লাওসের সঙ্গে দুর্দান্ত ড্র বাংলাদেশের

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ সেই একই তারিখ, সেই একই প্রতিপক্ষ। কিন্তু এবার ভিন্ন আসর, ভিন্ন মাঠ। আর ১৫ বছর আগের ফলাফলটাও পাল্টে গেছে। এবার আর হারেনি বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দল। তাই বলে তারা জেতেওনি। করেছে কৃতিত্বপূর্ণ ড্র। মঙ্গলবার ফিফা আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচে স্বাগতিক লাওসের সঙ্গে ২-২ গোলে ড্র করেছে বাংলাদেশ। খেলাটি অনুষ্ঠিত হয় লাওসের ভিয়েনতিয়েনে, নিউ লাওস ন্যাশনাল স্টেডিয়ামে। ১৯৭ ফিফা র‌্যাঙ্কিংধারী ‘দ্য বেঙ্গল টাইগার’ খ্যাত বাংলাদেশ দলের কৃতিত্ব ছিল প্রথমার্ধেই দুই গোলে পিছিয়ে পড়েও খেলা শেষ হবার আট মিনিটের মধ্যে দুই গোল শোধ করতে পারা। তাদের কাছে এই ড্র যেন জয়েরই সমতুল্য। অথচ এক সময় মনেই হয়েছিল লাল-সবুজরা হারতে যাচ্ছে ১৮৩ র‌্যাঙ্কিংধারী ‘দ্য নেশন’ খ্যাত লাওসের কাছে। ডাগআউটে বড্ড বিষণœ দেখাচ্ছিল বাংলাদেশের কোচ এ্যান্ড্রু অর্ডকে। সাইড বেঞ্চে নাসিরউদ্দিনদের চোখ ছলছল করছিল। কিন্তু শেষদিকে অর্ডবাহিনী ভেল্কি দেখিয়ে ম্যাচ ড্র করে ফেলে। ম্যাচ শেষে তাই কিছুটা হলেও স্বস্তি নিয়ে ফেরেন অর্ড। কারণ লাওসের বিপক্ষে ফিফা ফ্রেন্ডলি ম্যাচ দিয়ে প্রায় দেড় বছর পর (১৭ মাস) আন্তর্জাতিক ফুটবলে বাংলাদেশের প্রত্যাবর্তনটা মোটামুটি সুখকরই হয়েছে বলতে হবে। অর্ডের প্রথম এ্যাসাইনমেন্ট ছিল এই ম্যাচটি। দীর্ঘ ১৫ বছর আগে এই লাওসের কাছেই বাংলাদেশ হেরেছিল ২-১ গোলের ব্যবধানে (২০০৩ সালে হংকংয়ে অনুষ্ঠিত আসরটি ছিল ২০০৪ এএফসি এশিয়ান কাপের বাছাইপর্ব, গ্রুপ ‘ডি’)। নিজেদের মাঠে উজ্জীবিত লাওস ম্যাচের ৩০ মিনিটেই প্রথম গোল আদায় করে নেয়। সতীর্থর কাছ থেকে পাস পেয়ে বল নিয়ে বাংলাদেশের বক্সে ঢুকে পড়েন কংমাথিলাত। তাকে দু’পাশ থেকে চেপে ধরেন বাংলাদেশের দুই ডিফেন্ডার। কিন্তু তাদের মাঝ দিয়েই বল নিয়ে মাপা শটে জালে পাঠান কংমাথিলাত (১-০)। প্রথমার্ধের শেষ মিনিটে (৪৫+২ মিনিট) আরও এক গোল হজম করে অর্ড শিষ্যরা। এবারের গোলটা অবশ্যই নিজেদের ভুলে। কংমাথিলাতকে নিজেদের বক্সে ফাউল করে বসেন বাংলাদেশের এক ফুটবলার। রেফারি হলুদ কার্ড এবং পেনাল্টির নির্দেশ দেন। পেনাল্টি থেকে কংমাথিলাত গোল করতে ভুল করেননি। ঝাঁপিয়ে পড়েও বল আটকাতে পারেননি আশরাফুল ইসলাম রানা (২-০)। ম্যাচে ফিরতে দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকে মরিয়া ও আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলে বাংলাদেশ। ৮১ মিনিটে এক গোল শোধ করে তারা। বক্স থেকে ফিরে আসা বল পেয়ে কৌনিক শটে লাওসের জাল কাঁপান জাফর ইকবাল (১-২)। ম্যাচের অন্তিম মুহূর্তে (৯০+২ মিনিট) বাজিমাত করে বাংলাদেশ। কর্নার পায় তারা। ওয়ালী ফয়সালের মাপা কর্নার বক্সে পড়লেও সতীর্থরা বল বুঝে নেয়ার আগেই ক্লিয়ার করেন প্রতিপক্ষ গোলরক্ষক। জটলা থেকে বল পায় অপূর্ব, দক্ষতার সঙ্গে বল জালে পাঠিয়ে বাংলাদেশ দলকে উল্লাসে মাতান মাহবুবুর রহমান সুফিল (২-২)। ৯৩ মিনিটে বক্সের কাছেই ফ্রি কিক পায় লাওস। রক্ষণ দেয়াল টপকে পোস্টের কাছে বল পাঠালেও ফিরিয়ে দেন রানা। ফিরতি বলে বাংলাদেশের জালে বল পাঠালেও অফসাইডের কারণে গোল পায়নি লাওস। বেঁচে যায় বাংলাদেশ। শেষ পর্যন্ত ২-২ গোলের স্বস্তির ড্রতে মাঠ ছাড়ে কাতার ও থাইল্যান্ডে কন্ডিশনিং ক্যাম্প করা অর্ডের হাতে গড়া এক নতুন বাংলাদেশ। বাংলাদেশ তাদের সর্বশেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচে জয় পেয়েছিল নয় ম্যাচ আগে, ২০১৬ সালের ৮ জানুয়ারি। যশোর জেলা স্টেডিয়ামে তারা ৪-২ গোলে হারিয়েছিল শ্রীলঙ্কাকে। আগামী ৪-১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ‘সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে’র খেলা ঢাকায় অনুষ্ঠিত হবে। এ লক্ষ্যে বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের প্রস্তুতির জন্য লাওসের সঙ্গে ম্যাচটি খেললো এবং রুখে দিল তাদের দারুণ খেলে।
×