ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

আশা জাগাতে পারল না বাংলাদেশ

সবার আগে ফাইনালে ভারত

প্রকাশিত: ০৭:২৮, ১৫ মার্চ ২০১৮

সবার আগে ফাইনালে ভারত

গোলাম মোস্তফা ॥ পারল না বাংলাদেশ। বুধবার ভারতের বিপক্ষে নিদাহাস ট্রফির ফিরতি ম্যাচে ১৭ রানে হেরেছে টাইগাররা। প্রথমে ব্যাট করে এদিন নির্ধারিত ২০ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে ১৭৬ রান সংগ্রহ করে ভারত। জবাবে ৬ উইকেটে ১৫৯ রানের বেশি করতে পারেনি মাহমুদউল্লাহর দল। এর ফলে ১৭ রানের হার নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয় টাইগারদের। এই ম্যাচ জিতে ত্রিদেশীয় নিদাহাস ট্রফির ফাইনালে জায়গা করে রোহিত শর্মার দল। তবে শিরোপার লড়াইয়ে কে হচ্ছে ভারতের প্রতিপক্ষ? সেটা নির্ভর করছে বাংলাদেশ-শ্রীলংকার পরের ম্যাচে। সেই ম্যাচে জয়ী দলই ভারতের বিপক্ষে ফাইনাল খেলবে। ভারতের ছুড়ে দেয়া ১৭৭ রানের জয়ের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই খেই হারিয়ে ফেলে বাংলাদেশ। লক্ষ্যটাকে খুব বেশি মনে না হলেও ওয়াশিংটন সুন্দরের বিধ্বংসী বোলিংয়ে মাত্র ৪০ রানেই প্রথম সারির ৩ উইকেট হারিয়ে ফেলে তারা। আগের ম্যাচে দুর্দান্ত সূচনা এনে দেওয়া লিটন দাস এদিন সাজঘরে ফেরেন মাত্র ৭ রানে। ওয়াশিংটনের ভেতরে ঢোকা স্পিন বল বুঝতে না পেরে স্টাম্পড হন তিনি। ব্যক্তিগত ১ রানে বাজে শটে ওয়াশিংটন সুন্দরের বলে বোল্ড আউট হন সৌম্য সরকার। ২৭ রানে বোল্ড আউট হন তামিম ইকবালও। প্যাভিলিয়নের পথ ধরার আগে ১৯ বলে ৪টি চার ও একটি ছক্কায় এ রান করে যান তিনি। চাহালের বলে ১১ রান করে অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহও যখন সাজঘরের পথ ধরেন তখন ভারতের কাছে বড় হারটাকেই নিশ্চিত বলে মেনে নিচ্ছিলেন অনেকেই। তবে সেই বিপর্যস্ত দলের হাল ধরেন শ্রীলংকার বিপক্ষে ম্যাচের জয়ের নায়ক মুশফিকুর রহিম। তাকে দারুণভাবে সঙ্গ দিয়ে যাচ্ছিলেন সাব্বির রহমানও। কিন্তু ব্যক্তিগত ২৭ রানে শার্দুল ঠাকুরের বলে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফিরে যান সাব্বির রহমান। এরপর মুশফিকুর রহিমের ব্যাট জয়ের আশা জাগালেও শেষ পর্যন্ত তা করতে দেয়নি ভারতীয় বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিং। এর ফলে ভারতের কাছে হারা ম্যাচে বাংলাদেশের পাওনা মুশফিকুর রহিমের অপরাজিত ৭২ রান। ৫৫ বলে ৮টি চার ও একটি ছক্কায় ভারতের বিপক্ষে এই ইনিংসটি সাজান তিনি। ভারতের সফল বোলার ওয়াশিংটন সুন্দর। ৪ ওভার বল করে ২২ রানের বিনিময়ে ৩ উইকেট তুলে নেন তিনি। এছাড়া শার্দুল ঠাকুর, চাহাল এবং মোহাম্মদ সিরাজ প্রত্যেকেই বাংলাদেশের একটি করে উইকেট লাভ করেন। তবে ম্যাচ সেরার পুরস্কার জেতেন ভারতীয় অধিনায়ক রোহিত শর্মাই। কলম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে এর আগে টস জিতে প্রথমে ভারতকে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানান মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। বাংলাদেশের বোলারদের হতাশায় ডুবিয়ে শুরু থেকেই দেখে শুনে খেলতে থাকে ভারতীয় ব্যাটসম্যানরা। প্রেমাদাসায় দলীয় ৭০ রানে প্রথম সাফল্য পায় বাংলাদেশ। ইনিংসের দশম ওভারের পঞ্চম বলে বাঁহাতি ওপেনার শিখর ধাওয়ানকে বোল্ড করেন রুবেল হোসেন। ১৪৩ কিলোমিটার গতির এক দুর্দান্ত ইয়র্কারে উড়ে যায় ক্রমেই খোলস ছেড়ে বেরিয়ে আসতে শুরু করা ধাওয়ানের মিডল স্টাম্প। আউট হওয়ার আগে ৫ চার ও এক ছক্কায় ২৭ বলে ৩৫ রান করে যান তিনি। তবে ধাওয়ান সাজঘরে ফিরে গেলেও একপাশ আগলে রাখেন অধিনায়ক রোহিত শর্মা। ইনিংসের শেষ বলে রুবেলের হাতে রান আউটে কাটা পড়ার আগে ৮৯ রান করে যান তিনি। সেজন্য ভারতীয় অধিনায়ক খেলেছেন ৬১ বল। দলের সর্বোচ্চ ইনিংসিটি সাজাতে এদিন সমান পাঁচটি করে চার ও ছক্কার সাহায্য নেন রোহিত। ভারতের হয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৪৭ রান করেন সুরেশ রায়না। মাত্র ৩০ বলে ৫ চার ও ২ ছক্কায় দলকে ঝড়ো এই ইনিংস উপহার দেন তিনি। ২ রান করে এদিন অপরাজিত ছিলেন দীনেশ কার্তিক। ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের সফল বোলার কেবল রুবেল হোসেন। ৪ ওভারে ২৭ রানের বিনিময়ে প্রতিপক্ষের মূল্যবান দুটি উইকেট দখল করে নেন তিনি। ৪ ওভারে সর্বোচ্চ ৪৩ রান দিয়েও কোন উইকেট পাননি আবু হায়দার রনি। নিষ্প্রভ ছিলেন মুস্তাফিজুর রহমানও। ৪ ওভারে ৩৮ রান দিলেও কোন উইকেট পাননি কাটার মাস্টার। বাংলাদেশের বিপক্ষে জেতায় সবার আগে নিদাহাস ট্রফির ফাইনালের টিকিট কাটল ভারত। চার ম্যাচ থেকে ৩ জয়ের ফলে ভারতের সংগ্রহে ৬ পয়েন্ট। তবে হারলেও ফাইনালে উঠার সুযোগ রয়েছে বাংলাদেশের। কেননা, একটি করে ম্যাচ জেতায় বাংলাদেশ-শ্রীলংকার উভয় দলেরই পয়েন্ট সমান ২। যে কারণেই শেষ ম্যাচে শ্রীলংকার বিপক্ষে জিততে পারলেই ফাইনালে খেলবে মুশফিক-মাহমুদউল্লাহর দল।
×