ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

শ্রীলঙ্কায় দাঙ্গার পর জরুরী অবস্থা জারি

প্রকাশিত: ০৪:৩৭, ৭ মার্চ ২০১৮

শ্রীলঙ্কায় দাঙ্গার পর জরুরী অবস্থা জারি

শ্রীলঙ্কার জনপ্রিয় পর্যটন শহর ক্যান্ডিতে মঙ্গলবার কারফিউ জারি ও কমান্ডো পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। মুসলিম বিরোধী দাঙ্গা ঠেকাতে কর্তৃপক্ষ এ উদ্যোগ নেয়। সম্প্রতি এ অঞ্চলে দাঙ্গায় দু’জনের প্রাণহানি ঘটেছে। এ ছাড়া দাঙ্গার কারণে মুসলমানদের বাড়িঘর ও ব্যবসা বাণিজ্য ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। -এএফপি চা বাগান ও বৌদ্ধদের প্রাচীন নিদর্শনের জন্যে খ্যাত ক্যান্ডির বিভিন্ন এলাকায় দাঙ্গাবাজদের তা-বের কারণে পুলিশ কারফিউ’র সময়সীমা বাড়িয়েছে। মঙ্গলবার দাঙ্গাবাজরা বাড়িঘরে আগুন লাগিয়ে দেয় এবং পুড়ে যাওয়া ভবন থেকে পুলিশ একজন মুসলিমের লাশ উদ্ধার করেছে। পুলিশের একজন মুখপাত্র জানান, আইনশৃঙ্খলা পুনরুদ্ধার ও কারফিউ বলবৎ এর লক্ষ্যে পুলিশের স্পেশাল টাস্কফোর্স থেকে ওই এলাকায় শত শত কমান্ডো মোতায়েন করা হয়েছে। গত সপ্তাহে উত্তেজিত জনতার হাতে একজন সিংহলী পুরুষের প্রাণহানিকে কেন্দ্র করে সোমবার সৃষ্ট দাঙ্গায় মুসলমানদের বাড়িঘর, মসজিদ ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সিংহলীরা মূলত জাতিগত বৌদ্ধ। শ্রীলঙ্কার ২ কোটি ১০ লাখ লোকের মধ্যে তারা প্রায় এক তৃতীয়াংশ। মোট জনসংখ্যার প্রায় ১০ শতাংশ মুসলমান । সরকারের এক মুখপাত্র বলেছেন, শ্রীলঙ্কার মধ্যাঞ্চলীয় জেলা ক্যান্ডিতে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার পর মঙ্গলবার জরুরী অবস্থা জারির এ সিদ্ধান্ত হয়। কয়েকটি কট্টরপন্থী বৌদ্ধগোষ্ঠী অভিযোগ করে আসছিল, শ্রীলঙ্কার বৌদ্ধদের জোর করে ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত করা হচ্ছে। পাশাপাশি বৌদ্ধ পুরাতাত্ত্বিক স্থানগুলো ভাংচুরের জন্যও তারা মুসলমানদের দায়ী করে আসছিল। এই পরিস্থিতিতে দ্বীপ দেশ শ্রীলঙ্কায় গত বছরজুড়েই এ দুটি ধর্মীয় সম্প্রদায়ের মধ্যে উত্তেজনা বাড়ছিল। গত বছর শেষে বৌদ্ধ সংখ্যাগরিষ্ঠ মিয়ানমার থেকে মুসলমান রোহিঙ্গারা শ্রীলঙ্কায় গিয়ে আশ্রয় নিতে শুরু করলে তাতে আপত্তি জানিয়ে সরব হয় দেশটির কয়েকটি বৌদ্ধ জাতীয়তাবাদী গোষ্ঠী। সোমবার ক্যান্ডিতে মুসলমান মালিকানাধীন একটি দোকানে অগ্নিসংযোগের ঘটনার পর সংখ্যাগরিষ্ঠ সিংহলী বৌদ্ধদের সঙ্গে সংখ্যালঘু মুসলমানদের দাঙ্গা শুরু হয়। দাঙ্গা থামাতে ক্যান্ডিতে সান্ধ্য আইন জারি করে সেখানে সেনা ও অভিজাত পুলিশ বাহিনী পাঠায় সরকার। এ পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার মন্ত্রিসভার জরুরী বৈঠক বসে। সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা দেশের অন্য অঞ্চলেও ছড়িয়ে পড়তে পারে- এই আশঙ্কায় বৈঠকে ১০ দিনের জন্য জরুরী অবস্থা জারির সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। ফেসবুকের মাধ্যমে যারা দাঙ্গার প্ররোচণা দিচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেয়ার সিদ্ধান্তও হয়েছে।
×