ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

উপস্থিত থাকবেন দূতাবাস স্থানান্তর অনুষ্ঠানে

জেরুজালেমে যাবেন ট্রাম্প

প্রকাশিত: ০৪:৩৬, ৭ মার্চ ২০১৮

জেরুজালেমে যাবেন ট্রাম্প

জেরুজালেমে দূতাবাস স্থানান্তরিত হওয়ার পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তা উদ্বোধন করতে পারেন। সোমবার হোয়াইট হাউসে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে বৈঠকের পর এ কথা জানান হয়েছে। নেতানিয়াহু বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগে বর্তমানে নিজ দেশে কিছুটা চাপের মুখে রয়েছেন। এএফপি। দুই নেতাই এখন আইনের তদন্তের মুখোমুখি রাজনৈতিকভাবে চাপের মধ্যে আছেন। অভ্যন্তরীণ ইস্যু পাশে রেখে ওয়াশিংটনে দুজনকেই বেশ হৃদ্যতাপূর্ণ পরিবেশে আলোচনা করতে দেখা গেছে। নেতানিয়াহু উচ্ছ্বসিত ভাষায় ট্রাম্পের প্রশংসা করেন। জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার জন্য তিনি তাকে ধন্যবাদ জানান। নেতানিয়াহু ট্রাম্পকে প্রাচীন পারস্য স¤্রাট সাইরাস থেকে শুরু করে লর্ড বেলফোর ও হ্যারি ট্রুুম্যানের সঙ্গে তুলনা করেন। সাইরাস প্রাচীন ব্যাবিলনে ইহুদীদের মুক্তি দিয়েছিলেন, বেলফোর ইসরাইল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার কথা প্রথম বলেন আর সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রুম্যান ইহুদী রাষ্ট্রটিকে স্বীকৃতি দেন। নেতানিয়াহু ট্রাম্পকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘বিশেষ বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের জন্য আপনাকে আমি ধন্যবাদ জানাই।’ জবাবে ৭১ বছর বয়সী ট্রাম্প বলেন, নেতানিয়াহুর এই সফর মে’তে জেরুজালেমে ইসরাইলের দূতাবাস স্থানান্তর করার কাজ সহজ করেছে। ওয়াশিংটনে ট্রাম্পের সঙ্গে আলাপকালে নেতানিয়াহু ইরানকে ইসরাইলের প্রধান শত্রু আখ্যা দেন। তিনি সিরিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের স্থায়ী সামরিক ঘাঁটি রাখার অনুরোধ করেন। মে মাসেই ইসরাইলে মার্কিন দূতাবাস জেরুজালেমে সরিয়ে নেয়ার বিতর্কিত সিদ্ধান্তটি বাস্তবায়িত হতে যাচ্ছে। ইসরাইল প্রতিষ্ঠার ৭০ বছর পূর্ণ হবে ওই সময়। একে স্মরণীয় করে রাখতে ট্রাম্প দূতাবাস স্থানান্তর অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। ট্রাম্প বলেন, ‘ইসরাইল আমার কাছে বিশেষ এক দেশ, বিশেষ জনতা, আমি দেশটিতে যাওয়ার অপেক্ষায় আছি। ওই সিদ্ধান্ত (দূতাবাস স্থানান্তর) নিতে পারার জন্য আমি বিশেষভাবে গর্বিত।’ নেতানিয়াহুর এই সফর দুই নেতার জন্যই রাজনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখা হচ্ছে। ট্রাম্প ও নেতানিয়াহু বিভিন্ন ইস্যুতে তদন্তের মুখোমুখি হয়ে দেশের ভেতরে কিছুটা চাপে রয়েছেন। এই সফর দুই নেতার জন্য সাময়িকভাবে হলেও কিছুটা অবকাশ নেয়ার সুযোগ করে দিয়েছে। ইসরাইল ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বিশেষ স্থায়ী সম্পর্ক বিদ্যমান। ধর্মীয় দিক দিয়েও দেশ দুটি পাস্পরিক সম্পর্ক গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনা করে থাকে। এই সফর একই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য কূটনৈতিক ও নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জও তৈরি করবে। আরব মিত্র দেশগুলো একে কিভাবে নেয় সেটিও দেখার বিষয়। জাতিসংঘে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত নিকি হ্যালিও দূতাবাস স্থানান্তর অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘জাতিসংঘ ও এর অঙ্গ সংস্থাগুলোতে ইসরাইল ব্যাপক সমালোচনার খিকার হয়ে থাকে। এ অবস্থার অবসান ঘটা প্রয়োজন। ইসরাইল-ফিলিস্তিন সঙ্ঘাতে আরবরা যুক্তরাষ্ট্রকে নিরপেক্ষ মধ্যস্থতাকারী হিসেবে দেখে এসেছে। ইসরাইল ও ফিলিস্তিন উভয়ই জেরুজালেমকে নিজেদের রাজধানী দাবি করে থাকে। গত বছর ডিসেম্বরে ট্রাম্প জেরুজালেমে দূতাবাস স্থানান্তরের ঘোষণা দেয়ার পর কেবল মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোই নয় জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ১২৮ দেশ এর নিন্দা জানিয়েছে। মাত্র ৭টি ছোটখাটো দেশ যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইলকে সমর্থন করতে দেখা গেছে। জেরুজালেমকে স্বীকৃতি ট্রাম্পের জন্য একটি উচ্চাভিলাষী ঝুঁকিপূর্ণ সিদ্ধান্ত ছিল। এর মধ্য দিয়ে মধ্যপ্রাচ্য শান্তি প্রক্রিয়া যতটুকু আশা বাকি ছিল তা শেষ হয়ে গেছে। ট্রাম্প নিজের জামাতা জারেড কুশনারকে শান্তি প্রক্রিয়ার দায়িত্ব দিয়েছিলেন। কিন্তু জারেড সম্প্রতি শীর্ষ গোয়েন্দা তথ্য জানার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। ১৯৬৭ সালে আরবদের সঙ্গে ছয় দিনের যুদ্ধে ইসরাইল ইসরাইল পূর্ব জেরুজালেম দখল করেছিল। নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব অনুযায়ী জেরুজালেম অধিকৃত ভূখ- হিসেবে গণ্য হয়ে থাকে।
×