ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

মাশরাফি, বিজয়ের নৈপুণ্যে আবাহনীর টানা পঞ্চম জয়

প্রকাশিত: ০৬:৫০, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

মাশরাফি, বিজয়ের নৈপুণ্যে আবাহনীর টানা পঞ্চম জয়

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লীগে (ডিপিএল) কি দুর্দান্ত নৈপুণ্য দেখাচ্ছেন বাংলাদেশ ওয়ানডে অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। একের পর এক ম্যাচে বোলিং ঝড় তুলছেন। আবাহনীর এ পেসার আবার ব্যাট হাতেও নজর কাড়ছেন। তাতে কুপোকাত হচ্ছে প্রতিপক্ষ। এবার যেমন তার গতির সামনে হার মেনেছে শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবও। মাশরাফির বোলিং নৈপুণ্যের আগে এনামুল হক বিজয়ের সেঞ্চুরিতে শেখ জামালকে ৪৭ রানে হারায় আবাহনী। এই ম্যাচটি জয়ে টানা ৫ ম্যাচেই হাসে আবাহনী। তাতে শীর্ষস্থানও ধরে রাখে। আবাহনীর বিপক্ষে জিতলে দ্বিতীয় স্থানে ওঠার সুযোগ ছিল শেখ জামালের। কিন্তু হেরে তৃতীয় স্থানে নেমে যায়। দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ। দলটি প্রাইম দোলেশ্বর স্পোর্টিং ক্লাবকে ৫৫ রানে হারায়। পাঁচ ম্যাচে তিন জয়ে দ্বিতীয় স্থানে আছে রূপগঞ্জ। এবার গত আসরের চ্যাম্পিয়ন গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সের অবস্থা খুবই খারাপ দেখা যাচ্ছে। দলটি বৃহস্পতিবার ব্রাদার্স ইউনিয়নকে ২ উইকেটে হারিয়ে দ্বিতীয় জয় তুলে নেয়। আবাহনী-শেখ জামাল ম্যাচ ॥ বিকেএসপিতে আবাহনী-শেখ জামাল ম্যাচটি হয়। ম্যাচটিতে টস জিতে আগে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয় আবাহনী। সুযোগটি কাজেও লাগায় তারা। ৭ উইকেট হারিয়ে ৫০ ওভারে ২৭০ রান করে। শুরুতে বিজয় ব্যাটিং ঝলক দেখান। দলকে ১৯৯ রানে নিয়ে যান। তখন আউট হয়ে যান। তবে এর আগেই নিজের স্কোরবোর্ডে ১২২ বলে ৬ চার ও ৪ ছক্কায় ১১৬ রান করে ফেলেন। বিজয় আউট হওয়ার আগে ৭৮ রানেই ৪ উইকেট হারিয়ে ধুঁকতে থাকে আবাহনী। সেখান থেকে মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতকে নিয়ে ১২১ রানের জুটি গড়েন। সৈকত একদিকে হাল ধরে থাকেন। আরেকদিকে বিজয় ‘ছক্কা-চার’ হাঁকাতে থাকেন। বিজয় আউটের পর ৪৯ রান করা সৈকতও বেশিদূর আর এগিয়ে যেতে পারেননি। ২১২ রানে মাশরাফি আউট হয়ে গেলে ৭ উইকেটের পতন ঘটে। এরপর মেহেদী হাসান মিরাজ (৩৪*) ও সানজামুল ইসলাম (২৪*) মিলে অষ্টম উইকেটে ৫৮ রানের জুটি গড়ে দলকে এতদূর নিয়ে যান। এই রানই শেখ জামালের সামনে পাহাড়সম হয়ে দাঁড়ায়। মাশরাফি এমনই বোলিং ঝড় দেখান, তাতে ৪৫.৩ ওভারে ২২৩ রান করতেই গুটিয়ে যায় শেখ জামাল। নুরুল হাসান সোহান (৮৩) চেষ্টা করেও যোগ্য সঙ্গী না পাওয়াতে হারই বরণ করে নিতে হয় শেখ জামালকে। মাশরাফি নেন ৫ উইকেট। ব্যাটিংয়ে বিজয় ও বোলিংয়ে মাশরাফি দ্যুতি ছড়ান। তাই দুইজনকেই ম্যাচসেরা বিবেচনা করা হয়। রূপগঞ্জ-দোলেশ্বর ম্যাচ ॥ মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রাইম দোলেশ্বর যখন লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জকে আগে ব্যাট করতে পাঠায় তখনই যেন ভুল হয়ে যায়। সুযোগটি কাজে লাগিয়ে ৭ উইকেট হারিয়ে ৫০ ওভারে ২৭২ রান করে রূপগঞ্জ। নাঈম ইসলামের ৭৮, মুশফিকুর রহীমের ৬৫ ও আবদুল মজিদের ৫৯ রানে এত বড় স্কোর হয়। এই স্কোরের সামনে পড়ে ৪৭.৫ ওভারে ২১৭ রান করতেই অলআউট হয়ে যায় প্রাইম দোলেশ্বর। আরাফাত সানি স্পিনভেল্কি দেখান। ৪ উইকেট শিকার করেন। এই ম্যাচটিতে জিতে রূপগঞ্জ ৬ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে ওঠে। সমান পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থানে শেখ জামাল থাকে। আর দোলেশ্বর সমান পয়েন্ট নিয়েও রানরেটে পেছনে থেকে চতুর্থ স্থানে নেমে যায়। গাজী গ্রুপ-ব্রাদার্স ম্যাচ ॥ বিকেএসপিতে জয় পেয়েছে গাজী গ্রুপ। ব্রাদার্সের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় পড়ে জিততে হয়েছে গাজী গ্রুপকে। ম্যাচটিতে আগে ব্যাট করে ব্রাদার্স ৫ উইকেট হারিয়ে ৫০ ওভারে ২৭৩ রান করে। অনেক বড় স্কোর। ভারতের শিলিগুড়ির ক্রিকেটার দেবব্রত দাস ১১২ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন। সেই সঙ্গে ইয়াসির আলী ৫৪, জুনায়েদ সিদ্দিকী ৪৩ ও অলক কাপালীর ৪১ রানের ইনিংস খেলে দলের স্কোর মজবুত করে তোলেন। কিন্তু তাতেও কোন কাজ হয়নি। ভারতের পাঞ্জাবের গুরকিরাত সিং মান অপরাজিত ৭১ রানের ইনিংস খেলেন। তার সঙ্গে ইমরুল কায়েসের ৬৫ ও মুমিনুল হকের ৫৭ রানে গাজী গ্রুপ জিতে। ৮ উইকেট হারিয়ে ৫ বল বাকি থাকতে ২৭৬ রান করে জিতে গাজী গ্রুপ। স্কোর ॥ আবাহনী-শেখ জামাল ম্যাচ, আবাহনী ইনিংস ২৭০/৭; ৫০ ওভার (বিজয় ১১৬, মোসাদ্দেক ৪৯, মিরাজ ৩৪*, সানজামুল ২৪*; রবিউল ৩/৪৭)। শেখ জামাল ইনিংস ২২৩/১০; ৪৫.৩ ওভার (সোহান ৮৩, সাকসেনা ৪৩; মাশরাফি ৫/২৯)। ফল ॥ আবাহনী ৪৭ রানে জয়ী। ম্যাচসেরা ॥ মাশরাফি বিন মর্তুজা ও এনামুল হক বিজয় (আবাহনী)। লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ-প্রাইম দোলেশ্বর ম্যাচ, রূপগঞ্জ ইনিংস ২৭২/৭; ৫০ ওভার (নাঈম ৭৮, মুশফিক ৬৫, মজিদ ৫৯; আরাফাত ৩/৪০)। দোলেশ্বর ইনিংস ২১৭/১০; ৪৭.৫ ওভার (শরীফুল্লাহ ৪১, ইমতিয়াজ ৩৫; মোশাররফ ৪/৪০)। ফল ॥ লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ ৫৫ রানে জয়ী। ম্যাচসেরা ॥ নাঈম ইসলাম (লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ)। গাজী গ্রুপ-ব্রাদার্স ম্যাচ, ব্রাদার্স ইনিংস ২৭৩/৫; ৫০ ওভার (দেবব্রত ১১২*, ইয়াসির ৫৪, জুনায়েদ ৪৩, কাপালী ৪১; নাঈম ২/২৯)। গাজী গ্রুপ ২৭৬/৮; ৪৯.১ ওভার (গুরকিরাত ৭১*, ইমরুল ৬৫, মুমিনুল ৫৭; নিহাদুজ্জামান ২/৪৩)। ফল ॥ গাজী গ্রুপ ২ উইকেটে জয়ী। ম্যাচসেরা ॥ গুরকিরাত সিং মান (গাজী গ্রুপ)।
×