ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

এএফসি কাপ

ভাল শুরুর প্রত্যাশা ঢাকা আবাহনীর

প্রকাশিত: ০৭:০০, ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

ভাল শুরুর প্রত্যাশা ঢাকা আবাহনীর

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ স্বাধীনতা কাপের ব্যর্থতা ভুলে এএফসি কাপে ভাল শুরুর প্রত্যাশা ঢাকা আবাহনী লিমিটেডের। দেশীয় খেলোয়াড়দের পাশাপাশি দলে থাকছেন চার বিদেশী রিক্রুট। নতুন কোচ সাইফুল বারী টিটুর চোখ চূড়ান্ত পর্বে এএফসি মিশনে গুরুত্ব দিচ্ছেন টিম ওয়ার্কে। ১৯৮২ সালে মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব এবং ২০১২ সালে শেখ রাসেল ক্রীড়াচক্রের পর ২০১৮ সালে ঢাকা আবাহনীর সামনে সুবর্ণ সুযোগ ছিল এক মৌসুমে তিনটি বা ট্রেবল শিরোপা জেতার। কিন্তু কোয়ার্টার ফাইনালে আরামবাগের কাছে (পরে আরামবাগই চ্যাম্পিয়ন হয়ে ইতিহাস গড়ে) ০-৩ গোলে হেরে সেই স্বপ্নসাধ চূর্ণ হয়ে যায়। সেই শোক ভুলে ‘দ্য স্কাই ব্লু ব্রিগেড’ খ্যাত আবাহনী ব্যস্ত নতুন মিশনে। হেড কোচ (ক্রোয়েশিয়ান দ্রাগো মামিচ) চলে গেলেও প্রিমিয়ার লীগ ফুটবলের শিরোপা হাতছাড়া করেনি তারা। তারুণ্যের মিশেল আর অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে টানা দুই আসরে বাজিমাত করে তারা। মৌসুম শেষ হলেও ব্যস্ততা কমেনি তাদের। বরং আরও বড় চ্যালেঞ্জে লীগ চ্যাম্পিয়নরা। সেই চ্যালেঞ্জের নাম এএফসি কাপ। এএফসি কাপে আবাহনীর প্রথম ম্যাচ ৭ মার্চ। হোম ম্যাচে চাপটা একটু বাড়তি থাকছে স্বাগতিক দলের ওপর। প্রতিপক্ষ মালদ্বীপের নিউ রেডিয়েন্ট। আগামী ২ মে ফিরতি লেগে মুখোমুখি হবে এই দুই দল। ‘ই’ গ্রুপে আবাহনীর সঙ্গে আরও আছে ভারতের ক্লাব আইজল এফসি। এএফসি মিশনে সাইফ স্পোর্টিং ব্যর্থ। মিশনটা এবার সাইফুল বারী টিটুর। চ্যালেঞ্জ নিচ্ছেন পুরনো অতীত ভুলে ঢাকার জায়ান্টদের এএফসি কাপের চূড়ান্ত পর্বে জায়গা দেয়ার। হোক চ্যাম্পিয়নদের হয়ে নিজের প্রথম ম্যাচ, আবাহনীর খেলোয়াড়দের সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা আছে এই কোচের। প্রিমিয়ার লীগের মাঝপথ থেকে কোচশূন্য ছিল আকাশী-নীলরা। বিদেশীনির্ভর দলে শিরোপা ধরে রাখা গেছে। কিন্তু স্বাধীনতা কাপে দেশীয় খেলোয়াড়রা আস্থা অর্জনে ব্যর্থ। এএফসি কাপে সুযোগ আছে বিদেশী খেলোয়াড়দের, সর্বোচ্চ চারজন। এদিকে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের কোন ক্লাবে খেলতে যাচ্ছেন জাপানী কোন ফুটবলার। এএফসি কাপকে সামনে রেখে এশিয়ান কোটায় ঢাকা আবাহনীর হয়ে খেলবেন সেইয়া কোজিমা। থাইল্যান্ডের ক্লাব রয়্যাল নেভিতে খেলেছেন তিনি। কোজিমা গত ছয় বছর থাই লীগে খেলেছেন। এএফসি কাপে ভাল শুরু এনে দিতে চান আকাশী-নীলদের স্কিলের পাশাপাশি গুরুত্ব দিচ্ছেন মানসিক শক্তিতে। ইউরোপীয় ফুটবলে এশিয়ানদের যা কিছু দাপট, মূলত জাপানী আর সাউথ কোরিয়ান ফুটবলারদের কল্যাণে। পাশের দেশ ভারতের ক্লাবগুলোতেও তাদের আধিপত্য চোখে পড়ার মতো। ব্যতিক্রম ছিল বাংলাদেশে। ঘানা, নাইজেরিয়া, কম্বোডিয়াসহ অন্য দেশের খেলোয়াড়রা যখন দেশী ক্লাবগুলোর প্রথম পছন্দ, তখন নতুন চিন্তা-ভাবনা ঢাকা আবাহনীর। স্বাধীনতা কাপের পরেই ঢাকা আবাহনী লিমিটেডের নতুন হেড কোচ হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয় সাইফুল বারী টিটুকে। এই মৌসুমে চট্টগ্রাম আবাহনীর কোচ ছিলেন টিটু। তার অধীনে সপ্তদশ রাউন্ড পর্যন্ত পয়েন্ট টেবিলের এক নম্বরে ছিল বন্দরনগরীর ক্লাবটি। এরপরই বিপর্যয় ঘটে চট্টগ্রাম আবাহনীর। টানা ম্যাচে পয়েন্ট নষ্ট করে পিছিয়ে পড়ে। ক্লাব কর্তৃপক্ষ বিরক্ত হয়ে লীগ শেষ হওয়ার আগেই বরখাস্ত করে টিটুকে। ঢাকা আবাহনীর কোচের দায়িত্ব পেয়ে দারুণ রোমাঞ্চিত টিটু, ‘এএফসি কাপে আবাহনী শুধু নিজের নয়, দেশেরও প্রতিনিধিত্ব করবে। আবাহনীর মতো বড় ক্লাবের কোচ হতে পেরে আমি খুশি। চ্যালেঞ্জ নিতে মুখিয়ে আছি। আপাতত গ্রুপের ম্যাচগুলো নিয়ে ভাবছি। গ্রুপে যেন আবাহনী ভাল করতে পারে, সেদিকেই আমার মূল লক্ষ্য।’ গত ১১ ফেব্রুয়ারি থেকে আবাহনী এএফসি কাপের জন্য অনুশীলন শুরু করে দিয়েছে। এই আসরের জন্য এই মুহূর্তে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে চাইছে না আবাহনী। নতুন করে বিদেশী কোচ আসলে তার চিনতে-বুঝতে সময় লাগতে পারে। তাই আপাতত বিদেশী কোচের পক্ষপাতী নয় আবাহনী। টিটু এর আগে মোহামেডান, শেখ জামাল, আরামবাগ ও সর্বশেষ চট্টগ্রাম আবাহনীর কোচের দায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়া জাতীয় দলের হয়েও কোচের দায়িত্ব পালন করেছেন। শেখ জামালের হয়ে নেপালের পোখারা কাপ চ্যাম্পিয়ন, মোহামেডানের হয়ে সুপার কাপসহ অন্য দলে ফেডারেশন কাপের শিরোপা জেতার অভিজ্ঞতাও আছে তার। এখন দেখার বিষয় এএফসি কাপে আবাহনীর কোচ হিসেবে কেমন করেন তিনি।
×