ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

সংসদ ভবনের স্থাপত্যশৈলীতে মুগ্ধ সুইস প্রেসিডেন্ট বেরসে

প্রকাশিত: ০৫:৫৯, ৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

সংসদ ভবনের স্থাপত্যশৈলীতে মুগ্ধ সুইস প্রেসিডেন্ট বেরসে

সংসদ রিপোর্টার ॥ সংসদ ভবনের স্থাপত্যশৈলীতে মুগ্ধ সুইজারল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট আঁলা বেরসে। এ তথ্য উল্লেখ করে স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী জানান, তার আমন্ত্রণে এক অনির্ধারিত কর্মসূচীতে বুধবার সকালে সংসদ ভবন পরিদর্শন করেন বেরসে। তিনি সংসদ ভবনের স্থাপত্যশৈলীর ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। তাকে আমাদের সংসদীয় কার্যক্রম সম্পর্কেও বিস্তারিত ধারণা দেয়া হয়েছে। সব কিছুতেই তিনি মুগ্ধ। এর আগে রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে তাদের সাক্ষাত হয়। সুইস প্রেসিডেন্ট আঁলা বেরসের তাৎক্ষণিক পরিদর্শন প্রসঙ্গে স্পীকার আশাবাদ ব্যক্ত করে সাংবাদিকদের বলেন, বেরসের এ পরিদর্শন বহির্বিশ্বে বাংলাদেশ সংসদের গ্রহণযোগ্যতা বাড়াতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। পরিদর্শনকালে সুইস প্রেসিডেন্ট সংসদের দক্ষিণ প্লাজা, অধিবেশন কক্ষ ও বিভিন্ন লবি ঘুরে দেখেন। তার সঙ্গে ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত রেনে হোলেস্টাইন। তাদের স্বাগত জানান স্পীকার শিরীন শারমিন চৌধুরী। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সংসদের চীফ হুইপ আ স ম ফিরোজ, সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর, হুইপ আতিউর রহমান আতিক, মোঃ শহীদুজ্জামান সরকার, ইকবালুর রহীম, মোঃ শাহাব উদ্দিন ও সংসদ সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মোঃ আবদুর রব হাওলাদারসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। এর আগে সকাল সাড়ে আটটায় হোটেল সোনারগাঁওয়ে অনুষ্ঠিত সৌজন্য সাক্ষাতে রোহিঙ্গা ইস্যু, অর্থনৈতিক ও অবকাঠামোগত উন্নয়ন, নারীর ক্ষমতায়ন, দারিদ্র্য বিমোচন ও সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীসহ দ্বিপাক্ষিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সুইজারল্যান্ডের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে আলোচনা করেন স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। সুইজারল্যান্ডের প্রেসিডেন্টকে স্পীকার বলেন, রোহিঙ্গাদের আশ্রয়ে সীমান্ত খুলে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মানবতার নবদিগন্তের সূচনা করেছেন। জাতিসংঘে তার প্রস্তাবিত পাঁচ দফার আলোকেই রোহিঙ্গা সঙ্কটের স্থায়ী সমাধানের প্রক্রিয়া চলছে। তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের শান্তিপূর্ণ প্রত্যাবর্তন ও পুনর্বাসনে মিয়ানমারকে এগিয়ে আসতে হবে। এ সময় তিনি রোহিঙ্গা সমস্যার স্থায়ী সমাধানের জন্য আন্তর্জাতিক জনমত তৈরি ও মিয়ানমারের মানবতা লংঘনের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে সুইস সরকারের সহযোগিতা কামনা করেন। এছাড়া কক্সবাজারের কুতুপালংয়ের রোহিঙ্গাদের মানবেতর জীবনযাপন সরেজমিন পরিদর্শন করায় তিনি সুইস প্রেসিডেন্টকে আন্তরিক ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়ে আঁলা বেরসে বলেন, রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশ বিশ্ববাসীর নজর কেড়েছে, যা প্রশংসনীয়। রোহিঙ্গাদের স্থায়ী প্রত্যাবর্তনে সুইজারল্যান্ড বাংলাদেশের পাশে থাকবে মর্মে তিনি আশ্বস্ত করেন। এর আগে স্পীকার বলেন,নারীর অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন, কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও তথ্য প্রযুক্তির উন্নয়নে বর্তমান সরকার নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। তিনি নারীর প্রশিক্ষণ, দক্ষতা বৃদ্ধি ও তরুণ প্রজন্মকে মানব সম্পদে পরিণত করতেও সুইজারল্যান্ডকে পাশে থাকার অনুরোধ জানান। বেরসে তাঁকে এ ব্যাপারেও আশ্বস্ত করে বলেন, নারীর ক্ষমতায়নে বাংলাদেশ অনুকরণীয় এবং অর্থনৈতিক বিভিন্ন সূচকে ও দারিদ্র্য বিমোচনে এদেশের অগ্রগতি লক্ষ্যণীয়। গত বছর ১৩৬তম আইপিইউ (ইন্টারপার্লামেন্টারি ইউনিয়ন) সম্মেলন ও ৬৩তম সিপিসি (কমনওয়েলথ পার্লামেন্টারি কনফারেন্স) সফলভাবে আয়োজন করে বাংলাদেশ তার সক্ষমতা প্রমাণ করেছে। ওই দুই সম্মেলনে কৃতিত্বের সঙ্গে নেতৃত্ব দেয়ায় তিনি স্পীকারেরও প্রশংসা করেছেন। বেরসে দুই দেশের সংসদ সদস্যদের সফর বিনিময়ের মাধ্যমে বিদ্যমান সম্পর্ক আরও জোরদার করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। এ সময় তিনি বাংলাদেশের জনগণকে অতিথিপরায়ন ও আন্তরিক বলেও উল্লেখ করেন।
×