ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

ব্যাটিং ব্যর্থতাকেই দুষলেন জিম্বাবুইয়ে অধিনায়ক ক্রেমার

বোনাস পয়েন্টের চেয়ে ম্যাচ জেতাই ছিল লঙ্কানদের মূল লক্ষ্য

প্রকাশিত: ০৭:০৩, ২২ জানুয়ারি ২০১৮

বোনাস পয়েন্টের চেয়ে ম্যাচ জেতাই ছিল লঙ্কানদের মূল লক্ষ্য

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ টানা দুই ম্যাচ হেরে ত্রিদেশীয় সিরিজে বেশ চাপের মধ্যে ছিল শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট দল। ফাইনালে ওঠার জন্য বাকি দুই ম্যাচ জিততেই হবে এমন একটি সমীকরণের মধ্যে পড়ে গেছে তারা। শেষ পর্যন্ত রবিবার থিসারা পেরেরার অলরাউন্ড নৈপুণ্যে জয় পেয়েছে লঙ্কানরা। এ জন্য থিসারার প্রশংসা করেন অধিনায়ক দিনেশ চান্দিমাল। তবে ফাইনালে ওঠার পথ সুগম করতে বোনাস পয়েন্টসহ জেতার সুযোগ ছিল। সেই পরিকল্পনা প্রথমদিকে থাকলেও ম্যাচের পরিস্থিতি বিবেচনা করে শুধু জেতার দিকেই মনোযোগী হয়েছিল লঙ্কানরা। ম্যাচশেষে এমনটাই জানালেন চান্দিমাল। আর জিম্বাবুইয়ের অধিনায়ক গ্রায়েম ক্রেমার মনে করেন ব্যাটিংয়ে অন্তত ৩০ রান কম হওয়াতেই হারতে হয়েছে তাদের। জিম্বাবুইয়ে হার দিয়ে ত্রিদেশীয় সিরিজ শুরু করলেও দ্বিতীয় ম্যাচে লঙ্কানদের হারিয়েছিল। সে কারণে রবিবার ফিরতি ম্যাচে আবার জয় তুলে নিতে পারলে ফাইনাল নিশ্চিত হয়ে যেত তাদের। কিন্তু লঙ্কানরা ঘুরে দাঁড়িয়েছে, জয় তুলে নিয়েছে ৫ উইকেটে। এ বিষয়ে জিম্বাবুইয়ে অধিনায়ক ক্রেমার বলেন, ‘আমার মনে হয় অবশ্যই ব্যাট হাতে আমরা ৩০ রান কম করেছি। গত ম্যাচের তুলনায় উইকেটের আচরণে অনেক ভিন্নতা ছিল। তবে ব্রেন্ডন যখন নামে আমরা বেশ ভালভাবেই মানিয়ে নিতে পেরেছিলাম। আমরা ভেবেছিলাম ২৭০-এর বদলে ২৩০ রানই এখানে যথেষ্ট হতো। কিন্তু মাঝের ওভারগুলোয় আমরা অনেক বেশি উইকেট হারিয়েছি। আমার মনে হয় রাজা যখন আউট হয়েছে সেটাই ছিল ম্যাচের মোড় ঘোরানো ব্যাপার। আমরা যদি ২৩০ রান পেতাম অবশ্যই জেতার ভাল সুযোগ থাকতো।’ তবে এখন জিম্বাবুইয়ে-শ্রীলঙ্কা প্রতিদ্বন্দ্বিতাটা জমে উঠেছে। দু’দলের মধ্যে ত্রিদেশীয় এই আসরে খেলা শেষ হয়ে গেলেও ফাইনালে ওঠার একটা প্রতিযোগিতা আছে। সেই প্রতিযোগিতায় উভয় দলের প্রতিপক্ষ ফর্মের তুঙ্গে থাকা বাংলাদেশ দল। এ বিষয়ে ক্রেমার বলেন, ‘আমরা তাদের লেজ ছেঁটে ফেলার কাছ থেকে মাত্র ২ উইকেট দূরে ছিলাম। খুব ভাল লড়াই ছিল, কিন্তু ১৯০-এর কিছু বেশি রান নিয়ে জেতা সহজ নয়। তবে বিষয়টি এখন দারুণ উপভোগ্য হয়ে উঠেছে। ফাইনালে যেতে হলে আমাদের অবশ্যই বাংলাদেশকে হারাতে হবে। এটা দর্শকদের জন্যও বেশ ভাল ব্যাপার। আমি শুধু নিজেদের জন্য আশাকরি যে ফাইনালে যাব।’ অবশেষে জয়ের দেখা পাওয়া শ্রীলঙ্কাও ভাবছে ফাইনালে যাওয়ার কথা। অধিনায়ক চান্দিমাল জানালেন সে জন্য জয়ের দিকেই মূল লক্ষ্য ছিল তাদের। তবে রান তাড়া করতে নামার আগে পরিকল্পনায় ছিল বোনাস পয়েন্ট নিয়ে জেতার। এ বিষয়ে চান্দিমাল বলেন, ‘আমরা ব্যাটিংয়ে নামার আগে আমাদের পরিকল্পনা ছিল ৪০ ওভারের আগে জিতে বোনাস পয়েন্ট পাওয়ার। কিন্তু ২৫তম ওভার শেষে আমরা চিন্তা-ভাবনায় পরিবর্তন আনি, যেহেতু ব্যাটিং করার জন্য উইকেটটা কঠিন ছিল। তখন প্রথম লক্ষ্য হয়ে ওঠে খেলায় জেতা।’ এর পেছনে মূল কারণ ছিল মিরপুরের উইকেট ব্যাটিংয়ের জন্য বেশ কঠিন ছিল রবিবার। এ জন্য দলের বোলারদের দুর্দান্ত নৈপুণ্যকে কৃতিত্ব দেন চান্দিমাল, ‘এটা খুবই ভাল জয়। উইকেটটা ব্যাটিংয়ের জন্য কঠিন ছিল। বাউন্সারে বৈচিত্র্য ছিল, কিন্তু কৃতিত্ব যাবে বোলিং বিভাগের ওপর। তারা সত্যিই ভাল করেছিল। ব্যাট হাতে পেরেরা ও মেন্ডিস ভাল জুটি দিয়েছিল। শেষ পর্যন্ত থিসারা ব্যাট ও বল হাতে ভাল করেছে।’ থিসারা বল হাতে জিম্বাবুইয়ের ৪ টপঅর্ডারের উইকেট শিকার করেন। পরে ব্যাট হাতেও ৩৯ রানের অপরাজিত ঝড়ো ইনিংস খেলে দলকে জিতিয়ে দেন। তাকে নিয়ে চান্দিমাল বলেন, ‘সে খুব ভাল অভিজ্ঞতাসম্পন্ন খেলোয়াড়। তিনি সবখানে টুর্নামেন্ট খেলছেন। ব্যাটসম্যান এবং বোলার হয়ে তিনি নৈপুণ্য দেখিয়ে চলেছেন। এটাই গুরুত্বপূর্ণ। আমি সত্যিই তাকে নিয়ে সন্তুষ্ট।’ পরবর্তী ম্যাচ বাংলাদেশের বিরুদ্ধে। সেই ম্যাচেও জয় পেতে হবে ফাইনাল নিশ্চিত করতে। এ বিষয়ে চান্দিমাল বলেন, ‘আমাদের আরও তিনটা দিন সময় আছে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে খেলার আগে। ব্যাটিং বিভাগ হিসেবে আমাদের জ্বলে উঠতে হবে। শুরুর পর বড় স্কোর করতে হবে। এটাই মূল চিন্তা। নিজেদের মধ্যে আমাদের আলোচনা করতে হবে এবং ভাল পরিকল্পনা নিয়ে আসতে হবে। চান্দিকার সঙ্গে কাজের সুযোগটা সবসময় সম্মান ও আনন্দের। তার দারুণ জ্ঞান রয়েছে। খেলোয়াড় হিসেবে তার কাছ থেকে আমাদের অনেক কিছু শিখতে হবে। তিনি একটা সম্পদ। আমি নিশ্চিত ছেলেরা ভবিষ্যতে ভাল নৈপুণ্য দেখাবে।’
×