ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

খালেদার আরও ১৪ মামলা বকশীবাজার আদালতে স্থানান্তর

প্রকাশিত: ০৫:৪৫, ৯ জানুয়ারি ২০১৮

খালেদার আরও ১৪ মামলা বকশীবাজার আদালতে স্থানান্তর

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দায়ের করা আরও ১৪ মামলার কার্যক্রম এখন থেকে বকশীবাজারের সরকারী আলিয়া মাদ্রাসা ও সাবেক ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার সংলগ্ন মাঠে নির্মিত অস্থায়ী আদালতে স্থানাস্তর করা হয়েছে। এখন থেকে এসব মামলা সেখানেই চলবে। মামলাগুলো হলো দারুস সালাম থানার নাশকতার আট মামলা, গ্যাটকো দুর্নীতি মামলা, নাইকো দুর্নীতি মামলা, বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি দুর্নীতি মামলা, যাত্রাবাড়ী থানার বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা ও মানহানির দুই মামলা। সোমবার এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে আইন মন্ত্রণালয়। রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব বিকাশ কুমার সাহা প্রজ্ঞাপনে সই করেছেন। উল্লেখ্য, খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলা আগে থেকেই বকশীবাজারের অস্থায়ী আদালতে চলছে। এদিকে আইনমন্ত্রী এ্যাডভোকেট আনিসুল হক বলেছেন, নিরাপত্তার স্বার্থেই খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দায়ের করা ১৪ মামলা বকশীবাজারের অস্থায়ী আদালতে স্থানান্তর করা হয়েছে। খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলাগুলো বিচারাধীন অবস্থায় রয়েছে। এসব মামলার বিচার কার্যক্রম চীফ ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবনে পরিচালিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ওই ভবনে বহুসংখ্যক আদালতের বিচার কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। তাই আদালত চলাকালে এলাকাটি জনাকীর্ণ থাকে। বিএনপি চেয়ারপার্সনের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করেই সরকার আদালত স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তিনি বলেন, ‘এখানে কোন রাজনীতি নেই।’ এদিকে মামলা স্থানাস্তরের বিষয়ে প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়, ১৪ মামলার মধ্যে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের নয়টি, বিশেষ জজ আদালতের তিনটি ও ঢাকা মুখ্য মহানগর হাকিমের দুটি মামলার বিচারকাজ বকশীবাজারের অস্থায়ী আদালতে চলবে। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ঢাকার বিশেষ জজ আদালত ২-এ বিচারাধীন শাহবাগ থানার ৫৩(২)০৮ মামলাটি ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিশেষ এজলাসে স্থানান্তর করা হয়েছে। কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, মামলাটি ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতে পরিচালিত হলেও ভবনটিতে আরও অসংখ্য মামলার কাজ চলে। ফলে জনাকীর্ণ এই ভবনে নিরাপত্তাজনিত কারণে খালেদা জিয়ার মামলাটি সরিয়ে নেয়া হচ্ছে। একই কারণ দেখিয়ে তেজগাঁও থানার ২০(১২)০৭ নম্বর, ৫(৯)০৭ নম্বর, ১৫(০৮)১১ নম্বর এবং দুর্নীতি দমন কমিশনের করা রমনা থানার ৮(৭)০৮ নম্বর মামলার কার্যক্রম স্থানান্তর করা হয়। এ ছাড়া বিশেষ ক্ষমতা আইনে করা দারুসসালাম থানার ৬২(১)১৫ নম্বর, ৩(৩)১৫ নম্বর, ৮(২)১৫, ৫(২)১৫, ৬(২)১৫, ৩১(২)১৫, ১২(২)১৫ ও ২৯(২)১৫ এবং যাত্রাবাড়ী থানায় করা বিশেষ মামলা ৫৯(১)১৫ বকশীবাজার আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে স্থাপিত ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিশেষ এজলাসে স্থানান্তর করা হয়েছে। প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়েছে, মহানগর হাকিম আদালত নম্বর ৭-এ বিচারাধীন পিটিশন মামলা ১০৯৬/১৬ ও ১১০/১৫-এর বিচারকাজ এতদিন মুখ্য মহানগর হাকিম আদালত ভবনে চলছিল। এই প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে মামলা দুটির কার্যক্রম বিশেষ আদালতে স্থানান্তর করা হলো। নিরাপত্তার স্বার্থেই স্থানান্তর ॥ নিরাপত্তার স্বার্থেই বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম জিয়ার বিরুদ্ধে দায়ের করা ১৪ মামলা বকশীবাজারের অস্থায়ী আদালতে স্থানান্তর করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়কমন্ত্রী আনিসুল হক। সোমবার সচিবালয়ে লন্ডনের স্থানীয় প্রশাসনিক ইউনিট টাওয়ার হ্যামলেটসের বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত স্পীকার সাবিনা আক্তারের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ কথা জানান। ‘খালেদা জিয়ার ১৪ মামলা কেন বকশীবাজারের অস্থায়ী আদালতে স্থানান্তর করা হয়েছে? অনেকে বলছেন এর সঙ্গে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য রয়েছে’- সাংবাদিকদের এমন কথার উত্তরে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘মোটেও রাজনৈতিক কারণে করা হয়নি। আমরা দুই পক্ষেরই সিকিউরিটির ব্যাপারটি চিন্তা করেই এটা করেছি। তিনি বলেন, ‘আপনারা দেখেছেন উনি একলা (আদালতে) যান না। কোথা থেকে ৩০০/৪০০ লোক গুছিয়ে নিয়ে সেখানে যান। তারা অনেক সময় সিকিউরিটির বিঘœ ঘটায়। তার (খালেদা জিয়া) সিকিউরিটিও দেখা প্রয়োজন। আমরা দু’দিক থেকেই মনে করেছি সেখানে তার মামলার বিচার হলে এসব প্রতিবন্ধকতা থাকবে না, সেজন্যই করেছি। এর বাইরে কোন রাজনৈতিক উদ্দেশ্য আমাদের নেই।’ খালেদা জিয়ার মামলা দ্রুত শেষ করার জন্য আদালত স্থানান্তর করা হলো কিনা- এ বিষয়ে আনিসুল হক বলেন, ‘নো নো, ডিউ প্রসেসে খালেদা জিয়ার মামলাগুলো শেষ হচ্ছে। যে মামলাগুলো এখন চলছে, সেগুলো ৫/৬ বছর ধরে চলছে। এক্ষেত্রে কোন মামলাই দ্রুততার সঙ্গে শেষ করা আমাদের উদ্দেশ্য নয়।’
×