ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

অশীতিপর শূটার দাদি

প্রকাশিত: ০৬:০১, ২৬ ডিসেম্বর ২০১৭

অশীতিপর শূটার দাদি

ভারতের উত্তর প্রদেশের পারকাশি টোমার ৬০ বছর বয়সে প্রথমে বন্দুক হাতে নেন। বর্তমানে তার বয়স ৮০ বছর। সবাই তাকে ‘শূটার দাদি’ হিসেবে চেনে। তিনি এখন যৌতুকবিরোধী ভূমিকায় নেমেছেন। ভারতের উত্তর প্রদেশে যৌতুকের দাবিতে নারীদের হত্যার ঘটনা হামেশাই ঘটে। কিন্তু দাদী যে গ্রামে বসবাস করেন সেখানে পরিস্থিতি ভিন্ন রকম। সে গ্রামে কোন মেয়ের বিয়ের সময় যৌতুক চাওয়া হয় না। লোকে বলে, যৌতুক চাইলে দাদী গুলি করে মারবে। শূটার দাদী কখনও স্কুলে যাননি। তার কোন প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা নেই। তিনি গৃহস্থালি এবং কৃষিকাজ করতেন। কিন্তু তিনি নিজে তার একটি আলাদা পরিচিতি তৈরি করতে চেয়েছিলেন। সেজন্য ৬০ বছর বয়সে তিনি শূটিংয়ের প্রতি আগ্রহী হয়েছিলেন। একদিন তিনি তার নাতনীদের সঙ্গে শূটিং রেঞ্জে গিয়েছিলেন। সেখানেই গিয়েই তার আগ্রহ জন্মে। এরপর টানা কয়েকদিন তিনি সেখানে যান এবং শূটারদের কৌশল দেখেন। একদিন সেখানকার প্রশিক্ষকরা তাকে বন্দুক চালাতে বলেন, কয়েকটি লক্ষ্যবস্তু স্থির করে সেখানে নিশানা করতে বলেন প্রশিক্ষকরা। তার বন্দুক চালানো দেখে প্রশিক্ষকরা বলেন যে তিনি খুব ভাল করবেন। প্রশিক্ষকরা তাকে উৎসাহিত করেন। ‘আমি ভেবেছিলাম মানুষ আমাকে দেখে হাসাহাসি করবে। কারণ আমার অনেক বয়সে হয়েছে। এরপর তিনি গোপনে তার শূটিং প্রশিক্ষণ চালিয়ে যান। হাতের ব্যালেন্স ধরে রাখার জন্য তিনি একটি পানির পাত্র একটানা হাতে ধরে রাখতেন। মানুষজন তার দিকে তাকিয়ে হাসতো। কিন্তু এখন তিনি একজন প্রতিষ্ঠিত শূটার। বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে তিনি অনেক পদক লাভ করেছেন। বিভিন্ন টেলিভিশনে তাকে নিয়ে অনুষ্ঠানও তৈরি হয়েছে। শূটার দাদীর সাফল্য দেখে অনেক নারী অনুপ্রাণিত হয়েছে। একজন নারী শূটার বলেন, দাদীকে দেখে আমি অনুপ্রাণিত হই। আমার মনে হয়, তিনি যদি পারেন তাহলে আমিও পারব। শূটার দাদীর লক্ষ্য তার গ্রামে একটি আন্তর্জাতিক মানের শূটিং প্রশক্ষণ কেন্দ্র গড়ে তোলা।-বিবিসি অনলাইন
×