ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

সোনা পাচারের অন্যতম রুট বেনাপোল

প্রকাশিত: ০৩:৪৮, ১৫ ডিসেম্বর ২০১৭

সোনা পাচারের অন্যতম রুট বেনাপোল

সাজেদ রহমান, যশোর/ আবুল হোসেন, বেনাপোল ॥ বেনাপোলের বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে প্রতিদিন কোটি কোটি টাকার সোনা পাচার হচ্ছে ভারতে। চোরাচালানীরা বেনাপোলের বিভিন্ন সীমান্তে সোনাপাচারের ট্রানজিট রুট হিসেবে ব্যবহার করছে দীর্ঘদিন ধরে। গত ১০ মাসে এ সীমান্ত থেকে ৪৩ কেজি সোনার বার ও হুন্ডির ২ কোটি টাকা আটক করেছে কাস্টম শুল্ক গোয়েন্দা ও বিজিবি সদস্যরা। এসব ঘটনায় জড়িত থাকার দায়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে ধরা পড়েছে চোরাচালান চক্রের ৩৬ সদস্য। জানা যায়, বেনাপোলের বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে অবৈধ পথে স্বর্ণ পাচারের সময় স্বর্ণসহ পাচারকারীরা বিজিবির হাতে আটক হওয়ার কারণে কৌশল বদল করেছে আর্ন্তজাতিক স্বর্ণচোরাচালান চক্রের সদস্যরা। এ বছরের শুরু থেকে চোরাই পথ ছেড়ে পাসপোর্ট যাত্রীদের মাধ্যমে বেনাপোল আর্ন্তজাতিক চেকপোস্ট থেকে সোনা পাচারের নিরাপদ রুট হিসেবে ব্যবহার করছেন তারা। বেনাপোল থেকে কলকাতার দূরত্ব মাত্র ৮৪ কিলোমিটার, এছাড়া সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো হয়ায় দ্রুত লক্ষ্যে পৌঁছানো যায়। এ কারণে স্বর্ণ নিয়ে বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে ভারতে চলে যাচ্ছেন যাত্রীরা। বেশীরভাগ পাসপোর্ট যাত্রীরা দেহের বিভিন্ন স্থানে সোনার বারগুলো ফিটিং করে ভারতে নিয়ে যাচ্ছে। অধিকাংশ সময় তলপেটে বিশেষ কায়দায় সোনার বার নিয়ে প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে পাচার করা হচ্ছে। মাঝের মধ্যে ৩/৪ টি চালান ধরা পড়লেও বেশিরভাগ থাকছে ধরা ছোয়ার বাইরে। সম্প্রতি যে সব বড় ধরনের সোনার চালান আটক হয়েছে তার বেশীরভাগই যাত্রীর পেটের ভেতর থেকে। যাত্রীদের আটক করে তাদের নিয়ে যাওয়া হয় বেনাপোলের বিভিন্ন ক্লিনিকে সেখানে ওষুধ খাইয়ে তাদের পেট থেকে বের করা হয় সোনার চালান। যাদের আটক করা হয় তারা বেশিরভাগই বাহক হিসেবে ব্যবহার হয়। এক এক চালানে ১০/১৫ টি করে সোনার বার পাচার করার জন্য চুক্তি হয়। পাচারের জন্য প্রতি বার ১ হাজার টাকা করেও চুক্তি হয় বলে আটক পাচারকারীরা জানান। বেনাপোল শুল্ক গোয়েন্দার ডেপুটি কমিশনার আব্দুস সাদেক বলেন, ‘বিভিন্ন গোয়েন্দার সূত্রে খবর পেয়ে আমরা স্বর্ণসহ পাচারকারীদের আটক করে থাকি। পাশাপাশি আমাদের গোয়েন্দারা সব সময় সজাগ দৃষ্টি রাখেন, যাতে দেশের সোনা পাচার হয়ে বাইরে না যায়।’ বেনাপোল পোর্ট থানার ওসি অপূর্ব হাসান জানান, সোনা পাচারের কোনও তথ্য পেলে তাৎক্ষণিক অভিযান চালিয়ে তা আটক করা হয়। যশোর ৪৯ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল আরিফুল হক জানান, ভারতে সোনার চাহিদা বেশি থাকায় আর্ন্তজাতিক পাচারকারী চক্রের সদস্যরা ভারতে প্রচুর সোনা পাচার করেছে।
×