ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ভোটগ্রহণ শেষ

এবারের গুজরাট নির্বাচন ॥ অগ্নি পরীক্ষা মোদি ও রাহুলের

প্রকাশিত: ০৩:৩০, ১৫ ডিসেম্বর ২০১৭

এবারের গুজরাট নির্বাচন ॥ অগ্নি পরীক্ষা মোদি ও রাহুলের

ভারতের গুজরাট রাজ্যে বৃহস্পতিবার গুজরাটে দ্বিতীয় দফার ভোটগ্রহণ হয়। রাজ্যের ১৪ জেলায় ভোটগ্রহণ চলে। বিধানসভার ১৮২ আসনের মধ্যে ৯৩ আসনে ৮৫১ প্রার্থীর ভাগ্য এদিন নির্ধারিত হয়েছে। ভোটার উপস্থিতি ৩০ শতাংশের মতো হয় বলে জানা গেছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও তার ৯৫ বছর বয়সী মা বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ ও অর্থনমন্ত্রী অরুন জেটলি এদিন লাইন দাঁড়িয়ে থেকে ভোট দিয়েছেন। এনডিটিভি ও ওয়েবসাইট। এ নির্বাচনকে দেখা হচ্ছে মোদি ও বিরোধী দল কংগ্রেসের নতুন সভাপতি রাহুল গান্ধীর মধ্যকার লড়াই হিসেবে। গুজরাট থেকেই উত্থান মোদির। রাজ্য মুখ্যমন্ত্রী পদ দীর্ঘদিন নিজের দখলে রাখার সুবাদেই তিনি প্রধানমন্ত্রী হন। গুজরাট মডেলের স্বপ্ন গোটা দেশকে দেখিয়ে দেশের সাধারণ নির্বাচনে বিপুল জয় পান মোদি। গুজরাটের ঘাঁটি ধরে রাখা তার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। মোদির প্রধানমন্ত্রিত্বে দেশের নানা জায়গায় বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি সাফল্যের মুখ দেখেছে। প্রতি নির্বাচনই গুরুত্বপূর্ণ ছিল তার জন্য। কিন্তু গুজরাট যাবতীয় সাফল্যের বড়কেন্দ্র। মোদির রাজনীতির প্রাণভোমরা। গুজরাটে বিজেপির পরাজয়ের অর্থ হবে তার দেখানো স্বপ্নের পরাজয়। পাটিদার বিক্ষোভ, সংখ্যালঘুর উষ্মা, দলিত ও অনগ্রসরদের অসন্তোষ, কর্মসংস্থানহীন যুব সম্প্রদায়ের মোহভঙ্গ, নোটবন্দী-জিএসটির ধাক্কায় বেসামাল হয়ে পড়া ব্যবসায়ীদের ক্ষোভের বিজেপি সরকার। এত কিছু সামলে শাসন ক্ষমতার উপর দীর্ঘ দু’দশকের দখল বহাল রাখা একেবারেই সহজ কথা নয়। তাই যে কোন মূল্যে গুজরাট ধরে রাখা মোদির জন্য অপরিহার্য। অন্যদিকে, গুজরাট মডেলের কাছেই সবচেয়ে বড় ধাক্কা খেয়েছে কংগ্রেস। ক্ষমতা থেকে খুব তিক্তভাবে বিদায় নিতে হয়েছে কংগ্রেসকে। মোদির বা বিজেপির সেই মডেলকে অসার প্রমাণ করা তাই কংগ্রেসের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। দেশজুড়ে একের পর এক নির্বাচনে কংগ্রেস বিপর্যস্ত হয়েছে। যদি ঘুরে দাঁড়াতে হয় এই অবস্থা থেকে, তা হলে মোদির নিজ দুর্গেই সবার আগে হানাটা দিতে হবে, বুঝেছেন রাহুল গান্ধী। নিজের রাজনৈতিক যাত্রাপথটার স্বার্থেও যে গুজরাটে জয়টা খুব জরুরী, তাও রাহুল জানেন। রাহুলের কৃতিত্বে কংগ্রেস খুব বড় সাফল্য পেয়েছে, এমন দৃষ্টান্ত এখনও পর্যন্ত তৈরি হয়নি। কালের নিয়মে সোনিয়া গান্ধী সরে দাঁড়িয়েছেন। নির্বাচনী প্রচারেও তিনি একেবারেই যোগ দেননি। কংগ্রেসের এক এবং একমাত্র মুখ হিসেবে গুজরাট চষে ফেলেছেন রাহুল। গুজরাটে সাফল্য বা ব্যর্থতার কৃতিত্ব বা দায় তাই রাহুলেরই হবে। গুজরাটের এই নির্বাচন তাই সব অর্থেই অগ্নিপরীক্ষা। আবার বলি, এই নির্বাচন নরেন্দ্র মোদির জন্য অগ্নিপরীক্ষা, রাহুলের জন্যও অগ্নিপরীক্ষা।
×