ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

দেশের ক্রিকেটে পরিবর্তন আশা সুজনের

প্রকাশিত: ০৪:৫৪, ১৩ ডিসেম্বর ২০১৭

দেশের ক্রিকেটে পরিবর্তন আশা সুজনের

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ দক্ষিণ আফ্রিকা সফর অনেক পরিবর্তন এনে দিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেটে। তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে কোচ হিসেবে দায়িত্ব পালন করা শ্রীলঙ্কান কোচ চান্দ্রিকা হাতুরাসিংহে পদত্যাগ করেছেন। দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে দলের চরম ব্যর্থতার দায়ে টেস্ট দলের নেতৃত্ব থেকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে মুশফিকুর রহীমকে। ৬ বছর আগে তার কাছেই হারানো নেতৃত্বটা আবার ফিরে পেয়েছেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। এসবকে ইতিবাচক হিসেবেই দেখছেন বিভিন্ন সময়ে জাতীয় দলের ম্যানেজার, এক সময় সহকারী কোচ এবং সাবেক অধিনায়ক খালেদ মাহমুদ সুজন। তিনি আশা করছেন আগের চেয়ে অনেক পরিণত হয়ে ওঠা সাকিবের হাত ধরে বাংলাদেশ ক্রিকেটে একটা পরিবর্তন আসবে। তবে একই সঙ্গে বাংলাদেশ দলের অন্যতম ব্যাটিং স্তম্ভ মুশফিকুর রহীমকে দীর্ঘ ৬ বছর পর নেতৃত্ব থেকে সরিয়ে দেয়াটাও সাহসী সিদ্ধান্ত। তবে দেশের ক্রিকেটে সহায়ক হতে পারে এমন কিছু সিদ্ধান্ত সাহসিকতার সঙ্গেই নিতে হয় বলে মনে করেন সুজন। পালাবদলের যে হাওয়া লেগেছে বাংলাদেশ ক্রিকেটে তার কারণগুলোর সবটাই কেন্দ্রীভূত হচ্ছে আগস্ট-সেপ্টেম্বরে দক্ষিণ আফ্রিকা সফর নিয়ে। ওই সফর শেষেই হাতুরাসিংহে কোচের পদ ছেড়ে দিয়েছেন চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই। ওই সফরে কোচের সঙ্গে টেস্ট অধিনায়ক মুশফিকের মতানৈক্য হয়েছে এমন কথাও শোনা গেছে। তবে হাতুরাসিংহে কোন কিছু পরিষ্কারভাবে জানাননি। তবে দলের চরম হতাশাজনক পারফর্মেন্সে অনেক সমালোচনা হয়েছে। এ বিষয়ে সুজন বলেন, ‘দক্ষিণ আফ্রিকার কিছু সিদ্ধান্ত খুবই বিতর্কিত, যেটা আমি মনে করি না বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য খুব ভাল কিছু হয়েছে। যেটাতে অনেকগুলো যদি বা কিন্তু ছিল। কিন্তু বাংলাদেশ কেন টসে জিতে ব্যাটিং বা বোলিং করবে, সেটা নিয়ে এ রকম দ্বিধা থাকতে পারে না। এটা পরিষ্কার থাকতে হবে। এ রকম যখন দোনোমনা, এটা ম্যানেজমেন্টের সিদ্ধান্ত না অধিনায়কের- এটা যখন পরিষ্কার হতে পারি না তখন এটা বিতর্কিত। আমার মনে হয় আমরা এ রকম বিতর্কের মধ্য দিয়ে যেতে চাইনি। আমি সব সময় বলি সব সময় মাঠের পারফর্মেন্স সবকিছু না। অব দ্য ফিল্ড অধিনায়কত্ব খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’ আর এই অন ফিল্ড এবং অব ফিল্ড অধিনায়কত্বের ক্ষেত্রেই যেন মুশফিক খাবি খেতে শুরু করেছিলেন। তিন ফরমেটের অধিনায়ক থাকলেও তিনি ২০১৪ সালের অক্টোবরে ওয়ানডে ও টি২০ নেতৃত্ব থেকে অব্যাহতি পান ব্যাটিং ও উইকেটকিপিংয়ে চাপ কমাতে। বিভিন্ন সময়ে নিজের ব্যাটিং দিয়ে দলকে অনেকবার রক্ষা করেছেন মুশফিক। তবে গত দেড় বছরে প্রত্যাশিতভাবে হাসেনি তার ব্যাট। এ বিষয়ে সুজন বলেন, ‘মুশফিক আমাদের জন্য দারুণ একজন ক্রিকেটার। সে দারুণ খেলোয়াড়। সে আমাদের জন্য ব্যাটিং স্তম্ভ, আমরা সব সময় বলি মুশফিক দুর্দান্ত। এটাতে আমরা দ্বিমত করি না। এ রকম পারফর্মেন্সের একজন অধিনায়ককে বাদ দেয়া হলো কেন সেটা নিয়ে তর্ক থাকবেই। তবে আমার মনে হয় সাহসী সিদ্ধান্ত নিতে হয়, যেটা বাংলাদেশ দলকে সাহায্য করবে। আমরা সব সময় চিন্তা করি বাংলাদেশের ক্রিকেটকে কীভাবে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায়।’ বাংলাদেশের ক্রিকেটটে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ঝা-া এখন সাকিবের হাতে। সেই ঝা-াটা ৮ বছর আগে প্রথমবার যখন তার হাতে উঠেছিল মাত্র ২২ বছর বয়স ছিল তার। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তখনও অপরিণত, অনভিজ্ঞ একজন ক্রিকেটারই ছিলেন সাকিব। তাই অপেশাদার বিভিন্ন আচরণের মাশুল দিতে হয়েছিল দুই বছর পরেই নেতৃত্ব হারিয়ে। এখন নেতৃত্ব হারানোর ৬ বছর পেরিয়ে আবার টি২০ ও টেস্ট দলের নেতৃত্বে আসীন হয়েছেন। এ বিষয়ে সুজন বলেন, ‘অনেক পরিবর্তন এসেছে, এটা বিশাল। ৬ বছরে অনেক কিছুই পরিবর্তন এসেছে। ক্রিকেটার হিসেবে ওকে অন্যভাবেই দেখি। ও অনেক কিছু জানে, খেলার যুক্তিবুদ্ধি ও মেধা আছে। পরিস্থিতি বোঝে ভাল। এখন বয়সও হয়েছে, আগের চেয়ে অনেক পরিণত। আমার মনে হয়, তার অধিনায়কত্ব দিয়ে, বাংলাদেশ ক্রিকেটে সে একটা পরিবর্তন আনবে।’
×